শাটল ট্রেনে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫০টি বাস ও মিনিবাস ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধরা। বাসগুলো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যাতায়াতে ব্যবহার করা হতো।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পরিবহন দপ্তরের সামনে দাঁড়ানো সবগুলো বাসই ভাঙা। কোনো বাসের গ্লাস নেই। আবার কোনোটির সিট নেই। বাসের ভেতর সব ইটের টুকরা পড়ে আছে। ভাঙা হয়েছে মিনিবাসগুলোও।
পরিবহন দপ্তরের তথ্যমতে, অন্তত ৫০টি বাস ও মিনিবাস ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিবহন দপ্তরের দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী বলেন, ‘আমি দপ্তরের ভেতরে বসা ছিলাম। হঠাৎ করে এক থেকে দেড়শ স্টুডেন্ট স্লোগান দিতে দিতে এইদিকে আসতে থাকে। তাদের প্রত্যেকের হাতে লোহার রড, পাইপ ছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম তারা হয়তো এক দুটি বাস ভাঙবে, তারপর চলে যাবে। কিন্তু এখানে এসেই তারা ইট মারতে শুরু করে। আমরা দপ্তরের ভেতরের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেই। কিন্তু তারা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে ২০টির মতো মিনিবাস রাখা ছিল। সেগুলো ভেঙে ফেলে তারা।’
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাটল ট্রেনের ছাদে চড়ে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় ফুঁসে ওঠেন চবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন তারা। একপর্যায়ে হঠাৎ করেই একজন শিক্ষার্থী মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা প্রথমে জিরো পয়েন্টে থাকা পুলিশ বক্সে হামলা চালান। এসময় পুলিশ বক্স পুরোটা ভেঙে ফেলা হয়। ভেতরে থাকা চেয়ার-টেবিল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এরপর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের প্রধান প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে বলা যাবে। তবে আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি পরিবহন দপ্তরে হয়েছে।’
প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘উপাচার্যের বাসভবন ভাঙা হয়েছে। পুলিশ বক্স মারাত্মকভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে। রেলের বগিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। অনেকগুলো বাস ভাঙা হয়েছে। এগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না।’
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য