স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, "দেশের সব সরকারি হাসপাতালের নার্সদের ঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের নিজ নিজ কাজে অবহেলার জন্যই হাসপাতাল পরিপূর্ণ পরিচ্ছন্ন হচ্ছে না, রোগীদের সাথে থাকা লোকদের ভির থামানো যাচ্ছে না, দালালদের দৌড়াত্ব কমানো যাচ্ছে না। এর ফলে, হাসপাতালের সেবার মানও কাঙ্খিত পর্যায়ে নেয়া যাচ্ছে না।
সরকারি হাসপাতালগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রতিটি রোগীর সাথে তিন থেকে পাঁচ জন করে ভিজিটর দিনের বেলা এমনকি রাতেও হাসপাতালে অবস্থান করে থাকে। এতে হাসপাতালে মূল রোগীদের সেবা পাওয়া বিঘ্নিত হয়। এর মানে হচ্ছে, হাসপাতালের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী ও নার্সদের ঠিকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না। এজন্যই রোগীরা সাথে করে একাধিক এটেন্ডেন্টস আনছেন ও রাখছেন। সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষজন কাঙ্খিত সরকারি সেবা পাবে না, এটা চলতে পারে না। হাসপাতালে যার যা ডিউটি তাকে সেটিই করতে হবে। তা না হলে নির্দিষ্ট হাসপাতালের দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।"
আজ (৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীস্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে দেশের সকল জেলার সিভিল সার্জন ও হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কদের সাথে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক একটি বিশেষ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মশালায় উপস্থিত জেলার সিভিল সার্জন্স, হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ও বিভাগীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।
হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখতেই হবে রোগী কম বা বেশি যাই থাকুক। দেশের সব সরকারি হাসপাতালে সেবামূলক কাজের মান আরো কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, কীভাবে হাসপাতালগুলো মানসম্পন্ন ও পরিচ্ছন্ন রাখা যায়, কর্মচারী ও নার্সদের ডিউটি বাড়িয়ে দিয়ে কীভাবে রোগীর সাথে অতিরিক্ত ভিজিটর কমানো যায়, নার্স ও ডাক্তারদের চলমান ডিউটি কতটা কার্যকর হচ্ছে ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরে কর্মশালায় উপস্থিত ও জুম লাইভে যুক্ত কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক, এমপি।
দেশের মানুষের সেবা মান বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, প্রতিদিন সারাদেশে অন্তত ১০ লক্ষ সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে আসে। ১০ লক্ষ মানুষকে সেবা দেবার জন্য সরকারি হাসপাতালও করা হয়েছে জেলা শহর থেকে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ে। লোকবল আমাদের ঘাটতি আছে ঠিকই, তবে আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে সেটি দিয়েই দেশের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। এজন্যই যারা যারা হাসপাতালে কর্মরত আছে তাদেরকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।
দেশের মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে প্রশংসার পাশাপাশি অভিযোগও নিয়মিতই করছে। এই অভিযোগগুলো সব সত্যি না হলেও কিছু তো সত্যি। সরকারি সেবা পাওয়ার ঘাটতি নিয়ে মানুষের অভিযোগগুলোকে আমাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলোকে পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি দেশের সব সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবামূলক কাজের মান বাড়াতেই হবে। স্বাস্থ্যখাতে বাজেট যতটুকুই বাড়ুক, বাড়ানো হয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষ সঠিক সেবা পাবে বলেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্বাস্থ্যখাতের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবায় অবহেলা কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড মুহ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) নাজমুল হক খান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক পরিকল্পনা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সিভিল সার্জন্স ও হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কগণ উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য