-->

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল ইথিক্স ও লিগ্যাল ইস্যুজ সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল ইথিক্স ও লিগ্যাল ইস্যুজ সেমিনার অনুষ্ঠিত
  • অপ্রয়োজনীয় টেস্ট ও অপারেশন করা যাবে না : উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক
  • ডিববা প্র্যাকটিস দমন করা হবে
  • রোগীদের সাথে সুসম্পর্কের মাধ্যমে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক বলেছেন, রোগীদের সাথে সুস্পর্ক করতে হবে। প্রথম রোগী থেকে শুরু করে শেষ রোগী পর্যন্ত সমানভাবে যথাযথ সময় দিতে হবে। রোগীদের গোপনীয় বিষয় রক্ষা করাসহ রোগীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রোগীদের বিশ্বাস অর্জন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে এটা ম্লান হয়ে গেছে। তাই রোগীদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে গুরুত্ব দিতে হবে। কখনই রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার করা যাবে না।

রোববার (৭ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লক অডিটোরিয়ামে মেডিক্যাল ইথিক্স ও লিগ্যাল ইস্যুজ নিয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, চিকিৎসাসেবা এবং চিকিৎসকদের জন্য মেডিক্যাল ইথিক্স ও লিগ্যাল ইস্যুজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত ধারণা থাকা আবশ্যক। বর্তমানে দেখা যায় কোনো কোনো চিকিৎসক রোগীদেরকে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দেন। এই টেস্টের পরীক্ষা মূল্য থেকে একটা কমিশন পায়। এটা যেনো না হয়। আমি আমার চল্লিশ বছরের চিকিৎসা পেশায় কোনোদিন রোগীদেরকে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দেইনি। টেস্টের বিনিময়ে কোনো ধরণের কমিশন নেওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। কোনো কোনো সার্জন প্রয়োজন ছাড়াই রোগীদেরকে অপারেশন করেন। এটাও বন্ধ করতে হবে। অপারেশন থিয়েটারে অপ্রয়োজনে অনেক ওষুধ লেখা হয়, পরবর্তীতে আবার ফার্মেসিতে সে সব ওষুধ বিক্রি করা হয়। অপ্রয়োজনে অনেক সার্জিক্যাল আইটেম রোগীর স্বজনকে দিয়ে কেনা হয় এবং পরবর্তীতে তা বিক্রি করা হয়। এসব পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি, হৃদরোগের চিকিৎসায় হার্টে রিং পড়ানো নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে। কোনো কোনো চিকিৎসক আবার রোগীদেরকে অপ্রয়োজনীয় দামী ওষুধ দিয়ে থাকেন। যাকে মানুষ ডিববা প্র্যাকটিস বলে থাকে, এই ধরণের ডিববা প্রাকটিস দমন করা হবে।

তিনি বলেন, রোগীদের অনেক সেনসেটিভ বিষয় মেডিক্যাল ইথিক্স এর সাথে জড়িত, তাই এ বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকলে সেসব বিষয়ে যথাযথভাবে মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ে। চিকিৎসা পেশায় পেশাগত স্বচ্ছতা থাকতে হবে। শিক্ষক হিসেবে সকল ছাত্র ছাত্রীর প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সংক্ষুব্ধ রোগীরা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিএমডিসি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমনকি আদালতেও অভিযোগ দায়ের করছেন। একজন অভিযুক্ত চিকিৎসককে চারদিক থেকে আক্রমণ করা হয়। কিন্তু এধরণের প্রায় সব বিষয়ই শুধুমাত্র বিএমডিসির মাধ্যমেই সমানধান করা সম্ভব। এ বিষয়টি নিয়েও ভাববার সময় এসেছে। 

অন্য বক্তারা বলেন, কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটা নিষ্পত্তির সম্পূর্ণ দায়িত্ব ও ক্ষমতা বিএমডিসিকে দিতে হবে। কোনো অভিযোগ আদালত পর্যন্ত যাবে কিনা সেটা নির্ধারণ করবে বিএমডিসি।

অফথালমোলজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ (ওএসবি) এর ইথিক্স এন্ড প্রফেশনালিজম সাব-কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউ এর সাবেক ডিন ও বিএমডিসির ইসি মেম্বার অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান ও বিএসএমএমইউর ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ডা. সায়েদুর রহমান। ওএসবি এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন অধ্যাপক ডা. মো. লিয়াকত হোসেন ও অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন সংশ্লিষ্ট কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আনিসুর রহমান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ওএসবি মহাসচিব অধ্যাপক ডা. দীপক কুমার নাগ। সঞ্চালনা করেন ওএসবি এর ইথিক্স এন্ড প্রফেশনালিজম সাব-কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মো. বজলুল বারী ভূঁইয়া।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version