-->
শিরোনাম

নোবিপ্রবিতে বাস সঙ্কটে চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
নোবিপ্রবিতে বাস সঙ্কটে চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা
নোবিপ্রবিতে বাস সঙ্কটে চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) পরিবহন সংকটের ঘটনা বেশ পুরোনো। বছরের পর বছর শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি বাসের সংখ্যা। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবির মুখে প্রশাসন মাঝেমধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে থাকলেও সেটি নামে মাত্রই বলা চলে। এখনও অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বাদুড়ের মতো ঝুলে আসা-যাওয়া করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকে থাকতে হয় মেস ও ভাড়া বাসায়। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাস হতে দূরে নোয়াখালী শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে মেস ও ভাড়া বাসায় থাকতে হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত বাসে যাতায়াত করতে হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত বাসের সংখ্যা ২১টি। এর মধ্যে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি ১০টি ভাড়া করা। এর মধ্যে অধিকাংশ বাস ত্রুটিযুক্ত। ভোগান্তি কমাতে বাস সংখ্যা বাড়ানোর দাবি শিক্ষার্থীদের। পরিবহন পুলে থাকা গাড়িগুলোর ফিটনেস নিয়েও আছে বিস্তর অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা বাসগুলোর কয়েকটির অবস্থা খুবই নাজুক। এছাড়াও অধিকাংশ বাসের ফ্যান নষ্ট। বিআরটিসি বাসগুলোতে ফ্যান লাগানো থাকলেও সবগুলো অকেজো। বৃষ্টির দিনে অনেক বাসে পানি প্রবেশ করে সিট ভিজে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত বাস সংকটে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা। বাসে ভোগান্তি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ভোরের আকাশকে বলেন, হলে সিট না পাওয়ায় শহর কেন্দ্রিক বিভিন্ন জায়গায় মেস ভাড়া করে থাকতে হয়। মেস থেকে ক্লাস করতে যাওয়ার পথে পরিবহনে অনেক সময় জায়গা থাকে না। শহর থেকে সকাল ৮টা, ৯টা এবং ৯.৩০টায় নিয়মিত বাস যায় ক্যাম্পাসে। সুধারাম থানার সামনে থেকে বাস ছাড়লেও বড় মসজিদ মোড়, পৌরবাজার, বিশ্বনাথ, রশিদ কলোনি, হোয়াইট হল, দত্ত বাড়ীর মোড়, দত্তের হাট ও সোনাপুর থেকেও শিক্ষার্থীরা বাসে ওঠে। বর্তমানে বাসের তীব্র সংকটের কারণে পৌর বাজার বা বিশ্বনাথ থেকেই বাসে দাঁড়ানোর জায়গাই পাওয়া যায় না। যার কারণে অনেক শিক্ষার্থীকেই বাসে উঠতে না পেরে ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে।

৪র্থ বর্ষের এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ভোরের আকাশকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন সমস্যার কারণে মাইজদিতে মেসে থাকতে হয়। আমাদের যাতায়াতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিবহন আছে তা শিক্ষার্থীর অনুপাত হিসেবে খুবই অপ্রতুল। আমাদের বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীদেরই আসা যাওয়া করতে হয় কোনমতে বাসের হাতল ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। এমনকি দরজার বাইরে ঝুলে ঝুলে যা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ এবং কষ্টকর। আরও দুঃখের বিষয় হল আমরা যারা রশিদ কলোনি, গ্যারেজ, হোয়াইট হল, কিংবা দত্তের হাটে থাকি তারা বাসে সিট পাওয়া কিংবা ঝুলে ঝুলে যাওয়া তো দূরের কথা বাসে উঠতেও পারি না। বাধ্য হয়ে আমাদের অনেককেই নিজ খরচে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয়। যেটা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠেনা। ইদানীং পরিবহনের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা এই সমস্যা সমাধানের জোর দাবি জানচ্ছি। বাসে ভোগান্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে নোবিপ্রবি'র পরিবহন প্রশাসক ড. কাউসার ভোরের আকাশকে বলেন, বাসের বিষয়ে এ পর্যন্ত আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি, এখন জানতে পেরেছি। প্রয়োজনে বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে দিবো যাতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর ভোরের আকাশকে বলেন, বাসের বিষয়ে এ পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ আসেনি। এখন জানতে পেরেছি পরিবহন প্রশাসকের সাথে কথা বলে বাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিবো। পরিবহন পুলে বাস বাড়ানোর বা নতুন তুলে দিলে প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে বাস কিনার সিদ্ধান্ত নিবো।

মন্তব্য

Beta version