সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে আড়তদারদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তাদের যোগসাজশে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। গতকাল রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থাটি নিয়মিত বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সম্প্রতি সরকার বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার। এই টাস্কফোর্সসহ ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে গতকালও ঢাকা মহানগর, বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে বাজার তদারকি করেন।
তদারকি দলের সদস্যরা বাজারগুলোতে সবজি, ডিম, ব্রয়লার মুরগি, আলু, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম ও সরবরাহের খোঁজ নেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় গতকাল তাদের মোট ছয়টি দল কাজ করেছে।
গতকাল ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবদুস সালামের নেতৃত্বে কারওয়ান বাজার ও বনানী কাঁচাবাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কারওয়ান বাজারে সবজির ট্রাক রাত ১২টার দিকে আসে। এরপর ট্রাক থেকে সবজি অন্তত ৬-৭ বার হাত বদল হয়ে তা পাইকারি বিক্রির পর্যায়ে পৌঁছায়।
ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, কারওয়ান বাজারে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন অবৈধ ফড়িয়া ব্যবসায়ী আছেন। তাদের কোনো ধরনের ব্যবসায় নিবন্ধন, রশিদ বই বা অন্য কোনো অনুমোদন নেই। অভিযানে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে সবজির দাম বৃদ্ধিতে আড়তদারদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আড়তদারদের যোগসাজশে পাইকারি, ব্যাপারী, খুচরা ব্যবসায়ী- সবাই একসঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করছে।
কারওয়ান বাজারে অবৈধভাবে ব্যবসা করা ও দাম বৃদ্ধির কারসাজির অভিযোগে গতকাল ৫ জনকে ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করে ভোক্তা অধিদপ্তর।
অন্যদিকে বনানী কাঁচাবাজারে ব্যবসায়ীদের মাঝে দোকান বরাদ্দ দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। গতকাল সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এমন অনেকে নিজে ব্যবসা না করে বরাদ্দ পাওয়া জায়গা অন্যদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। প্রতিটি স্থানের জন্য ভাড়া বাবদ ২৫ থেকে ৩৬ হাজার টাকা নিয়েছেন তারা।
ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, এভাবে দোকান ভাড়ার হাতবদলের ঘটনা খুচরা বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। এ অপরাধের কারণে গতকাল বনানী কাঁচাবাজারের ৮ প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৯ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করেছে সংস্থাটি। এ ছাড়া গতকাল দেশের ৩৬টি জেলায় ভোক্তা অধিদপ্তরের ৪২টি দল অভিযান পরিচালনা করে। এসব অভিযানের সময় ৮৭টি প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তা অধিকার রক্ষায় ভোক্তা অধিদপ্তরের এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য