মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তিকে সর্বাধুনিক দাবি আসলেও ট্রেড ভিশনের দেওয়া দুই হাসপাতালের মেশিন ঘটেছে আগুন লাগার ঘটনা। হাসপাতাল দুটির একটি দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা ও গবেষণা কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যটি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- ট্রেড ভিশন সর্বাধুনিক দাবি করে আসলেও তাদের সরবরাহ করা মেশিনে নেই পানির কোনো ব্যবস্থা। হাসপাতালে মত স্পর্শকাতর স্থানে এ ধরনের মেশিন, চিকিৎসা নিয়ে আসা রোগীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন- যে কোনো সময়েই এই মেশিনে আগুনে রোগীদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ঘটতে পারে প্রাণহানীও।
সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানীর জনবহুল এলাকায় অবস্থিত দুটি হাসপাতাল। একটি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউট ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। কেননা এসব জায়গায় আগুন লাগলে সেই আগুনে পুড়তে পারে হাসপাতালের আশপাশের আরো অনেক স্থাপনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- গত ১৫ অক্টোবর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঘরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর দিন ১৬ অক্টোবর আগুন লাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ের আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঘরে। এঘটনা চাপা দেওয়ার জন্য বেশ তৎপরতা চালায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেড ভিশন।
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয় সেই সময়। যে জায়গায় আগুন লেগেছে সেখানে বড় মাইক্রোওয়েভ মেশিন দিয়ে মেডিকেল বর্জ্য পোড়ানো হয়। তিনি বলেন, দেরিতে পৌছালে বা আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে বড় ধরনের ঝুকি তৈরি হতো মাইক্রোওয়েভ মেশিনে। এ মেশিনে পানির ব্যবস্থা না থাকায় বড় ঝুকি তৈরি করতে পারতো। হাসপাতালের মত স্পর্শকাতর স্থানে এরকম মেশিনের বর্জ্য বার্ন করা হয়, অথচ পানির ব্যবস্থা নেই। এটা খুবই দুঃখজনক।
এরই মধ্যে আগুন লাগে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক প্রযুক্তি মাইক্রোওয়েভেও, সেখানে অল্পের জন্য রক্ষা পায় হাসপাতালটি।
এসব প্রযুক্তি দেশে এনে, হাসপাতালে সরবরাহ করেছে ট্রেড ভিশন গ্রুপ। পরপর দুটি হাসপাতালের মেশিনে আগুন লাগায় প্রশ্ন উঠেছে এই মেশিন নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে ট্রেড ভিশনের দায় নিয়ে।
বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, এমন প্রযুক্তি আমদানি করার যৌক্তিকতা নিয়েও। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করে এমন একজন জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলছেন, মাইক্রোওয়েভে থাকে না পানি। তাই আগুন লাগলে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন। এরচেয়ে অটোক্লেভ প্রযুক্তি বাংলাদেশের পরিবেশ বিবেচনায় উত্তম ।
আগামী বাজাটে এমন প্রযুক্তি আমদানি না করার জোর দাবীও জানান বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য দুই দফায় ফোন দেয়া হয় ট্রেড ভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল হাসানকে। বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য