-->
শিরোনাম

শিক্ষাক্রমে বাড়িতে রান্না করে স্কুলে খাবার আনার নিয়ম নেই: মাউশি

অনলাইন ডেস্ক
শিক্ষাক্রমে বাড়িতে রান্না করে স্কুলে খাবার আনার নিয়ম নেই: মাউশি

নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে ‘জীবন ও জীবিকা’ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নিজে রান্না শেখার কথা পাঠ্যবইয়ে উল্লেখ রয়েছে। অভিভাবকরা এটি নিয়ে সমালোচনা করছেন। পড়ালেখার নামে ‘পিকনিক’ বা ‘পার্টি’ চলছে বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করছেন। বিষয়টি সত্য নয় বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

 

অধিদপ্তর বলছে, ‘শিক্ষার্থীদের রান্না শেখানোর বিষয়টি নিয়ে অতিরঞ্জিত করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।’ ‘গুজব ও বিভ্রান্তি’ রুখতে মাউশি থেকে সম্প্রতি একটি লিফলেট প্রকাশ করা হয়েছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হচ্ছে ওই লিফলেট। শিক্ষকদের মাধ্যমে অভিভাবকদের মধ্যে তা বিলির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

 

লিফলেটে মাউশি উল্লেখ করেছে, ‘রান্না করার বিষয়টি অতিরঞ্জিত করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সারা বছরে একদিন শুধু পিকনিক করে রান্না শিখবে।’

 

অভিভাবকদের আরেক অভিযোগ হলো বাসা থেকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন খাবার রান্না করে আনতে বলা হচ্ছে। পাস্তা, পিজ্জা, দুধ পিঠা, কাচ্চি বিরিয়ানি, সরষে-ইলিশের মতো খাবার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বানিয়ে স্কুলে আনার নির্দেশ দিচ্ছেন শিক্ষকরা।

 

অভিভাবকরা বলছেন, বাধ্য হয়ে তারা নিজেরা বা কাজের বুয়া নিয়ে এসব খাবার বানিয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন। শিক্ষক-কর্মচারীরা সেগুলো ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন। এ থেকে শিক্ষার্থীরা আদৌ কিছু শিখছে না। বাড়ি থেকে রান্না করে খাবার আনার বিষয় নিয়েও লিফলেটে স্পষ্ট করেছে মাউশি। এ প্রসঙ্গে লিফলেটে বলা হয়, ‘বাড়ি থেকে রান্না করে আনার কোনো নির্দেশনা নতুন শিক্ষাক্রমে নেই। অতি উৎসাহী কোনো কোনো শিক্ষক এমন নির্দেশনা দিচ্ছেন। মাউশি এ বিষয়ে শিক্ষকদের সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে।’

 

রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রশিক্ষণে এটা নিয়ে বলা হয়েছিল। বাসা থেকে খাবার আনার কথা কেউ বলেননি। আমরা শিক্ষার্থীদের খাবার আনতে বলিনি। অন্য স্কুল এগুলো করলে সেটা তাদের দায়। তারা (শিক্ষক) হয়তো প্রশিক্ষণ পাননি অথবা বুঝে উঠতে পারেননি।’

 

জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) শিক্ষাক্রম ইউনিটের সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ‘জীবন-জীবিকা বিষয়ে বাসা থেকে শিক্ষার্থীদের খাবার রান্না করে আনার কাজ দেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। তারা নিজেরা শিখবে। স্কুলে মূল্যায়নের জন্য একদিন দলবদ্ধভাবে রান্নার কাজ করবে। এর বাইরে বাসা থেকে খাবার আনতে বলার সুযোগ নেই।’

 

পিজ্জা-পাস্তার মতো খাবার রান্না করতে দেওয়া বিষয়ে অভিভাবকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা শিক্ষকরা কেন করছেন তা জানি না। এটা হয়তো তাদের বোঝাপড়ায় ভুল থাকতে পারে। শহরের স্কুলগুলো এটা বেশি ঘটতে পারে। এগুলো অতিরঞ্জিত না করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দেবে। আশা করি শিক্ষকরা এটা আর করবেন না।’

 

মাউশির মহাপরিচারক (ডিজি) অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘এবার তো ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শুধু নতুন কারিকুলাম ছিল। এটা বলা চলে সীমিত পরিসরে দুই শ্রেণিতে চালু করা হয়েছে। এটাও সত্য অনেক শিক্ষক প্রশিক্ষণের আওতার বাইরে। ডিসেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষক প্রশিক্ষণের আওতায় চলে আসবেন। তখন এ ধরনের বোঝাপড়ার সমস্যা আর হবে না।’

 

তিনি বলেন, ‘নতুন বিষয়ে সবার একটু জানা-শোনা কম থাকতে পারে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটা মহল। এজন্য অপপ্রচার-গুজবে কান না দিতে অভিভাবকদের সচেতন করছি আমরা। তার অংশ হিসেবে লিফলেট করা হয়েছে।’

 

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version