-->

সরকারকে মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারকে মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ

শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাবাসের তথ্য গোপন করে ১৯ বছর চাকরি, পদোন্নতি এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা গ্রহণের অভিযোগে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে তিন সচিব, দুই মহাপরিচালকসহ ৮ জনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠেনা হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের এ্যাডভোকেট মো. খবির উদ্দিন ভূইয়া এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।

 

নোটিশে বলা হয়েছে, তথ্য গোপন এবং সরকারকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সুযোগ-সুবিধা আদায় করার অপরাধে ৭ ও ৮ নং নোটিশ গ্রহীতার বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না, তা অত্র লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির দুই সপ্তাহের মধ্যে নোটিশ দাতাকে জানাতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। অন্যথায় এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

যাদের পাঠানো হয়েছে -১. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, ২. স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সচিব এবং ৩. স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ৪. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপিরচালক ৫. স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক, ৬. জাতীয় হদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক, ৭. স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. জামাল এবং ৮. জাতীয় হৃদরোগ ইনষ্টিটিউট ও হাসপাতালের রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতেমা দোজা।

 

লিগ্যাল নোটিশে এ্যাডভোকেট মো. খবির উদ্দিন ভূইয়া উল্লেখ করেন, গত ২২মে সোমবার দৈনিক “আজকের পত্রিকা’য় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে জনস্বার্থে এই লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা যাচ্ছে যে, আপনারা ৭ ও ৮ নং নোটিশ গ্রহীতা শিশু গৃহকর্মীকে গুরুতর দগ্ধ করে গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাস করেছিলেন। ফৌজদারী মামলা ও কারাবাসের তথ্য কর্তৃপক্ষকে জানানোর বিধান থাকলেও উক্ত তথ্য লুকিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর কারাবাসের দিনগুলো ব্যক্তিগত, পারিবারিক কারণে কর্মস্থলে অনুপস্থিত দেখিয়ে অর্জিত ছুটি মঞ্জুর করান। অতপর ১৯ বছর কর্মরত থেকে দফায় দফায় পদোন্নতি এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধার গ্রহণ করেন।

 

সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী আপনি ৭ নং নোটিশ গ্রহীতা এবং মামলার ২ নং আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির দিন পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত হিসেবে থাকার কথা এবং সেই সময়ে আপনার শুধু খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য। ফৌজদারী মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাসের তথ্য গোপন করায় আপনি কখনোই সাময়িক বরখাস্ত হননি এবং সম্পুর্ণ বেতনভাতা নিয়েছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফৌজদারী মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাসের তথ্য লুকিয়ে আপনি ১৯ বছরে পর্যায়ক্রমে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন এবং গত ১ জানুয়ারি থেকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (চিকিৎসা শিক্ষা) দায়িত্ব পালন করছেন ।

 

সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী আপনি ৮ নং নোটিশ গ্রহীতা এবং মামলার ১ নং আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকে মামলার চুড়ান্ত নিষ্পত্তির দিন পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত হিসেবে থাকার কথা এবং সেই সময়ে আপনার শুধু খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য। ফৌজদারী মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাসের তথ্য গোপন করায় আপনি কখনোই সাময়িক বরখাস্ত হননি এবং সম্পুর্ণ বেতনভাতা নিয়েছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফৌজদারী মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাসের তথ্য লুকিয়ে আপনি ১৯ বছরে পর্যায়ক্রমে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন দায়িত্ব পালন করছেন।

 

উপরোক্ত ৭ ও ৮ নং নোটিশ গ্রহীতা দুটি গর্হিত অপরাধ করেছেন। একটি হলো তথ্য গোপন এবং অন্যটি সরকারকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সুযোগ-সুবিধা আদায় করা। এই অপরাধের জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও দন্ড হওয়া প্রয়োজনীতা থাকা সত্তেও আপনারা ১ থেকে ৬ নং নোটিশ গ্রহীতা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। তাদের উপরোক্ত অপরাধমূলক কর্মকান্ড এবং তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করাটা সরকারি কর্মচারী বিধিমালা লঙ্ঘন এবং জনস্বার্থবিরোধী। তারা সরকারী চাকরি করার যোগ্যতা হারিয়েছেন এবং যে বেতনভাতা গ্রহণ করছেন তা জনগণের অর্থ আত্মসাতের শামিল। সুতরাং জনস্বার্থে অত্র লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হলো।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version