-->
শিরোনাম

বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতিতে ধস, বেড়েছে পরিশোধ

-ইআরডির প্রতিবেদন

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতিতে ধস, বেড়েছে পরিশোধ

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার ধস নেমেছে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর ঋণের প্রতিশ্রুতি কমিয়েছে ৯৯ শতাংশের বেশি। একই সঙ্গে আগের অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরের কম অর্থছাড় হয়েছে। অর্থছাড় এবং প্রতিশ্রুতিতে নেতিবাচক হলেও বেড়েছে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ। জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসের হিসাব প্রকাশ করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। গতকাল সোমবার বৈদেশিক অর্থায়নের এ তথ্য প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে যত বিদেশি ঋণ এসেছে, পরিশোধ করতে হয়েছে তার চেয়ে বেশি।

ইআরডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ঋণ ও অনুদান মিলে প্রতিশ্রুতি এসেছিল ২৮৮ কোটি ৫ লাখ ডলার, সেখানে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ২ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। তুলনামূলক চলতি বছরে প্রতিশ্রুতি কমেছে ২৮৫ কোটি ৩১ লাখ ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের ব্যবধানে প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯৯ দশমিক ০৫ শতাংশ। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে যে পরিমাণ ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে তার মধ্যে ঋণের কোনো প্রতিশ্রুতি নেই, পুরোটাই অনুদান দেবে উন্নয়ন সহযোগীরা। অন্যদিকে গত অর্থবছরের একই সময়ের প্রতিশ্রুতির মধ্যে বেশি ছিল ঋণ। এ ছাড়া কমেছে ঋণের অর্থছাড়। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে অর্থছাড় হয়েছে ৮৪ কোটি ৬১ লাখ ২০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৬৬ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং অনুদান ১৮ কোটি ২৫ লাখ ডলার। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে পাওয়া গিয়েছিল ১২৮ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ঋণের অর্থ ছিল ১২৩ কোটি ১২ লাখ ডলার এবং অনুদান ছিল ৫ কোটি ৫ লাখ ২০ হাজার ডলার।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় এবং প্রতিশ্রুতি কমলেও বেড়েছে ঋণ পরিশোধের চাপ। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করা হয়েছে ১১২ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। এর মধ্যে সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৪৪ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং আসল পরিশোধ করা হয়েছে ৬৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে একইসময়ে সুদ ও আসলসহ ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল ৮৭ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর মধ্যে সুদ ছিল ৩৭ কোটি ৮৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং আসল ছিল ৪৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৫ কোটি ২৫ লাখ ডলার। টাকার অংকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ১২ হাজার ৮৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শোধ করতে হয়েছিল ৯ হাজার ৫৩৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। অর্থ অর্থবছরের ব্যবধানে ঋণ পরিশোধের অর্থাৎ অর্থবছরের হিসেবে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৩ হাজার ৩৩৯ কোটি ২০ লাখ টাকা।

হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের তিন মাসে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে জাতিসংঘ এবং ইউরোপ ছাড়া অন্য কোনো সংস্থা বা দেশ ঋণের প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তবে ঋণের প্রতিশ্রুতি না দিলেও অর্থছাড় করেছে প্রায় সব উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশ। দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে আমেরিকা, জাপান, ইউরোপ। এ ছাড়া সংস্থাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version