মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্যয় বাড়ছে ৫৬৮ কোটি ডলার

সাজেদা হক
মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্যয় বাড়ছে ৫৬৮ কোটি ডলার

 

ব্যয় বাড়ছে বেজা বা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ থেকে বাস্তবায়নাধীন ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ‘পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় একটি ৫০ এমএলডি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনার কাজে। প্রকল্পটিতে অতিরিক্ত কাজের ফলে ৫১৮ কোটি ৬১ লাখ ২১ হাজার ৬১৬ টাকা ব্যয় বাড়ছে।

জানা গেছে, ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর তারিখে একনেক থেকে অনুমোদিত হয়। মূল ডিপিপিতে প্রকল্পটির মেয়াদকাল ছিল ১ জুলাই ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এবং এর প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল মোট ৬৩২.৮২১৫ কোটি টাকা। পরবর্তীতে বাস্তবতার নিরিখে গত ২০২৪ সালের ২৮ মে তারিখে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় বর্ধিত প্রকল্পের সংশোধিত (১ম) ডিপিপি অনুমোদিত হয়। সংশোধিত (১ম) ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এবং এর প্রাক্কলিত ব্যয় মোট ৭৬১.৯৬ কোটি টাকায় বাড়ানো হয়। প্রকল্পের আওতায় পানি শোধনাগার স্থাপনের জন্য প্যাকেজের আওতায় চারটি কম্পোনেন্ট রয়েছে।

গত ২০২২ সালের ২৬ মে তারিখ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার সুপারিশের ভিত্তিতে বর্ণিত ক্রয়কার্য হংকং ভিত্তিক জেডএইচইসি-বিওডব্লিউ-এসএমইডিআরআইসি যৌথভাবে ভ্যাট-আইটিসহ সর্বমোট ৪৩৯ কোটি ৫১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯৮ টাকা (যার মধ্যে নির্মাণ ব্যয় ৪১০ কোটি ২৯ লাখ ৮২ হাজার ৬৩১ টাকা এবং নির্মাণ পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ২৯ কোটি ২১ লাখ ৪২ হাজার ৯৬৭ টাকা) বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। সে প্রেক্ষিতে জেডএইচইসি-বিওডব্লিউ-এসএমইডিআরআইসি এর সঙ্গে ২০২২ সালের ৫ জুলাই তারিখে বেজার ক্রয় চুক্তি সম্পাদিত হয়।

বেজার পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পানি সরবরাহের জন্য ৫০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন ২টি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ১টি ৫০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হচ্ছে যেখানে অপরিশোধিত পানি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে সরবরাহের লক্ষ্যে ৮০০ মি.মি. ডায়ার ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপনের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১টি ৫০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করার লক্ষ্যে ট্রান্সমিশন পাইপলাইনের একই রুট ব্যবহার করে ৮০০ মি.মি. ডায়ার আরো ১টি পাইপলাইন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

এতে একই রুট ব্যবহার করে দুটি ট্রান্সমিশন পাইপলাইন নির্মাণ করা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে ও কারিগরী বিবেচনায় একই রুটে দুটি ৮০০ মি.মি. ডায়ার ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপন অত্যন্ত জটিল এবং ব্যয় বহুল। সে বিবেচনায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউ এম) থেকে ৮০০ মি.মি. ব্যাসের ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপনের পরিবর্তে ১০০০ মি.মি. ব্যাসের ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপনের সুপারিশ করা হয়, যার মাধ্যমে ২টি ৫০ এমএলডি ক্ষমতার সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের অপরিশোধিত পানি পরিবহন সম্ভব হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে সংশোধিত ডিপিপিতে সংস্থানের সাপেক্ষে নির্বাচিত ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত মূল চুক্তির ভেরিয়েশনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

ভেরিয়েশনের জন্য প্রয়োজনীয় জরিপ ও নকশা সংশোধন করা হয়েছে। এসব কাজ সম্পাদনে নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে আরো ৫০৫ দিন সময় সম্প্রসারণ প্রয়োজন হবে (৩০ জুন ২০২৬)। ভেরিয়েশন প্রস্তাবে পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৮০ অনুসারে দর চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে ঠিকাদার উক্ত প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে।

এছাড়া, এ ভেরিয়েশন প্রস্তাবে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং সুপারিশ করেছে। প্রকল্পের অতিরিক্ত কাজ সম্পাদনের জন্য প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপি-তে ৫০২ কোটি ৩ লাখ ৬০, হাজার ৫৫৩ টাকার সংস্থান আছে। উল্লেখ্য মূল চুক্তি অনুযায়ী অপারেশন-মেইনটেন্যান্স ব্যয় বাবদ ২৯ কোটি ২১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৬৭ টাকা বেজা'র নিজস্ব তহবিল থেকে নির্বাহ করা হবে বিধায় ডিপিপিতে এ অর্থের সংস্থান রাখা হয়নি। পিপিআর-২০০৮ এর তফসিল ২ অনুযায়ী ‘ভেরিয়েশন অর্ডার, অতিরিক্ত কার্যাদেশ, পুনরাবৃত্ত ক্রয়াদেশ বা অতিরিক্ত পণ্য সরবরাহের আদেশ প্রদানের মূল্যসীমা মূল চুক্তি মূল্যের অনধিক ১৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ। ‘ডেলিগেশন অব ফিন্যান্সিয়াল পাওয়ার’ এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির কার্যপরিধি অনুযায়ী মূল ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনকারী সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

জানা গেছে, প্রশাাসনিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসাবে সার-সংক্ষেপটি প্রধান উপদেষ্টা দেখেছেন ও অনুমোদন করেছেন এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় অনুমোদনের জন্য কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য