-->
শিরোনাম
পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি

আজ থেকে শুরু হলো এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ থেকে শুরু হলো এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আজ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিল এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় এ বছর অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। গতবারের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থী ৫০ হাজার ২৯৫ জন বেশি।

 

এছাড়া ছেলেদের চেয়ে মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও এবার বেশি। সারা দেশে মোট ৩ হাজার ৮১০টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

 

গত বছরের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রের সংখ্যাও বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। শিক্ষা বোর্ড বলছে এবার প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

তাদের দাবি, প্রশ্ন প্রণয়ন থেকে বণ্টন প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি কেন্দ্রের আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নজরদারি করবে। কেউ গুজব ছড়ালে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এবারো সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচিতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে হবে পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে আধাঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই কেন্দ্রে ঢুকতে হবে।

 

অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময়ের পর কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দিলে সেই পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি তথ্য একটি রেজিস্ট্রারে লিখে রাখতে হবে। পরীক্ষার দিনই সেসব তথ্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে হবে।

 

নিয়মানুযায়ী, ট্রেজারি বা থানা থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সব সেট পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানো হবে। তারপর পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে খুদে বার্তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে কোন সেটে সেদিনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তার কোড জানিয়ে দেয়া হবে। কেন্দ্র সচিব ছাড়া আর কেউ মুঠোফোন কিংবা ইলেকট্রনিক যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিবও ছবি তোলা যায় না এমন একটি সাধারণ মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারবেন।

 

পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, দেশের সব কেন্দ্রে এর মধ্যেই পৌঁছে গেছে উত্তরপত্রসহ পরীক্ষার আনুষঙ্গিক সরঞ্জমাদি। বসানো হয়েছে আসন বিন্যাস। এবার পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা হবে।

 

কারিগরি ও মাদরাসাসহ ১১টি শিক্ষা বোর্ডের সব প্রস্তুতির কথা জানিয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলছেন, প্রশ্নপত্র থানা থেকে বের করার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

 

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, পরীক্ষা উপলক্ষে ২৩ মে পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ২৩ মে এসএসসি এবং এসএসসি ও দাখিল (ভোকেশনাল) লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে। আর দাখিল লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ২৫ মে।

 

পরীক্ষা চলাকালে কেদ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ছাড়া সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে। এছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো অনলাইনে সার্বক্ষণিক তথ্যাদি আদান-প্রদান করবে।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে, এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ২৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭০ এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪০৫ জন। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১২১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে।

 

এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৩ এবং ছাত্রী ১ লাখ ৫১ হাজার ১২৮ জন।

 

সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৪ মে শুরু হয়ে ৩০ মে শেষ হবে। মাদরাসা বোর্ডে তত্ত্বীয় পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল থেকে ২৫ মে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ মে থেকে শুরু হয়ে ৩ জুন শেষ হবে।

 

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৫ মে শুরু হয়ে ৪ জুন শেষ হবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশিত হবে বলেও জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবকদের প্রতি আহব্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই।

 

অভিভাবকদের অনুরোধ জানাচ্ছি গুজবে কান দেবেন না। কেউ গুজব সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version