-->
শিরোনাম

ক্রেতার আশায় প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবসায়ীরা

* দোকানে দোকানে অত্যাধুনিক সেট * করোনার ধাক্কা ও অনলাইন বেচাকেনায় গ্রাহক কম * জমে ওঠেনি মোবাইল বাজার

শিপংকর শীল
ক্রেতার আশায় প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবসায়ীরা
রাজধানীতে এক মোবাইল ফোনের দোকানি ক্রেতার অপেক্ষায়। ছবি- ভোরের আকাশ

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে চরম সংকটে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। তার প্রভাব পড়েছে কেনাকাটায়। তার মধ্যে অন্যতম মোবাইল মার্কেটে। সে কারণে গত দুই বছর ভালো ব্যবসা করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। সাধারণত ঈদকে ঘিরে প্রযুক্তিপণ্যেরও ভালো বেচাকেনা হয়। বিশেষ করে স্মার্টফোনের ভালো চাহিদা থাকে ঈদের আগে। কারণ ঈদে অনেকে প্রিয়জনকে স্মার্টফোন উপহারও দেন। নিজের প্রয়োজনের কেনেন অনেকেই।

গতকাল রোববার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি ঘুরে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ঈদমার্কেট উপলক্ষে দোকানগুলোয় নতুন নতুন মডেলের ফোন বাজারে এলেও সেভাবে জমেনি স্মার্টফোনের ঈদবাজার। সেগুলো হলো- রেডমি সিরিজের রেডমি-৯ এ, রেডমি-১০ সি, রেডমি নোট-১০, রেডমি নোট-১১, ফকো সি-৩১, রেডমি নোট-১০ এস, রেডমি নোট-১০ প্রো, রেডমি নোট-১০ প্রো, শাওমি সিরিজের শাওমি-১১ আই হাইপারচার্জ, শাওমি-১১ টি, শাওমি পেড-৫। স্যামস্যাং সিরিজের এ-৩ কোর, এ-১৩, এ-২৩, এ-৩৩ ৫জি, এ-৫৩ ৫জি, এস-২১ এফ ই, এস ২২+, এস-২২ আল্টা। রিয়েলমি সিরিজের সি-৩১, এন-৫০। ভিভো সিরিজের বি-২৩, ওয়াই-৩৩ এস, বি-২৩ ই, ওয়াই-২১ টি, ওয়াই ৩৩ এস।

স্মার্টফোনের বাজার জমে না ওঠায় বিক্রেতারা অসন্তুষ্ট। কারণ রোজার শেষের দিকে আশানুরূপ বিক্রি হয়নি। বিক্রেতারা এখন সামনের শেষ ৬-৭ দিন বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছেন অনেকে। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে স্মার্টফোনের দোকানে ক্রেতাদের মোটামুটি ভিড় দেখা যায়। অনেকে মোবাইল দেখলেও বিক্রি হচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের ন্যায়। অনেকে দরদামও করছেন, দেখছেন কিন্তু বিক্রি হচ্ছে খুবই সীমিত। এ বিষয়ে অপ্পো শোরুমের সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. আশরাফুল রহমান আজাদ ভোরের আকাশকে বলেন, গতবারের তুলনায় এবার বেচাকেনা কম। স্বাভাবিকের চেয়ে বিক্রি অনেক কম। তবে সামনের দিনগুলোর জন্য তাকিয়ে আছি কীভাবে পুষিয়ে নেওয়া যায়।

রেডমি শোরুমের ম্যানেজার রাজু আহমেদ বলেন, বিক্রি যেভাবে আশা করেছিলাম সেভাবে হচ্ছে না। কারণ করোনার পর এবার প্রথম স্বাভাবিক ঈদ, তবে যেমন বেচাকেনা আশা করেছিলাম, সেরকম হচ্ছে না। তাই আমরা সন্তুষ্ট না। স্যামসাংয়ের সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. সাজ্জাদ হোসেন, গত তিন দিন বেচাকেনা নরমাল ছিল। ঈদের সেলটা আমরা পাচ্ছি না। মানুষ এখন বিপণিবিতানের শপিং নিয়ে ব্যস্ত। এখন কিছু করার নেই সামনে যে আরো বেশি বিক্রি হবে, সেটাও আমরা আশা করছি না। অনেকের গিফট কার্ড, ক্যাশব্যাক ও ডিসকাউন্টসহ বিভিন্ন সুবিধা থাকায় অনলাইন থেকে স্মার্টফোন কেনার প্রবণতা বেশি। কেননা অনলাইনে যে দামে পাওয়া যায়, সেই দামে দোকান থেকে কিনতে পাওয়া যায় না।

রিয়েলমি ম্যানেজার তানভীর আহমেদ, গত বছর শুধু ছয় দিন খোলা ছিল এবার পুরো মাস খোলা থেকেও তার তুলনায় এবার অনেক কম সেল হচ্ছে। বলতে গেলে স্বাভাবিকের তুলতায় অনেক কম। এছাড়া করোনার প্রভাব ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের হাতে টাকা না থাকায় স্মার্টফোন কিনতে পারছে না। এবার মানুষের সৌখিন পণ্য কেনার আগ্রহ এবার কম। ঈদে সাধারণত যে পরিমাণ বিক্রি হয়, এবার তার ৩০ শতাংশও নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোবাইলের বাইরে যেসব প্রযুক্তিপণ্য নিয়মিত চলত, এখন তা-ও কম। এ পরিস্থিতিতে কোনো দিক থেকে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন। অনেক ব্যবসায়ী ঈস সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আসল টাকা উঠানোই কঠিন। কর্মচারীদের বেতন, ঈদ বোনাস দিয়ে নিজের চলার বিষয়টি বর্তমান মার্কেটে একেবারেই অনিশ্চিত বলছেন তারা।

মন্তব্য

Beta version