-->

ঢাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি

ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আকতারুলকে অসুস্থ অবস্থায় গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বিজয় একাত্তর হল প্রশাসন। তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আকতারুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষক ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম সানাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। তিন দিনের মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির।

অভিযোগপত্রে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কামরুজ্জামান রাজু, ইতিহাস বিভাগের হৃদয় আহমেদ কাজল, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইয়ামিম ইসলাম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ওমর ফারুক শুভ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাইফুল ইসলাম ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সাইফুল ইসলাম রোহানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ছয় জনেই ২০১৯-২০ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদের নাম জানা যায়নি।

অভিযুক্তদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে ভুক্তভোগী দাবি করেছেন।

ঘটনাটি নিয়ে অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, ‘শিক্ষার্থীকে গেস্টরুমে নির্যাতন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না। ছাত্রলীগসহ যারা শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করছে তারা এ কাজ থেকে বেরিয়ে এলে আমাদের জন্য বিষয়গুলো সহজ হয়। এছাড়াও যেহেতু প্রতিটা হলেই নিয়মিত শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তাই আমরা প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’

এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাদের প্রতি ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান থাকবে এ সকল ঘটনায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখার জন্য।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন জানান, ‘কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে শিক্ষার্থী নির্যাতন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া ছাত্রলীগের কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর প্রতি ন্যূনতম অসম্মানজনক আচরণ করে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নির্যাতনের শিকার আখতার জানান, অসুস্থ অবস্থায় তাকে গেস্ট রুমে ডেকে নিয়ে লাইটার জ্বেলে ৩০ মিনিট আলোর দিকে তাকিয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল ‘বড় ভাইয়েরা’। এ নির্যাতনের পর রুমে ফিরে হতবিহ্বল হয়ে আকতারুলের বুক ব্যথা শুরু হয়ে যায়। পরে রুমের সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ডাক্তার তার ইসিজি, কোভিড টেস্ট ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে আকতারুল হলে ফেরেন। তিনি জানান, তার বাবা সাতদিন আগে স্ট্রোক করেছেন। ছোট ভাই দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। যার কারণে তিনি আগে থেকেই মানসিক ট্রমার ভেতরে ছিলেন। তিনি ভয়ের মধ্যে আছেন।

মন্তব্য

Beta version