জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন আহমেদের মেয়াদ আগামী ২৬ নভেম্বর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস বাকি থাকলেও এই পদে নিয়োগ পেতে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারিত শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈষ্ঠ্য কয়েক অধ্যাপক। এমনকি নিয়োগ পেতে ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়সহ সরকারের নানা দপ্তরে ধর্না দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আইনুল ইসলামও কোষাধ্যক্ষ পদপ্রত্যাশী। এই শিক্ষককে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১১ সালের ১৫ মার্চ ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। ২০১০ বছরের ২২ জুলাই এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর এবং বাংলা বিভাগের এক সহকারী শিক্ষিকার যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় যুক্ত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ পদ থেকে আইনুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়।
২০১১ সালের ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট সভায় সিন্ডিকেট সদস্য তৎকালীন ময়মনসিংহ-৭-ত্রিশাল আসনের এমপি অ্যাডভোকেট রেজা আলীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এই সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনার সত্যতায় তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শামসুদ্দিন চৌধুরীকেও অপসারণ করা হয়। সে সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ছাপানো হয়। পরবর্তীতে এই শিক্ষক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
সম্প্রতি আইনুল ইসলামকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক পদে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হলে সেখান থেকে ইস্তফা নেন। ট্রেজারার পদে ‘ফাইট’ দিতেই তিনি ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদ উপেক্ষা করেছেন বলে গুঞ্জন আছে। সম্প্রতি তার সই-য়ে শিক্ষক সমিতি থেকেও ট্রেজারার পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের থেকে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। তবে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ আছে এই অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে।
এছাড়া নির্বাচনে নিজের লোককে বিজয়ী করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি, সাংবাদিক সমিতির নির্বাচন দীর্ঘদিন বন্ধ এমনকি এই বিষয়ে নিউজ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গত বুধবার অধ্যাপক আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন,আমি কোষাধ্যক্ষ হতে চাচ্ছিনা। এমনকি সিভিও জমা দেইনি। সুতরাং এসংক্রান্ত সবকিছুই ভিত্তিহীন।
যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, যৌন কেলেঙ্কারির একটা ঘটনা ঘটেছিল এটি সত্য। তবে তৎকালীন সময়ে তদন্ত কমিটি সেখানে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা পায়নি৷ ঘটনা ঘটেছিল বাংলা বিভাগের দুইজন শিক্ষকের মধ্যে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য