রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা পর গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ফেরি চলাচল শুরু হয়। ফলে ঘাট এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সারারাত শীতে দুর্ভোগের শিকার হন দুপারে অপেক্ষারত চালক ও যাত্রীরা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১২টা থেকে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়ায় নৌদুর্ঘটনা এড়াতে রাত ২টা থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি, লঞ্চসহ সব নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কুয়াশার ঘনত্ব কমে গেলে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় পুনরায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় যাত্রীবাহী পরিবহন ও পণ্যবাহী ট্রাকের সারি রয়েছে। ঘাট থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মাহাসড়কে আরও তিন কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক। রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকার পর থেকেই দুর্ভোগে রয়েছে চালক ও যাত্রীরা।
বেনাপোল থেকে বাসে করে ঢাকায় আসছিলেন রাকিবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘রাত সোয়া ১টার সময় ঘাটে এসেছি। রাত দেড়টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে বাসে বসে আছি। শীতে কত কষ্ট হচ্ছে সেটা বলার মতো নয়।’
শিলা খাতুন নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘দুর্ভোগের শেষ নেই। সারারাত বসে আছি। ভোর ৬টায় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু ফেরি বন্ধ থাকায় দুপুর ১টায়ও পৌঁছাতে পারব কিনা জানি না। সেই সঙ্গে ঘাট এলাকায় শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।’
আরেক যাত্রী রহিম বাদশা বলেন, ‘যেমন শীত, তেমন বাতাস। সারারাত খুবই কষ্ট হইছে। রাত থেকে বসে আছি কখন কুয়াশা কাটবে জানি না।’
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন জানান, রাত দেড়টার সময় কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে নদীপথ দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যায়। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। যে কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় কুয়াশা কেটে গেলে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয় ।