-->
শিরোনাম

অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে বিজিএমই’র জরুরি ১০ নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে বিজিএমই’র জরুরি ১০ নির্দেশনা

গ্রীষ্ম মৌসুমে উষ্ণতাসহ অন্যান্য কারণে অগ্নি দূর্ঘটনা প্রতিরোধে পোশাক শিল্প কারখানা মালিক ও সংশ্লিষ্টদের জরুরি ১০টি নির্দেশনা দিয়েছে, বিজিএমইএ।  রোববার (১৯ জুন) পোশাক কারখানায় অগ্নি দুর্ঘটনার এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহনে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান।

ফারুক হাসান বলেন, বর্তমান গ্রীষ্ম মৌসুমে আবহাওয়ার উষ্ণতা ও অন্যান্য কারণে অগ্নি দূর্ঘটনাসহ বেশ কিছু অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা ঘটেছে যা কোনভাবেই কাম্য নয়।  সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডুতে অবস্থিত কন্টেইনার ডিপোতে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নি দূর্ঘটনা এবং কেমিক্যাল বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসকর্মীসহ বেশ কিছু ব্যক্তিবর্গের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে যা সত্যিই উদ্বেগের বিষয়। এছাড়াও ইদানিং বেশ কয়েকটি পোশাক শিল্প কারখানায় সংঘটিত অগ্নি দূর্ঘটনায় বিজিএমইএ’র দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।  বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট অথবা অন্য কোন বৈদ্যুতিক ত্রুটি থেকে এ দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অগ্নি দূর্ঘটনার বিষয়ে অধিক সচেতন হলে এবং কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে এ ধরণের দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করি। বিশেষ করে কারখানার বয়লার, জেনারেটর, বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বোর্ড ও প্যানেল বোর্ড, ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড, বিভিন্ন বৈদ্যুতিক মেশিনারিজ এবং যন্ত্রাংশ অতিরিক্ত উত্তপ্ত হয়ে যে কোন সময়ে বড় ধরণের অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

পাশাপাশি ঝড় ও বৃষ্টির মৌসুমে বিদ্যুতের তারের সংযোগস্থল লুজ হলে সেখানে পানি লেগে স্পার্ক (বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ) করে আগুন লেগে যেতে পারে।  কারখানায় পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে অগ্নি দূর্ঘটনাসহ সকল দূর্ঘটনা এড়ানো যাবে এবং শ্রমিক বা কর্মচারী হতাহতের মত অপ্রত্যাশিত ঘটনা হতে অব্যহতি পাওয়া যাবে।

জন্য জরুরী ভিত্তিতে অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে পদক্ষেপ গ্রহনের নির্দেশনা দিয়েছে বিজিএমইএ।

 

বিজিএমইএ’র জরুরি ১০ নির্দেশনা

রাতে কারখানা বন্ধ করার পূর্বে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে সকল মেশিনারিজ, লাইট, ফ্যান, আয়রণ ইত্যাদি বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করা এবং বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ করা।

কারখানার সকল বৈদ্যুতিক তার এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি (মেইন সুইচবোর্ড , সাব-মেইনসুইচ বোর্ড , ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড, জাংশন বোর্ড), কারখানায় ব্যবহৃত বয়লার ও বিভিন্ন ধরণের মেশিন ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার বা বা কমপক্ষে একজন ডিপলোমা ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা নিয়মিত পরীক্ষা করানো।

বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বোর্ড বা কোন বৈদ্যুতিক স্থাপনার ৩ ফুটের মধ্যে কোন মালামাল বা দাহ্য বস্তু না রাখা।

কারখানার সিঁড়ি এবং চলাচলের পথ বাধামুক্ত রাখা এবং কর্মকালীন সময়ে সার্বক্ষণিকভাবে ফ্লোরের গেট, মেইন গেট এবং সমস্ত সিঁড়ির গেট খোলা রাখা।

জরুরী অবস্থা (অগ্নি দূর্ঘটনা বা যে কোন দূর্ঘটনা) মোকাবেলা করার জন্য কারখানায় প্রশিক্ষিত লোকের ব্যবস্থা রাখা এবং পুরো কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তত্ত্বাবধায়নের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ও একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং অগ্নি নির্বাপন বিষয়ে প্রশিক্ষিত সিকিউরিটি গার্ড নিযুক্ত রাখা।

তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নির্বাপন করার জন্য কারখানায় প্রয়োজনীয় অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, পানি ভর্তি ড্রাম ও বালতি এবং হোজ রিপ বা হাইড্রেন্ট রাখা এবং এগুলো সার্বক্ষণিক কার্যকরী রাখা।

সাবোট্যাজ বা শত্রুতামূলক আগুন প্রতিরোধের জন্য কারখানার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় রাখা এবং সেগুলো সার্বক্ষণিকভাবে চালু রাখার ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করা।

কারখানার ফ্লোরে এবং সিঁড়িতে অবশ্যই বিকল্প জরুরী বাতি (আইপিএস/চার্জার/ব্যাটারী চালিত বাতি) এবং ফায়ার অ্যালার্মের ব্যবস্থা রাখা এবং এগুলো কাজের উপযোগী আছে কি না তা নিয়মিত পরীক্ষা করা।

দুর্ঘটনায় যাতে পদদলিত হয়ে কোন শ্রমিক বা কর্মচারী হতাহত না হয় সে জন্য কারখানায় নিয়মিত বহির্গমন মহড়া পরিচালনাপূর্বক রেকর্ড সংরক্ষণ করা।

কারখানায় অগ্নি দুর্ঘটনা সংঘটিত হলে সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিস (০২-২২৩৩৫৫৫৫৫ ) এবং বিজিএমইএ’র জরুরী নম্বর- ০১৯১৩-৫২৯৮৬৭- এ ফোন করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিন।  অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে আপনাদের সকলের ব্যক্তিগত সচেতনতা একান্তভাবে কাম্য।

মন্তব্য

Beta version