-->
শিরোনাম

আর্থিক খাত পাকিস্তানের চেয়েও খারাপ

-গভর্নর

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
আর্থিক খাত পাকিস্তানের চেয়েও খারাপ

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বাংলাদেশের আর্থিক খাতের অবস্থা পাকিস্থানের চেয়েও খারাপ। অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে আমরা টাকা ছাপাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত (গত ৩ মাসে) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে কোনো কিছু দেওয়া হয়নি এবং হবে না। গত ১৫ বছর ধরে দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তবে এখন কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেন বন্ধ হয়ে না যায়, সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। গতকাল সোমবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ‘বৈষম্য, আর্থিক অপরাধ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির নিরাময়’ শীর্ষক অর্থনৈতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন বিনিয়োগ নিয়ে অধৈর্য হয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান গভর্নর। পুরো ব্যাংকিং খাতের অবস্থা ভালো করতে কমপক্ষে ২-৩ বছর সময় লাগবে। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার। চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছে প্রতিনিধি দল। কোন কোম্পানি বন্ধ করেনি সরকার। উল্টো বেক্সিমকো গ্রুপের বেতন দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছে সরকার। দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার। আইএমএফের বিশেষজ্ঞরাও আসবে। ব্যাংকিং খাতের আর বড় কোন বিপদ আসবে না। সেটাকে স্থিতিশীল করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে আরো ৫-৮ মাস সময় লাগবে। মূল্যস্ফীতিকে ৫-৬ বা ৪ নামিয়ে আসতে পারে। অধৈর্য হয়ে লাভ নেই কোন। বিনিয়োগ চাঙ্গা করতে হবে এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। গেলো তিনমাসে সরকার কোন ডলার বিক্রি করেনি।

গভর্নর বলেন, গত সপ্তাহে সার কেনার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। আমরা জানি, ব্যাংকগুলো লিকুইড মানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর নির্ভর করবে। সেটার বিপরীতে ৫ হাজার কোটি টাকার ইকুইভ্যালেন্ট বন্ড ইস্যু করে টাকা দেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ম্যাক্রো স্টেবেলিটি। এটা না হলে মূল্যস্ফীতি নিযন্ত্রণে আসবে না। আমাকে এই ফাইট করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বেক্সিমকো সচল রাখতেই প্রশাসক দেওয়া হয়েছে। এর মানে এই নয় যে, বেক্সিমকোকে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েকমাস ধরেই বেক্সিমকোর বেতন-ভাতা সরকার থেকে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। কোম্পানিগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এক্সিম ব্যাংককে গত মাসে এক হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং উপস্থিত ছিলেন।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version