-->

পুঁজিবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ
পুঁজিবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নাজুক। দীর্ঘদিন থেকে এ পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়ত কমছে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। একইভাবে কমছে বাজার মূলধনও।

 

ফলে পুঁজির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তবে এ সময়ে পুঁজিবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়তে দেখা গেছে। চলমান পতনের মধ্যেই পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারী সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়েছে।

 

সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব সংখ্যা ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫৮টি। এক বছর আগে যা ছিল ৫ লাখের নিচে। একইভাবে মোট বিও সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৩৮১টি।

 

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, বর্তমানে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কম থাকায় এর প্রতি ঝুঁকেছেন নারীরা। ফলে পুঁজিবাজারের প্রতি তাদের আগ্রহ বেড়েছে। জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, এখন সব ক্ষেত্রেই নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পুঁজিবাজারেও পড়েছে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো থাকলে আগামীতে এখানে নারীরর অংশগ্রহণ আরো বাড়বে।

 

তথ্যমতে, পুঁজিবাজারে বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার রয়েছে ১৪ লাখের বেশি বিও হিসাবে। বাকিগুলোয় হিসাবে কোনো শেয়ারই নেই। অর্থাৎ এসব বিও হিসাব শেয়ারশূন্য হয়েছে। এর মধ্যে গত এক বছরেই শেয়ারশূন্য হয়ে পড়েছে প্রায় ১ লাখের বেশি বিও হিসাব।

 

জানা যায়, গত এক বছরে বিপুল পরিমাণ বিওশূন্য হয়ে পড়ার প্রধান কারণ বছরের শেষ সময়ে এসে বাজার অস্থিতিশিল হয়ে পড়া। গত বছরের শেষের দিকে ধারাবাহিক সূচক পতনের কারণে অনেকে বিও অ্যাকাউন্ট খুলে ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেননি। আবার পরিস্থিতি নাজুক দেখে অনেকে শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে গেছেন। যে কারণে অনেক বিওশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে এ বছর পরিস্থিতি বদলে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

 

নিয়মানুযায়ী, জুনে বিও ফি পরিশোধ না করলে সেসব অ্যাকাউন্ট এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যেসব হিসাবে শেয়ার কিংবা টাকা থাকে সেসব হিসাব বন্ধ হয় না। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা-২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাবরক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়।

 

এর আগে পঞ্জিকাবর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এ ফি জমা নেয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুনে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময় বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়।

 

এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল। বর্তমানে বিও নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ টাকা।

 

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভোরের আকাশকে বলেন, সবসময়ই শেয়ারশূন্য বিও অ্যাকাউন্ট থাকে। তবে বাজার পরিস্থিতি খারাপ হলে এর সংখ্যা বাড়ে। যখন বাজার ভালো থাকে, তখন অনেকেই সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করার জন্য বিও হিসাব খোলেন।

 

পরে পরিস্থিতি খারাপ হলে তারা আর বিনিয়োগ করেন না। ফলে শেয়ারশূন্য থাকা বিও হিসাবের সংখা বাড়ে।

 

এছাড়া অনেকে শুধু প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগ করার জন্য হিসাব খোলেন। এসব বিনিয়োগকারীর হিসাব বেশিরভাগ সময় শূন্য থাকে। কারণ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই সেকেন্ডারি মার্কেটে একটি হিসাবের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version