-->
শিরোনাম

এক মাসে পুঁজিবাজারে ২৮ হাজার নতুন মুখ

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ
এক মাসে পুঁজিবাজারে ২৮ হাজার নতুন মুখ
ডিএসই ও সিএসইর লোগো

নতুন বছরের শুরু থেকেই পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা নেই। বাজারের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর ক্রয়যোগ্য অবস্থায় থাকার পরও ফিরছে না স্থিতিশীলতা। বেশিরভাগ দিনই কমছে লেনদেন হওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। পাশাপাশি ভাটার টান দেখা যাচ্ছে বাজার মূলধনেও। তবে এর মধ্যে মার্চ মাসে পুঁজিবাজারে যুক্ত হয়েছে ২৮ হাজার নতুন মুখ। বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, মার্চে বিনিয়োগকারীরা নতুন বিও খুলেছেন ২৮ হাজারের বেশি। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে হিসাবধারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৪৪ হাজার ৩১টি। মার্চ শেষে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৭২ হাজার ২৭৮টি। অর্থাৎ এ সময়ে বিও হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ২৮ হাজার ২৪৭ এ। বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, এখন বাজারের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর তলানিতে রয়েছে। অর্থাৎ ক্রয়যোগ্য অবস্থায় রয়েছে। এ সময়কে বলা হয় পুঁজিবাজারের বিনিয়োগযোগ্য সময়। বিষয়টি মাথায় রেখেই এ বাজারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারী যুক্ত হচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, পুঁজিবাজারে এখন বেশিরভাগ শেয়ারের দর কম। এ অবস্থায় দেখেশুনে এবং ধৈর্যধারণ করে বিনিয়োগ করলে এখান থেকে ভালো ফল প্রত্যাশা করা যায়। যারা এখন বাজারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন, তারা হয়তো এটাই ভাবছেন। এছাড়া বাজারে নিয়মিত আইপিওর মাধ্যামে নতুন কোম্পানি আসছে এ কারণেও বাজারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

এদিকে পুঁজিবাজারে বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের যে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব রয়েছে তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশে কোনো শেয়ার নেই। অর্থাৎ এসব বিও হিসাব শেয়ারশূন্য হয়েছে। এর মধ্যে গত এক বছরেই শেয়ার শূন্য হয়ে পড়েছে প্রায় ১ লাখের বেশি বিও হিসাব। জানা যায়, গত এক বছরে বিপুল পরিমাণ বিও শূন্য হয়ে পড়ার প্রধান কারণ বছরের শেষ সময়ে এসে বাজার অস্থিতিশিল হয়ে পড়া। গত বছরের শেষদিকে ধারাবাহিক সূচক পতনের কারণে অনেকে বিও অ্যাকাউন্ট খুলে ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেননি। আবার পরিস্থিতি নাজুক দেখে অনেকে শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে গেছেন। যে কারণে অনেক বিও শূন্য হয়ে পড়েছে। তবে এ বছর পরিস্থিতি বদলে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভোরের আকাশকে বলেন, সবসময়ই শেয়ার শূন্য বিও অ্যাকাউন্ট থাকে। তবে বাজার পরিস্থিতি খারাপ হলে এর সংখ্যা বাড়ে। যখন বাজার ভালো থাকে, তখন অনেকেই সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করার জন্য বিও হিসাব খোলেন। পরে পরিস্থিতি খারাপ হলে তারা আর বিনিয়োগ করেন না। ফলে শেয়ার শূন্য থাকা বিও হিসাবের সংখা বাড়ে। এছাড়া অনেকে শুধু প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগ করার জন্য হিসাব খোলেন। এসব বিনিয়োগকারীর হিসাব বেশিরভাগ সময় শূন্য থাকে। কারণ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই সেকেন্ডারি মার্কেটে একটি হিসাবের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন।

অন্যদিকে চলতি বছর সচল বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, আমাদের প্রত্যাশা এ বছর পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো থাকবে। বাজারে তালিকাভুক্ত হবে ভালো ভালো কোম্পানি। পাশাপাশি বাজারে বিদেশি বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিনিয়োগ আসবে। দেখা যাক কী হয়। নিয়মানুযায়ী, জুনে বিও ফি পরিশোধ না করলে সেসব অ্যাকাউন্ট এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যেসব হিসাবে শেয়ার কিংবা টাকা থাকে সেসব হিসাব বন্ধ হয় না। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাবরক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়।

এর আগে পঞ্জিকাবর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এ ফি জমা নেওয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুনে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময় বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল। বর্তমানে বিও নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ টাকা।

মন্তব্য

Beta version