এই মুহূর্তে হিন্দি প্লেব্যাক জগতের শীর্ষে রয়েছে তার নাম। ফিল্মি দুনিয়ার চাকচিক্য থেকে শত হাত দূরে অরিজিৎ সিংহ। অরিজিৎ সিংহের কণ্ঠমাধুর্যে মজে আসমুদ্র-হিমাচল। দেশে-বিদেশে শো করেন। তবু বার বার ছুটে আসেন নিজের ভিটেমাটির টানে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে।
সেলেব-সুলভ অহমিকা নয়, বরং প্রচারের আলো এবং ফিল্মি দুনিয়ার চাকচিক্য থেকে শত হাত দূরে থাকতে পছন্দ করেন তিনি। তবে তা বলে সম্পত্তির পরিমাণ কিছু কম নেই অরিজিতের। টেক্কা দিতে পারেন বড় বড় বলিউড তারকাদের।
সূত্রের দাবি, অরিজিৎ এর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৫৫ কোটি টাকার। শোনা যায় গানপিছু তিনি নেন ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এ ছাড়াও রয়েছে লাইভ শো। শো-পিছু যে পারশ্রমিক নেন, তার কিছুটা হেরফের হলেও মোটামুটি কোটি উপরেই থাকে সেই অঙ্ক।
জীবনযাপনের ক্ষেত্রেও ভীষণ সাদামাঠা থাকতেই পছন্দ করেন অরিজিৎ। বড় মাপের গায়ক, কিন্তু দামি গাড়ি নেই। সাধারণ মধ্যবিত্তদের মতোই তার বিচরণ। যদিও সম্প্রতি ম্যানেজারের পরামর্শে বড় গাড়ি কিনতে বাধ্য হয়েছেন অরিজিৎ।
কয়েক মাস আগে সমাজমাধ্যমে ছেলে ও সস্ত্রীক অরিজিৎ এর কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। তাতে জিয়াগঞ্জের মাউন্ট লিটেরা জ়ি স্কুলের গেটের সামনে দেখা যায় তাকে। ছেলেকে মুম্বই বা কলকাতার কোনও স্কুলে না পড়িয়ে নিজের জেলার স্কুলে ভর্তি করেছেন তিনি। আবার পাঁচ জন অভিভাবকের সঙ্গেই স্কুলের বাইরে অপেক্ষা করেন। এতটাই মাটির কাছাকাছি গায়ক। তাই নিজের রোজগারের অর্থ কোনও বিলাসবহুল জীবনযাপনে নয়, বরং সমাজের কল্যাণেই খরচ করেন অরিজিৎ।
শৈশবে যে স্কুলে পড়েছেন, সেই জিয়াগঞ্জ রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দিরের সভাপতির দায়িত্ব নেন অরিজিৎ। স্কুলের উন্নয়েন বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন শিল্পী। সংস্কারের অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে অযত্নে পড়েছিল স্কুলের খেলার মাঠ। অরিজিৎ সিংয়ের তত্ত্বাবধানে সেই মাঠ ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই পড়ুয়াদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সেই মাঠ।
এ ছাড়াও অরিজিতের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও রয়েছে। জিয়াগঞ্জে উন্নত হাসপাতাল করার চিন্তাভাবনাও রয়েছে তার। মুর্শিদাবাদে অতিমারির সময় চিকিৎসার পরিকাঠামো আরও মজবুত করতে অর্থসাহায্যও করেছেন ‘কবীরা’র গায়ক।
এ ছাড়াও অরিজিৎ তার উপার্জনের একটা বড় অংশ জিয়াগঞ্জের হাসপাতালের উন্নয়নে, দুঃস্থ শিশুদের হার্টের চিকিৎসায় এবং গানের স্কুল নির্মাণে ব্যয় করেন।
এ ছাড়াও জিয়াগঞ্জে বিনামূল্য ইংরেজি শিক্ষার কোচিংও খুলেছেন। লাগাতার বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগেও সামিল হন তিনি। আসলে নিজের স্বার্থ নয় বরং সমাজের সার্বিক উন্নতিই যেন অরিজিতের একমাত্র লক্ষ্য।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য