ফেনীতে উভয় লিঙ্গের শিশুর জন্ম হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। বর্তমানে মা ও সন্তান দুজনই সুস্থ আছেন৷
চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটি দুটি লিঙ্গ নিয়েই ভুমিষ্ঠ হয়েছে। শিশুটির বাবা মহিউদ্দিন জানান, গতকাল প্রসব বেদনা উঠলে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করি। এখন এ অবস্থায় কি করবো বুঝতে পারিছ না। এই শিশুর চিকিৎসা করানো আমার পক্ষে অসম্ভব।
ফেনী জেনারেল হাসপাতলের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ ইকবাল, উভয় লিঙ্গের শিশু জন্মের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে ঢাকা অথবা চট্রগ্রাম নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছন তিনি।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্টেট্রিকাস এন্ড গাইনিকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল বলেন, এটি সাধারণ জিনগত ত্রুটিজনিত সমস্যা। আমাদের সমাজে এ ধরেনর মানুষ রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে ‘ট্রু হারমাফ্রোডিটিজম’ বলা হয়। কখনও কখনও ‘ওভোটেস্টিকুলার সিন্ড্রোম’ বলা হয়। এটি একটি ইন্টারসেক্স অবস্থা, যেখানে একজন ব্যক্তি ডিম্বাশয় এবং টেস্টিকুলার টিস্যু নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, জন্মের পরই এ ধরেনর শিশুর চিকিৎসা করা সম্ভব। শিশু হরমন বিভাগ এবং শিশু সার্জারি বিভাগ যৌথভাবে এসব শিশুর চিকিৎসা করে থাকে। প্রথমে শিশুটির হরমন পরীক্ষা করে দেখা হয়, যে তার শরীরে কোন হরমনের প্রভাব বেশি। এক্ষেত্র নারী বা পুরুষ যে হরমনের প্রভাব বেশি থাকে, শিশুটিকে চিকিৎসার মাধ্যমে সেই দিকে পরিবর্তন করা হয়। এদের প্রজনন ক্ষমতা খুবই কম থাকে বা ক্ষেত্রবিশেষ থাকে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানিসক বিকাশজিনত ত্রুটি দেখা যায়। ক্ষেত্রবিশেষ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীও হয় থাকে। যত কম বয়সে চিকিৎসা করা সম্ভব এসব শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার সম্ভাবনা ততোই বেশি। বঙ্গবুন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বড় মেডিকেল কলেজে এই শিশুদের চিকিৎসা করা হয়।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য