ঢাবি শিক্ষার্থী মাহবুব হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাবি শিক্ষার্থী মাহবুব হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
ঢাবি শিক্ষার্থী মাহবুব হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ট্রেনে কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব আদর। তার লাশ পাকশি সেতুর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন তার সহপাঠীরা। এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন তারা।

বুধবার (২৩মার্চ) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে 'মাহবুব আদর এর নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও খুনিদের বিচার দাবিতে' আয়োজিত মানববন্ধনে এই দাবি জানান তারা।

মাহবুবের বন্ধু মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, ১৫ তারিখ মাহবুব আমাকে বলে, 'আমাকে পাঁচশ টাকা দে, কুষ্টিয়া যাচ্ছি। লালন শাহের মাজারে যাবো।' রাতে সে ট্রেন থেকে ফেসবুকে পোস্ট দেয় অপরিচিত বন্ধুর সঙ্গে আছি। পরেরদিন তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সে যদি ব্রিজে আঘাত পেয়ে মারা যেত তাহলে তার মাথার পেছনে কেন আঘাত হবে। আমরা এতে ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছি।

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজ আহমেদ বলেন, মাহবুব তার মায়ের সঙ্গে রাত ১২ টায় কথা বলে। কিন্তু এরপর তাকে ফোন দিলে আর পাওয়া যায়নি। আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করেও আর পাইনি। সকালে আমরা দুর্ঘটনার খবর পাই। পরে তার ফোন 'চেক' করে দেখা যায়, ফেসবুকে রাত ৩টায় পোস্ট করেছে সে। অথচ ছবিটি তোলা হয়েছিল রাত ১ টায়। রেলের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে দেখা যায়, ট্রেনটি পাকশী ব্রিজ অতিক্রম করে রাত ২.৩০ মিনিটে। অথচ পরেরদিন তার লাশ উদ্ধার করা হয় ব্রিজের কাছ থেকে। পুলিশও বলছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

তিনি বলেন, মাহবুবের বাবা একজন মেয়র পদপ্রার্থী। এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। ঝামেলা আছে। যদি এর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা না হয় তাহলে এ আন্দোলন গণআন্দোলনে পরিণত হবে। প্রশাসনের কোনো হস্তক্ষেপ আমরা দেখছি না।

ঢাবি শিক্ষার্থী শ্রাবণী বলেন, ইতোমধ্যে এক সপ্তাহ চলে গেছে কিন্তু এখনো প্রশাসন এই হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ বের করতে পারেনি। এটা রাজনৈতিক বা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকতে পারে। অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের কারণ খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় মাহবুব হত্যার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতকরণে চার দফা লিখিত দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।

দাবিগুলো হলো-

১. তদন্তের দায়িত্বভার পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর হাতে তুলে দিতে হবে।

২. আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে হবে।

৩. ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে খুনীর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভুমিকা রাখতে হবে।

১৭ মার্চ ঢাকা থেকে চিত্রা ট্রেনে করে কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে মাহবুব আদরের রহস্যজনক মৃত্যু হয়।

মাহবুবের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে থাকতেন তিনি। বাবামায়ের একমাত্র সন্তান মাহবুব। তার বাবা জয়পুরহাট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান।

মন্তব্য