বড় পর্দায় আবার ফিরছে জাপানের কিংবদন্তি দানব গডজিলা! ১৯৫৪ সালে যাত্রা শুরু করা গডজিলা সিরিজের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নতুন সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে জাপানের বিনোদন প্রতিষ্ঠান টোহো স্টুডিওজ। গত বছরের জনপ্রিয় জাপানি সিনেমা ‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’-এর ব্যাপক সাফল্যের পর এবারও এই সিনেমার পরিচালক তাকাশি ইয়ামাজাকির হাতেই তৈরি হবে নতুন গডজিলা।
‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’ সিনেমাটি ছিল গডজিলা সিরিজের ৩৩তম পর্ব, যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর জাপানের গল্প তুলে ধরা হয়েছিল। কৌশি শিকিশিমা নামে সাবেক কামিকাজে পাইলটের চরিত্রে রিউনোসুকে কামিকির অভিনয়ে দেখা যায়, গডজিলার সঙ্গে মুখোমুখি হয়েও তিনি বেঁচে যান এবং পরে তার সঙ্গে যোগ দেয় কিছু পুরনো যোদ্ধা ও সৈনিক, যারা একত্রিত হয়ে গডজিলাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এই সিনেমাটি বক্স অফিসে তুমুল সাফল্য পায়, মাত্র ১৫ মিলিয়ন ডলার বাজেটে নির্মিত এই ছবি আয় করেছে ১১৬ মিলিয়ন ডলার, যা এটিকে সর্বোচ্চ আয়কারী জাপানি গডজিলা সিনেমায় পরিণত করেছে। এছাড়া সিনেমাটি সেরা ভিজ্যুয়াল ইফেক্টসের জন্য ৯৬তম অস্কারেও পুরস্কৃত হয়।
নতুন সিনেমাটি ‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’-এর সরাসরি সিক্যুয়েল হবে নাকি সম্পূর্ণ নতুন গল্পে নির্মিত হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আগের সিনেমাটি এমন একটি আভাস দিয়েছিল, যেখানে দেখা যায়, পরাজয়ের পর গডজিলার একটি অংশ সমুদ্রে পুনর্জীবিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও ভয়ংকর আকারে ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন পর্বটি আরও বৃহৎ পরিসরে এবং উন্নত প্রযুক্তিতে নির্মিত হবে।
টোহো স্টুডিওজ গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই খবরের ঘোষণা দিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে পরিচালক তাকাশি ইয়ামাজাকিকে বলতে শোনা যায়, “আমার কাছে দারুণ খবর আছে। গডজিলা সিরিজের নতুন সিনেমাটি পরিচালনা করব। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।” টোহোর এই ঘোষণায় গডজিলা ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
প্রথমবারের মতো ১৯৫৪ সালের ৩ নভেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘গজিরা’ ছবিতে দর্শকের সামনে হাজির হয়েছিল গডজিলা। সে সময় পারমাণবিক শক্তি ও অস্ত্রের বিরোধিতা এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত জাপানের প্রতিবাদস্বরূপ চরিত্রটি তৈরি করা হয়, যা পরবর্তীতে এক রূপক প্রতীক হয়ে ওঠে। দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে জনপ্রিয় এই দানব নিয়ে তৈরি হয়েছে ৩৭টি সিনেমা, বিভিন্ন টিভি সিরিজ, ভিডিও গেমস, ও কমিকস। প্রথম দিকে গডজিলা মানবজাতির প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকলেও সময়ের সাথে সাথে তাকে মিত্র হিসেবে দেখা গেছে, যিনি পৃথিবীকে অন্যান্য দানবের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছেন।
নতুন সিনেমাটি গডজিলার দীর্ঘ ফ্র্যাঞ্চাইজির ধারাবাহিকতায় নতুন যুগের দর্শকদের কাছে আরও শক্তিশালী ও উন্নত আঙ্গিকে হাজির করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য