-->
শিরোনাম

নতুন বিনিয়োগকারীর সাড়া নেই পুঁজিবাজারে 

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ
নতুন বিনিয়োগকারীর সাড়া নেই পুঁজিবাজারে 

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: টানা পতনের পরে সম্প্রতি কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীধারায় ফিরেছে পুঁজিবাজার। বাড়ছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। পাশাপাশি সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তবে বাজার ভালোর দিকে গেলেও পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারীর সাড়া নেই।

 

নতুন করে বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে। যার জের ধনে এপ্রিলে নতুন বিও খোলার সংখ্যা তলানিতে নেমেছে। তবে এই পরিস্থিতি বেশিদিন থাকবে না বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন বাজার ধারাবাহিকভাবে ভালো থাকলে এখানে নতুন বিনিয়োগকারীর অভাব হবে না।

 

জানা যায়, পুঁজিবাজারে এপ্রিলে নতুন করে ২৪৭ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টধারী বিনিয়োগকারী বাজারে এসেছেন।

 

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যমতে, ঈদের ছুটির কারণে এপ্রিলে মাত্র ১৮ কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে। এই ১৮ দিনের মধ্যে সূচক বেড়েছে ১২ কর্মদিবস আর কমেছে ৬ কর্মদিবস। অধিকাংশ দিন সূচক বাড়ায় বিদায়ী মাসে বিনিয়োগকারীদের হারানো পুঁজি বা বাজার মূলধন ফিরেছে ৩ হাজার ৩২৪ কোটি ৪২ লাখ ৮১ হাজার টাকা। কিন্তু সেইহারে বিনিয়োগকারী বাড়েনি।

 

শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অপ বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) মতে, ৩০ মার্চ দেশের মোট বিনিয়োগকারীদের বিও ছিল ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৬০৫। এক মাসের ব্যবধানে ৩০ এপ্রিল মাসে সেই বিও সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৯৪টিতে। এর মধ্যে ৩০ মার্চ দেশি বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৯০ হাজার ৯৫৭টি। ৩০ এপ্রিল সেই বিও সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯১ হাজার ২০৪টি।

 

অর্থাৎ দেশি বিনিয়োগকারীর বিও বেড়েছে ২৪৭টি। কিন্তু এই সময়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে।

 

দেখা গেছে, বিদেশিদের বিও কমেছে ১১৪টি। ৩০ মার্চ তাদের বিও হিসাব ছিল ৬৩ হাজার ৮টি। সেখান থেকে ১১৪টি কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৬২ লাখ ৮৯৪টিতে।

 

জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, এখন বাজার ভালোর দিকে যাচ্ছে আশা করা যায় এখন বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী আসবেন। আর তারা আসলে বিও অ্যাকাউন্টও বাড়বে। তবে এর জন্য বাজারের ধারাবাহিকতা থাকা জরুরি।

 

মূলত ২০১০ সালের পর থেকে বিও অ্যাকাউন্ট উল্লেখযোগ্য হারে কমতে থাকে। বর্তমানে অর্ধেকের বেশি অ্যাকাউন্ট হচ্ছে শেয়ারশূন্য। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী এ তথ্য জানা গেছে। বর্তমানে মোট বিও’র মধ্যে শেয়ারশূন্য এবং ব্যবহার করা হচ্ছে না এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ১৪ লাখের বেশি।

 

গত বছর সময়মতো বিও ফি পরিশোধ না করায় বাতিল হয়ে গেছে প্রায় আড়াই লাখ অ্যাকাউন্ট। সেকেন্ডারি মার্কেটের মন্দা পরিস্থিতি, সে সঙ্গে আইপিও বাজারের নাজুক পরিস্থিতির জন্য এসব অ্যাকাউন্ট ঝরে গেছে বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

 

তাদের অভিমত, বর্তমানে বাজারচিত্র পরিবর্তিত হয়েছে। তাছাড়া প্রায় প্রতি মাসেই রয়েছে আইপিও, যে কারণে বিনিয়োগকারীরা বাজারে ফিরে আসছেন।

 

নিয়মানুযায়ী জুন মাসে বিও ফি পরিশোধ না করলে সেসব অ্যাকাউন্ট এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যেসব হিসাবে শেয়ার কিংবা টাকা থাকে, সেসব হিসাব বন্ধ হয় না।

 

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাবরক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়। এর আগে পঞ্জিকাবর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এই ফি জমা নেয়া হতো।

 

তবে ২০১০ সালের জুন মাসে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময়ে বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়।

 

এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল। বর্তমানে বিও নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ টাকা।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version