-->
শিরোনাম
বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে বিশেজ্ঞরা

কিডনি বিকল রোগীর ৭৫ শতাংশ চিকিৎসার অভাবে মারা যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
কিডনি বিকল রোগীর ৭৫ শতাংশ চিকিৎসার অভাবে মারা যান

দেশের মোট কিডনি বিকল রোগীর ৭৫ শতাংশ পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

তারা বলেন, দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। তাদের মধ্যে প্রতি বছর ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয়। এ রোগীদের ৭৫ শতাংশ বিভিন্ন সময়ে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজনজনিত চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আরো বলেন, চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশিরভাগ রোগী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দেন। এছাড়া হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে বছরে আরো ২০ হাজার রোগী মারা যান।

 

গতকাল শনিবার কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ আয়োজিত দুদিনের বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের প্রথম দিনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর মিরপুরে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে ১৮তম বার্ষিক সভা ও বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।

 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিডনি রোগ ও প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, যথাসময়ে কিডনি রোগ শনাক্তের জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) করা জরুরি। তারা মনে করেন, মরণোত্তর অঙ্গদান বা ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের বিষয়ে লোকজনকে আরো উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মৃত ব্যক্তির কিডনি দান করা হলে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

 

কিডনি ফাউন্ডেশনের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি ও ক্যাডাভেরিক জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন-২০১৮ হয়েছে।

 

দেশে রোগীর জীবিত আত্মীয়ের দান করা কিডনি প্রতিস্থাপন করা হলেও এখনো ব্রেন ডেথ ঘোষিত ব্যক্তির অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হয়নি। এটা খুব শিগগির শুরু করতে চায় বিএসএমএমইউ। এতে অনেক মানুষের জীবন বাঁচবে। এখন দেশে অনেক উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে। বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করার আর প্রয়োজন নেই।

 

কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হারুন আর রশিদ বলেন, কিডনি রোগের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। আর্থিক সংকটে বেশিরভাগ কিডনি রোগী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। মৃত ব্যক্তির অঙ্গদানের বিষয়ে অনেক মানুষের অনেক ভুল ধারণা রয়েছে।

 

কিডনি জটিলতা এড়াতে যথাসময়ে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ শনাক্তের ওপর জোর দিয়েছেন বিএসএমএমইউর প্রোভিসি একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন, নিয়মিত স্ক্রিনিং না করানোর কারণে দেশে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ যথাসময়ে শনাক্ত হয় না।

 

এ কারণে কিডনি সমস্যাও যথাসময়ে শনাক্ত না হয়ে কিডনি রোগী বাড়ছে। চিকিৎসাসেবার মান বাড়াতে সহকর্মীদের মধ্যে শ্রদ্ধার সম্পর্ক থাকার ওপর জোর দেন যুক্তরাজ্যের রয়্যাল লন্ডন হাসপাতালের চিকিৎসক মুহাম্মদ মাগদি ইয়াকুব বলেন, একে অপরের কাজকে মূল্যায়ন করতে হবে।

 

চিকিৎসা সেবায় শুধু চিকিৎসকেরাই যুক্ত থাকেন না, নার্স প্যারামেডিক থেকে শুরু করে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরও ভূমিকা রয়েছে।

 

সূচনা বক্তব্যে কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মহাসচিব রুহুল আমিন রুবেল বলেন, দেশে প্রতি বছর ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয়। সময়মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করায় অনেকে একদম শেষ সময়ে এসে জানতে পারেন যে তাদের কিডনি অকেজো হয়ে গেছে। এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে।

 

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version