-->
শিরোনাম

শব্দ করে পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ বিশেষজ্ঞদের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
শব্দ করে পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ বিশেষজ্ঞদের
প্রতীকী ছবি

কোমলমতি শিশুদের ছোটবেলা থেকেই শব্দ করে পড়ায় উৎসাহিত করতে প্রতি বছরের মতো এবারো বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয়েছে ‘শব্দ করে পড়া দিবস-২০২২’।

এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক ওয়েবিনার আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রিড অ্যালাউড বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানে বক্তারা মেধাভিত্তিক আগামী প্রজন্ম গড়তে শব্দ করে পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

সেমিনারে শিশুদের শব্দ করে পড়ার তাগিদ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘শব্দ করে পড়ার প্রয়োজনীয়তা বহুমাত্রিক। মনকে সুন্দরভাবে বুঝাতে সক্ষম হতে চাইলে শ্রুতিমধুরভাবে কথা বলতে জানতে হবে।

‘এগুলো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অংশ। আমরা দেখতে পাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও অনেক শিক্ষার্থী সঠিক উচ্চারণে কথা বলতে পারে না। কারণ তার ভুল ত্রুটি কেউ শুধরে দেয়নি। শব্দ করে পড়ার অভ্যাস তৈরি করলে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই এ ভুলগুলো সম্পর্কে সচেতন করা সম্ভব হবে।’

অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইস সার্বক্ষণিক ব্যবহারের ফলে আজকের শিশুরা অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। তারা মোবাইল ফোনেই পৃথিবীটা দেখে।

‘এ কারণে তাদের মধ্যে জড়তাও তৈরি হয়েছে। শিশুদের অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা ও তাদের কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলতে শব্দ করে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেয়া জরুরি।’

শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. এন কে ঘোষ বলেন, ‘আমরা যখন শব্দ করে পড়ি তখন অনেকগুলো ইন্দ্রিয় একসঙ্গে ওই বিষয়টি মনে রাখতে সাহায্য করে। তাই শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে শব্দ করে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

‘শব্দ করে পড়লে পড়ায় মনোযোগ ধরে রাখা যায়, উচ্চারণটা সঠিক না ভুল, তা অন্যরা শুধরে দিতে পারে। আমরা যখন ছোট ছিলাম পরিবার থেকে এ বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হতো। এখন হয়তো আগের মতো শব্দ করে পড়া নিয়ে অতটা ভাবা হয় না। নতুন করে সবার সামনে এটিকে নিয়ে আসায় আমি রিড অ্যালাউড বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

রিড অ্যালাউড বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা রূপক সিংহ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমরা এখন যে শিক্ষা নেবে, সেভাবেই ভবিষ্যতে নিজেকে তৈরি করবে। এজন্য তোমাদের সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে আমাদের আজকের এই আয়োজন।

‘মনে রাখবে, শব্দ করে পড়ার অভ্যাসের সঙ্গে নিবিড় পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই ‘শব্দ করি পড়ি, নিজেকে আবিষ্কার করি’ এই প্রত্যয়ে তোমরা দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করে তোলো, এটাই আমাদের চাওয়া।’’

সেমিনারে গল্প কথন, কবিতা আবৃত্তি, গান ও উপস্থিত বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুরা শব্দ করে পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে তাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরে।

এদের মধ্য থেকে ৫০ জনকে রিড অ্যালাউড বাংলাদেশ-এর স্থায়ী সদস্য পদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এরপর তাদের সঙ্গে নিয়ে পরিচালনা করা হবে বছরব্যাপী ‘শব্দ করে পড়া’ বিষয়ক ক্যাম্পেইন।

রিড অ্যালাউড বাংলাদেশ বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে ‘বিশ্ব শব্দ করে পড়া দিবস’ পালন করে আসছে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম বুধবার দিবসটি পালন করা হয়।

মন্তব্য

Beta version