-->
শিরোনাম
অফুরন্ত নিয়ামতপূর্ণ মাস রমজান

যে ১৪ কারণে ভাঙে রোজা

নিজস্ব প্রতিবেদক
যে ১৪ কারণে ভাঙে রোজা

অফুরন্ত নিয়ামতপূর্ণ মাস পবিত্র রমজান। এ রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস। এ মাসকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ১০ দিন রহমত, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত ও তৃতীয় ও শেষ ১০ দিন নাজাতের। পবিত্র এ মাসে মহান আল্লাহ কোরআন নাজিল করেছেন। শবেকদরও পবিত্র রমজান মাসে। জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের মাস রমজান। এ রমজানের পরিপূর্ণ সুফল পেতে হলে চাই পরিপূর্ণ প্রস্তুতি। শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক প্রস্তুতির পাশাপাশি প্রয়োজন রমজানের বিশেষ ইবাদতের প্রস্তুতিও। রমজান ও রোজা, তথা সিয়াম সাধনার বিধিবিধান, নিয়মকানুন, রীতিনীতি, মাসআলা-মাসায়েল ভালোভাবে জেনে আমল করলেই রমজানের পরিপূর্ণ ফজিলত পাওয়া যাবে। তা না হলে রোজা উপবাস ভিন্ন আর কিছুই নয়। সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত রমজানের ইবাদত করার সুযোগ লাভে মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করা।

 

যেসব কারণে রোজা ভাঙে- ১. ইচ্ছাকৃত কিছু খেলে, ২. স্ত্রী সহবাস করলে, ৩. কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে, ৪. ইচ্ছাকৃত মুখভরে বমি করলে, ৫. নাকে বা কানে ওষুধ বা কিছু প্রবেশ করালে, ৬. জোর করে কেউ রোজা ভাঙালে, ৭. ইনজেকশন বা স্যালাইনের মাধ্যমে দেহে ওষুধ পৌঁছালে, ৮. সূর্যাস্ত মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সূর্যাস্ত হয়নি, ৯. পুরো রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে, ১০. দাঁত থেকে ছোলা পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য গিলে ফেললে, ১১. ধূমপান বা আগরবাতি জ্বালিয়ে ধোঁয়া গ্রহণ করলে, ১২. মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে, ১৩. রাত আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর কিছু খেলে ও ১৪. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের জাগনা পেলে।

 

রোজার মাকরুহ হওয়ার কারণ- ১. কোনো জিনিস চিবানো বা চাঁখা, ২. কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে রাখা, ৩. গড়গড়া বা নাকের ভেতর পানি টেনে নিলে। পানি যদি নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে, ৪. ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে গিলে খেলে, ৫. গীবত, গালাগালি ও ঝগড়া-ফাসাদ করলে, ৬. সারা দিন নাপাক অবস্থায় থাকলে, ৭. অস্থিরতা ও কাতরতা প্রকাশ করলে ও ৮. কয়লা, পাউডার, পেস্ট ও মাজন দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে।

 

রমজানে বিশেষ কিছু সুন্নত রয়েছে- ১. রজব ও শাবান মাস থেকে রমজানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা, ২. রজব ও শাবান মাসে অধিক পরিমাণে নফল রোজা রাখা ও নফল নামাজ আদায় করা, ৩. শাবান মাসের চাঁদের তারিখের হিসাব রাখা, ৪. রমজানের চাঁদ দেখা, ৫. সাহরি খাওয়া, ৬. তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা, ৭. ইফতার করা ও করানো, ৮. তারাবির নামাজ আদায় করা, ৯. পবিত্র কোরআন বেশি বেশি তিলাওয়াত করা এবং ১০. ইতিকাফ করা। এছাড়া রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোয় শবেকদরের সন্ধান করা।

 

রমজানে বিশেষ কিছু নফল আমল হলো- পবিত্র কোরআন একাধিকবার খতম করা, কালেমা তৈয়্যেবা অধিক পাঠ করা, দরূদ শরিফ সর্বাধিক পরিমাণে পাঠ করা, তওবা ও ইস্তেগফার করতে থাকা, সর্বদা তসবিহ-তাহলিল ও জিকির-আসকার করতে থাকা, দীনি শিক্ষা ও দীনি দাওয়াতি কাজে মশগুল থাকা, ধর্মীয় বই-পুস্তক, কোরআন তাফসির, হাদিস, ফিকহ ও ইসলামি সাহিত্য নিজে পড়া ও অন্যকে পড়তে সাহায্য করা, দীনি মজলিশ আয়োজন করা, অধীনস্থ কর্মচারী ও শ্রমিকদের কাজের চাপ কমিয়ে দেয়া এবং তাদের পূর্ণ মজুরি ও অতিরিক্ত সম্মানী প্রদান করা, বেশি বেশি দান-খয়রাত করা ইত্যাদি। উল্লেখ্য, হালাল বা বৈধ উপার্জন এবং হালাল রিজিক বা পবিত্র খাদ্য ছাড়া নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ কোনো ইবাদতই মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে কবুল হবে না।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version