অবশেষে আগামী মাস থেকেই সরকারি হাসপাতালে চালু হতে যাচ্ছে বৈকালিক ‘ প্রাইভেট চেম্বার’। এবিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় শুরুতে দেশের ৮৩টি সরকারি হাসপাতালে ‘প্রাইভেট চেম্বার’ চালু করতে চায়। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে এ সেবা চালুর পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়। রোগীপ্রতি চিকিৎসকের সর্বোচ্চ ফি ৩০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
গত ২২ জানুয়ারি ‘প্রাইভেট চেম্বার’ চালুর বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমানকে কমিটির প্রধান করা হয়। প্রথমে ২০ জনকে কমিটির সদস্য করা হয়। পরে আরও ছয়জনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সূত্র জানায়, কমিটি এখন পর্যন্ত দুটি বৈঠক করেছে। ‘প্রাইভেট চেম্বার’ কীভাবে চলবে, তা নিয়ে ‘ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস’ নামের একটি খসড়া নীতিমালা ইতিমধ্যে তৈরি করেছে কমিটি। নীতিমালাটি চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার কমিটির শেষ বৈঠক হবে। বৈঠকে নীতিমালা চূড়ান্ত করে তা মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে।
কমিটির প্রধান সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নীতিমালা চূড়ান্ত করতে আরেকটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। আমরা আশা করছি, মার্চের মধ্যেই সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস চালু সম্ভব হবে।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, অফিস সময়ের পর নিজ কর্মস্থলে চিকিৎসকেরা যে প্রাইভেট চেম্বার করবেন, তার সময় হবে বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা। সেবা পেতে রোগীকে টিকিট কাটতে হবে।
খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকের ফি হবে ৩০০ টাকা। কনিষ্ঠ চিকিৎসকের ফি ১৫০ টাকা। ফি থেকে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক পাবেন ২০০ টাকা। তার সহায়তাকারী পাবেন ৫০ টাকা। বাকি ৫০ টাকা সরকারি তহবিলে জমা পড়বে। ফি থেকে কনিষ্ঠ চিকিৎসক পাবেন ১০০ টাকা। তার সহায়তাকারী পাবেন ২৫ টাকা। বাকি ২৫ টাকা যাবে সরকারি তহবিলে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে উপজেলা পর্যায়ের ৫০টি, জেলা পর্যায়ে ২০টি, বিভাগীয় ৮টি ও বিশেষায়িত ৫টি সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট চেম্বার চালু হবে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল ঠিক করা হবে রোগীর উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে। যেসব হাসপাতালে রোগী বেশি আসেন, সেখানে এ সেবা চালু করা হবে। আগামী আগস্টের মধ্যে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট চেম্বার চালুর পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, কনসালটেশন, ডায়াগনস্টিক, ল্যাবরেটরি, রেডিওলজি, ইমেজিং ও সার্জিক্যাল সেবা দেওয়া হবে।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়, চিকিৎসকেরা পালা করে রোগী দেখবেন। একজন অধ্যাপক সপ্তাহে দুই দিন, সহযোগী অধ্যাপক দুই দিন, সহকারী অধ্যাপক দুই দিন রোগী দেখবেন। চিকিৎসক যদি রোগীকে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেন, রোগী চাইলে তা সরকারি হাসপাতালে করতে পারবেন। আবার বেসরকারি হাসপাতালেও করতে পারবেন।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য