মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার দায়িত্ব পালনকালে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক পদ্মা সেতুতে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করেছে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা রয়েছে ব্যাংকটির। তিনি ব্যাংক খাতের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাফর আহমদ
ভোরের আকাশ: বাংলাদেশের অর্থনীতির সামর্থ তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক মন্দা বা যে কোনো মহামারিই আসুক না কেন এই সামর্থ দিয়ে সক্ষমতার সঙ্গে মোকাবেলা করছে। আপনি বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
শামস উল ইসলাম: সক্ষমতা বলেন, সামর্থ বলেন, এর মূল শক্তি হলো বঙ্গবন্ধুর সেই অমর বাণী ‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’। যতই বাধা আসুক বিপত্তি আসুক, আসুক জরা-ক্ষরা। সেই বক্তব্য আমাদের শক্তি জুগিয়েছে। বাংলাদেশকে আগে বলা হতো দুর্যোগ-খরার দেশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, আইলা, দুর্ভিক্ষ যখনই এসেছে পত্রিকায় বড় বড় হেডলাইন হয়েছে। বাংলাদেশ একটি দারিদ্র্য ও ক্ষুধাপীড়িত একটি খাদ্য ঘাটতির দেশ হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে একটি দুর্যোগ প্রবণ দেশ বাংলাদেশ। ’৭৪ এর মনান্তরের মতো আমাদের এখানে দুর্ভিক্ষ এসেছে। বাংলাদেশ হলো সেই ঐতিহাসিক ব্যাক গ্রাউন্ডের দেশ।
এক সময় বাংলাদেশ ছিল সুজলা, সুফলা। বৃটিশ হলো। দেশের সম্পদ লুন্ঠন করলো, লুটতরাজ শুরু হলো। এর ফলে সেই সমৃদ্ধি আর থাকেনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিলেন, স্বাধীনতা এলো। তখন আমাদের রিয়ালাইজেশন এলো আমরা পারি। এই যে উপলব্ধি আমাদের মনোবল তৈরি ক্ষেত্রে এটা একটি ভূমিকা পালন করেছে। এটা আমাদের কাছে একটি টনিক হিসেবে কাজে দিয়েছে। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। জাতির জনক স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেলেন। এই সাড়ে তিন বছরে তিনি এমন কোনো সেক্টর বাদ দেননি, যেখানে উনি কাজ করেননি। তিনি সব জায়গায় হাত দিয়েছেন। সব জায়গায় তিনি উন্নয়নের স্পর্শ দিয়ে গেছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃষিকে বাদ দিয়ে শিল্পায়নের পথে গেছে। দেশকে উন্নত করেছে। বঙ্গবন্ধু সেখানে কৃষিকে বাদ দেননি। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক ঝড় এলো। বিভিন্ন মহল থেকে এটাকে বলা হলো অর্থনৈতিক সুনামি। এক কেজি চালের দাম যেখানে এক ডলার, সুনামির কারণে হয়ে গেল পাঁচ ডলার। খাদ্য উৎপাদন না হলে মানুষ তো কম্পিউটার খাবে না, চালই খাবে। চাল যদি উৎপাদন না হয় তা হলে তো পরিস্থিতিতে আরো ঝুকির মধ্যে ফেলে দেয়। এ ধরনের ক্রাইসেস মানুষকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। এই সব বিষয়টি সামনে রেখে জাতির জনক কৃষিকে পেট্রোরাইজ করেছেন। এইসব চিন্তা করে মানুষ কৃষিকে বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এত বছর পর আমরা বুঝতে পারছি সেই উদ্যোগ কত বড় কাজে লেগেছে।
স্বাধীনতা পূর্ব সময়েও আমাদের ৩০-৪০ লাখ খাদ্য আমদানি করতে হতো। আমরা জানি যে, স্বাধীনতার পর আন্তর্জাতিক কারসাজির কারণে আমরা ১৯৭৪ সালে একটি দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয়েছিলাম। যুদ্ধে খাদ্য উৎপাদনের ভিত্তিটি আরো দুর্বল করে দিয়েছিল। ওদিকে আমেরিকা খাদ্য পাঠিয়ে মাঝ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। এর ফলে খাদ্য সংকট তৈরি হলো। এরপর আমরা বুঝেছি খাদ্য উৎপাদনের কোনো বিকল্প নেই, খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। আবাদ যোগ্য কোনো জমি ফেলে রাখা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর সেই যে উদ্যোগ সেই উদ্যোগ এখানে কাজে লেগেছে। খাদ্য উৎপাদনের ধারাকে কাজে লাগিয়ে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণের জায়গা এসে পৌঁছে গেছি। বিএনপির সময়ে এই উদ্যোগ কিছুটা ব্যাহত হলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর খাদ্য উৎপাদনের সেই ধারাকে উজ্জীবিত করে খাদ্য উৎপাদনে একটি শক্তিশালী স্থান করে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসে খাদ্য নিয়ে কোনো আপোষ করেনি। এটা সম্ভব হয়েছে খাদ্যকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণে।
অনেকে বলেন, মাননীয় শেখ হাসিনা না থাকলেও খাদ্য উৎপাদনসহ উন্নয়নের বিভিন্ন স্তরে যে ধারাবাহিকতা তার থাকতো না। একটি সরকার চলে যাওয়ার পর আরেকটি সরকার এসে নতুন করে শুরু করতো। ফলে আমাদের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ছিল না। বর্তমান সরকার একটি জিনিস করেছেন তার ধারবাহিকতা থাকায় পরিকল্পনাগুলো নির্বাহ করা সম্ভব হয়েছে।
এই যে আমরা খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি, দারিদ্র্য দূরীকরণ হয়েছে। আগে কোথায় ৫২ শতাংশ দরিদ্র মানুষ ছিল, সেই দরিদ্র ২০-এর কোটাতে চলে এসেছে। করোনা মহামারিতে যদিও দারিদ্র্যের হার কিছুটা বেড়েছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বলেন, প্রত্যেকটা জায়গায় বড় ধরনের অর্জন হয়েছে।
ভোরের আকাশ: রেমিটেন্স ক্ষেত্রে তো আমাদের বড় অর্জন ?
শামস উল ইসলাম: প্রবাসি আয় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমাদের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তিতে পরিনত হয়েছে। এক্ষেত্রেও সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগ রয়েছে। একদিকে বিদেশে কর্মী পাঠানো, প্রবাসিরা যাতে দেশে আয় পাঠাতে পারে এ জন্য ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। এখন যেটা আড়াই শতাংশ হয়েছে। প্রবাসিদের পাঠানোর অর্থ যাতে নিরাপদ হয় সে জন্য নানা ধরনের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এগুলো যুগান্তকারী পদক্ষেপ। অপচয় হচ্ছে, অনেকে সমালোচনা করেছে। কিন্তু এটি একটি বিরাট পদক্ষেপ ছিল, করোনাকালে এবং এখনো আমরা সেটা বুঝতে পারছি।
আমরা তৈরি পোশাককে এত পেট্রোরাইজ করি। ১০০ ডলার তৈরি পোশাক রপ্তানি করলে এর মধ্যে ৭০/৮০ ডলার আবার দেশের বাইরে চলে যায় কাপড় ও অন্যান্য এ্যাসোসরিজ আমদানি করতে। দেশে থাকে ২০/৩০ ডলার। একশ ভাগের ৩০ ভাগ মাত্র দেশে থাকে। আর যারা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন তাদের ১০০ ডলার পুরোটাই দেশে থাকছে। বরং এই এক কোটি মানুষ দেশে থাকলে উনাদের জন্য খাওয়া-দাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সেবার জন্য যে ব্যয় হতো তা সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে একজন প্রবাসি দেশে ১০০ ডলারই পাঠাচ্ছে না, ১১০ ডলারের কন্টিবিউট করছেন। তারা আনসিন হিরো। তাদের জন্য আগের কোনো সরকার কিছু করেনি, এই সরকার তাদের পাঠানো আয়ে ২ দশমিক ৫০ প্রণোদনা দিচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের সম্মাননা দিচ্ছে। ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ২.৫ শতাংশ নয়, আরো বেশি দেওয়া প্রয়োজন। এই যে প্রগতিশীল চিন্তা, এতে আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে।
এক সময় আমরা দেখেছি পাঁচ বছর পর পে-স্কেল হয়। কিন্তু বিএনপির সময়ে আমরা দেখলাম পাঁচ বছর সময়ে তো হয়নি, ৬/৭ বছরে হয়েছে। সে স্কেল ঘোষণার পর ৩/৪ বছরে বাস্তবায়ন হতো। বছর ভিত্তিক ভাগ করে দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমান সরকার চিন্তা করেছে ছয়জনের একটি পরিবারের নির্বাহ হয়-এইভাবে বেতন দিতে হবে। এবং যেদিন ঘোষণা করা হবে, সেই দিন থেকেই কার্যকর করা হবে। তাহলে দেশ কি গরিব হয়ে গেছে!
বড় কিছু চিন্তা করতে হবে। সরকার সেটা করছে। পদ্মা সেতুর কথা চিন্তা করেন, বিশ^ব্যাংক ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার দিল না। আমরা মনে করলাম পদ্ম সেতু হবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন, আমরা পারবো। তিনি শুরু করলেন। এই যে দাবায়ে রাখতে পারবা না, বঙ্গবন্ধু কন্যা সেটা প্রমাণ করে দেখালেন। পদ্মা সেতু দৃশ্যমান, উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
আমি অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে বলতে চাই, আগ্রণী ব্যাংক পদ্মা সেতুতে এককভাবে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক যেখানে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার দেয় নাই সেখানে অগ্রণী ব্যাংক একাই ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন দিল। পদ্মা সেতু শেষ হতে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার লাগবে, আমরা সেটাও দিতে পারবো।
আমাদের এই যে সক্ষমতা, এই যে অর্জন; চিন্তার পরিধি বৃদ্ধির কারণে সম্ভব হয়েছে। এটা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক বড় চিন্তা করতে পারেন, উনি সাহস করেন বলেন, ঝুকি নিতে পারেন, জনগণের জন্য যেটা মঙ্গলজনক সেটা তিনি করে দেখিয়ে দেন।
বিশ্বব্যাংক আমাদের দেশজ উৎপাদন-জিডিপি নিয়ে বিভিন্ন সময় হতাশা প্রকাশ করতো। না, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ৫ শতাংশ হবে না, ৬ শতাংশ হবে না বা ৭ শতাংশ হবে না। কিন্তু এখন বিশ্বব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি গেইনেবল। মাথাপিছু আয় এখন ২৫০০ ডলার। এখন আইএমএফ থেকেও বলা হচ্ছে বাংলাদেশের মাথা পিছু আয় লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশের এই এই অগ্রযাত্রা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। এখন অনেকে বলছে উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে বাংলাদেশের অর্তনীতি হবে বিশ্বের ১৫তম অর্থনীতির দেশ হবে। ৮ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি আজ ৪০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।
ভোরের আকাশ: এই যে পদ্মা সেতুর কথা বলছেন, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের কথা বলছেন, যেখানে ব্যাংক অর্থায়ন করেছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা বলছেন, এক্ষেত্রে আর্থিক খাত কতটুকু অবদান রাখতে পারছে ?
শামস উল ইসলাম: সরকারি খাতকে অনেকেই সমালোচনা করে। তারা গেল গেল, সব কিছু বলে চিৎকার করে। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বয়স ৫০ বছর হয়ে গেল। বেসরকারি খাতে দেখবেন যত পুরনো হচ্ছে সমস্যা বাড়ছে। তবে ফোর জেনারশেন নতুন ব্যাংকের কোনো সমস্যা নেই। আমাদের ব্যাংক তো সব চেয়ে পুরনো ব্যাংক। আমাদের সমস্যা আছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করার জন্য সরকার সেভাবে নীতি গ্রহণ দিচ্ছে না। তবে বর্তমান সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে নতুন লোক রিক্রুটমেন্টের চিন্তা করছে বা করবে। কথা হচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সব সময় মুনাফা করার চিন্তা করে না। অর্থনীতির উন্নয়নের কথা অবশ্যই চিন্তা করতে হবে। তবে সামাজিক উন্নয়নের কথাও চিন্তা করতে হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রথমেই এ চিন্তাটি করতে হয়।
যেমন ধরুন সব ব্যাংক কৃষিঋণ ৯ শতাংশ সুদে বিতরণ করে আমরা করি সাড়ে ৮ শতাংশ হারে। খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সরকারের নীতিকে সহায়তা করতে আমরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসাবে দশমিক ৫০ শতাংশ হারে রিভেট দিচ্ছি। এভাবে কৃষক ভাইদের সাথে আমরাও আছি। ৪ শতাংশ হারে মসল্লা জাতীয় কৃষিপণ্যে সহায়তা দিচ্ছি, ৭ শতাংশ হারে রপ্তানিতে ঋণ দিচ্ছি। আমরা প্রথম সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ দেওয়া শুরু করেছি। এসএমই ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে আমরা ভূমিকা রাখছি। প্রণোদনার বিতরণে আমরা এসএমইতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছি।
ভোরের আকাশ: কিন্তু একই মার্কেটে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে, যেখানে বেসরকারি ব্যাংকও আছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকও থাকে?
শামস উল ইসলাম: আমরা মনে করি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশের ১৬ কোটি মানুষের। জনগণের ব্যাংক হিসাবে জনগণকে ডিভিটেন্ট দেওয়া আমাদের অন্যতম প্রধান কাজ। সে বিচেনা থেকে আমরা প্রণোদনা বিতরণে সরকারের ঘোষণা আছে ২ শতাংশ করে। আমরা বাড়তি আরো ১ শতাংশ করে দিয়েছি। জনগণের ব্যাংক হিসাবে জনগণের উপকার হয়, রাষ্ট্রীয়ত্ত নীতি বাস্তবায়নে সহায়তা হয় সে কাজগুলো আমরা করে থাকি। এতে ব্যাংকের হয়তো ক্ষতি হচ্ছে, মুনাফা কমে যাবে, ব্যাংকের মালিক সরকারের মুনাফা কম পাবে। কিন্তু দেশের জনগণ উপকৃত হবে।
আমরা ১৫টি বিদ্যুৎ প্লান্টে অর্থায়ন করেছি। এর ফলে মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাাচ্ছে। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারেও ইনকাম আসতো। বিকল্প রাস্তা রাখতে এখানে এমন অবস্থা হয়েছে। কিন্তু এখানে সামাজিক ইম্প্যাক্ট আছে। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সোলার প্লাটসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্র্থায়ন করছি। আজকে আবাসন, বড় বড় হোটেলে অর্থায়ন করা এগুলো কিন্তু দেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে। শুকুক বন্ডে বিনিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে আমাদের অবদান আছে। শুধু মানি মার্কেটই নয়, ক্যাপিটাল মার্কেট, বন্ড মার্কেট, অর্থনীতি সবগুলো খাতেই আমরা বিনিয়োগ করছি। আরো যাতে চালিয়ে যাওয়া যায়, সে ব্যাপারে কাজগুলো আমরা করবো। মুনাফা করাই বড় কথা নয়, অর্র্থনীতিতে স্পন্দন জাগানোই বড় কাজ।
ভোরের আকাশ: করোনা মহামারিতে সারা বিশ্বের অর্থনীতি টালমাটাল অবস্থা, বাংলাদেশ সেখানে সক্ষমতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছে। এর নিয়ে সমালোচনাও আছে ? বিশেষ করে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এ ব্যাপারে ভিন্ন মত আছে। বিষয়টিকে আপনি দেখছেন ?
শামস উল ইসলাম: করোনা মহামারির শুরুতে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য প্রথমেই পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল। এতে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তা শ্রমিকদের মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছিল যে, সরকার সাথে আছে। পরবর্তীতে সব মিলে প্রায় ১৭০ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করেছে। করোনা মহামারিতে হয়তো অনেক জীবন বাঁচানো যায়নি। আবার জীবন রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিয়েছে। এবং তা অনেক দেশের চেয়ে ভাল করেছে। তবে হতাশার মধ্যে প্রণোদনা বিতরণের ক্ষেত্রে অর্থনীতিতে আশার সঞ্চার করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতিকে কোনো ক্ষতি এড়িয়ে সচল রাখতে যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তা ছিল বিপ্লবী পদক্ষেপ। করোনা বিতরণে আমাদের উপর চাপও দেওয়া হয়েছিল। সে চাপটি কাজও হয়েছে।
আমরা ব্যাংকগুলো শ্রমিকের বেতন দেওয়া থেকে শুরু করে অর্থনীতির প্রত্যেকটা সেক্টর, শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রণোদনা বিতরণ করেছি, যাতে অর্থনীতির ক্ষত কাটিয়ে উঠে সচল থাকতে সহায়তা করে। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেমন প্রণোদনা বিতরণ করেছে, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও করেছে। এর ফলে সফলভাবে করোনার অভিঘাত মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে।
মন্তব্য