মে দিবসের বন্ধ থাকায় সোমবার এবং বুদ্ধ পূর্ণিমার কারণে বৃহস্পতিবার শেয়াবাজারে লেনদেন হয়নি। এতে চলতি সপ্তাহে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে মাত্র তিন কার্যদিবস। এর মধ্যে দুই কার্যদিবস মূল্যসূচক কমেছে এবং এক কার্যদিবস সূচক বেড়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। তবে বেড়েছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছ দৈনিক গড় লেনদেন। পাশাপাশি বাজার মূলধনও সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনা সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
বাজার মূলধন ও লেনদেন বাড়লেও তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিলো সপ্তাহজুড়েই। ফলে দুই’শ এর বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭ কোটি টাকা।
অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২৬০ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে। এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেননেদ হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৯টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির। আর ২৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অন্যদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪৫ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৩ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহ বাড়ার পর ডিএসইর প্রধান সূচক কমলো।
প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক।
সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৩ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৬ শতাংশ। তবে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ৪ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮০২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৪৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৫৩ কোটি ১১ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৪০৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৯৯৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ৫৯০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বা ১৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। মোট লেনদেন বাড়ার কারণ চলতি সপ্তাহে মাত্র তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৪ কোটি ৭২ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনিক হোটেলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৩ কোটি ১০ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। ১০১ কোটি ১৯ লাখ ৪৮ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, আমরা নেটওয়ার্ক, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনেক্স ইনফোসিস, জেমিনি সি ফুড এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য