-->
শিরোনাম

আলাদা হল পেটে-বুকে জোড়া লাগানো শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক
আলাদা হল পেটে-বুকে জোড়া লাগানো শিশু

পেটে ও বুকে জোড়া লাগানো ৭৮ দিন বয়সী শিশুদের দেহে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়েছে। যাদের লিভার ও বুকের হাড় সংযুক্ত ছিল। পোস্ট অপারেটিভে এ দুজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদলের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছে। শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত সংকটমুক্ত।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থায়নে বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকের অপারেশন থিয়েটারে এ অস্ত্রোপচার করা হয়।

 

তাদের একজনের নাম আবু বকর, আরেকজন ওমর ফারুক। অস্ত্রোপচারের আগে বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ অস্ত্রোপচারের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল, শিশুদের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন এবং শিশু দুজনের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

 

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভ্যানচালক পিতা শহর আলী খানের মেয়ে চায়না বেগম এবং তার স্বামী আল আমিন শেখের ঘরে চলতি বছর ৪ জুলাই পেটে জোড়া লাগা দুজন নবজাতক জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পর ৫ জুলাই তাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম জাহিদ হোসেনের অধীনে ২০১ নং কেবিনে ভর্তি করা হয়।

 

পেটে জোড়া লাগানো যমজ এ দু’নবজাতকের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্বভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল আবু বকর ও ওমর ফারুকের নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় তাদের শরীরে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন।

 

এই অস্ত্রোপচারে শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. কে.এম. সাইফুল ইসলাম, মেডিক্যাল অফিসার ডা. উম্মে হাবিবা দিলশান মুনমুন এবং নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, এনেসথিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বণিক এবং নার্সিং ইনচার্জ মেহেরুন্নেসাসহ অন্যান্য চিকিৎসকগণ এ জটিল অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন।

 

আবু বকর ও ওমর ফারুকের লিভার ও বুকের হাড় সংযুক্ত ছিল। পোস্ট অপারেটিভে এ দুজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদলের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এ শিশু দুজনের শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত সংকটমুক্ত। শিশু দুজনের মাতা-পিতা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল তাদের পূর্ণ সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

 

জটিল এই অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ অস্ত্রোপচার সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও নার্সদের ধন্যবাদ দেন।

 

তিনি বলেন, আমাদের দেশের সার্জনরা এ ধরণের জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে সক্ষম এবং এরকম জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমনের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। স্বল্প খরচে দেশের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধাতেই বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব।

মন্তব্য

Beta version