logo
আপডেট : ৫ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:২১
ইউপি নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে সহিংসতায় নিহত ৬
কান্ট্রি ডেস্ক

ইউপি নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে সহিংসতায় নিহত ৬

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিশের গাড়িতে আগুন। ছবি: ভোরের আকাশ

বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ ও ছয় প্রাণহানির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোট। এ ধাপে গতকাল বুধবার ভোট হয়েছে দেশের ৭০৮টি ইউপিতে। ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টার পর থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আসতে থাকে সংঘর্ষের খবর।

মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া ও চাঁদপুরে ভোটের সময় সহিংসতায় ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সবশেষ দুজনের প্রাণহানির খবর এসেছে চাঁদপুর থেকে। জেলার কচুয়া ও হাইমচরের দুই কেন্দ্রে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ওই দুজন। চাঁদপুর পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, দুপুরের দিকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের বাহেরচর এলাকায় এবং কচুয়া উপজেলার সাচার ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটেছে।

কচুয়ায় নিহত যুবকের নাম শরীফ হোসেন। তিনি স্থানীয় হাতিরবন্ধ গ্রামের বাসিন্দা। দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। সেখান থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

তবে হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নে একটি কেন্দ্রে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়েছে বলে জানান এসপি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই যুবক বহিরাগত।

গাইবান্ধায় গলাকেটে হত্যা

গাইবান্ধার সাঘাটায় একটি কেন্দ্রের পাশে মেম্বার প্রার্থীর সমর্থককে হাঁসুয়া দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাঘাটা উপজেলার জুম্মাবাড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জুম্মাবাড়ি আদর্শ কলেজ কেন্দ্রের বাইরে বুধবার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম আবু তাহের। তার বাড়ি ওই ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামে। ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) ইলিয়াস জিকো।

নিহতের বাবা ওমর আলী জানান, ভোট চলাকালে কেন্দ্রের বাইরে মেম্বার প্রার্থী আইজল মিয়ার সমর্থক আবু তাহেরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী রাসেল আহমেদের সমর্থকদের তর্ক হয়। একপর্যায়ে আবু তাহেরকে একা পেয়ে রাসেলের সমর্থকরা তাকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।

ওমর আরো জানান, স্থানীয়রা রাসেলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে গেলে পথেই তার মৃত্যু হয়। মরদেহ পরে রাস্তা থেকেই ফিরিয়ে ঘটনাস্থলে নেওয়া হয়েছে।

সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‘আমার জানা মতে জুম্মারবাড়ির একটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনি সহিংসতায় আবু তাহের নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

জুম্মাবাড়ির আরেক কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুই মেম্বার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় দুই প্রার্থীসহ তিনজন আহত হন। ঘটনার পর থেকে কেন্দ্রটিতে ভোট বন্ধ থাকে। সাঘাটার জুম্মাবাড়ি ইউনিয়নের দহিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আসাদুজ্জামান মিলন জানান, ভোট চলাকালে মেম্বার প্রার্থী আবদুল গণি ও তার কর্মীরা কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। সে সময় প্রতিদ্বন্দ্বী জাহাঙ্গীর কবীরের সমর্থকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৬ ইউপিতে এবার ভোট হয়েছে।

বগুড়ায় কুপিয়ে হত্যা

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি কেন্দ্রে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে জাকির হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রামেশ্বরপুর জাইগুনি গ্রামে দুপুরে এ সংঘর্ষ হয়। সে সময় আহত জাকিরকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ৩৫ বছরের জাকিরের বাড়ি গাবতলীর রামেশ্বরপুর গ্রামে। তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন গাবতলী মডেল থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম। পঞ্চম ধাপে গাবতলীর ৯টি ইউনিয়নে হয়েছে ভোট।

মানিকগঞ্জে নারীর মৃত্যু

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের বাঁচামারা ইউনিয়নের বাঁচামারা ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ওই কেন্দ্রে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ৫০ বছর বয়সী ওই নারীর নাম ছলেমন খাতুন। তার বাড়ি বাঁচামারা গ্রামে। শিবালয় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানা ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে ওই কেন্দ্রে সংঘর্ষ বাধে। এর মধ্যে পড়ে ওই নারী প্রাণ হারান। তবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন, কোনোভাবে আঘাত পেয়েছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মরদেহ সদর হাসপাতালে নিয়ে ময়নাতদন্ত করা হবে। তবে সংঘর্ষ হলেও ওই কেন্দ্রে ভোট হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই।

হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের কামারঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হওয়ায় দুপুরে এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল ভোট। প্রিসাইডিং অফিসার নিগার সুলতানা চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ও হরিরামপুর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে হয়েছে ভোট।

চট্টগ্রামে প্রার্থীর সমর্থকের মৃত্যু

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকের হামলায় আরেক প্রার্থীর সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিংহরা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম অংকর দত্ত। তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী টিউবওয়েল প্রতীকের সমর্থক বলে জানা গেছে।

অংকরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাতরী ইউনিয়নে নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঘটনা ভোটকেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে হয়েছে। এখনো বিস্তারিত জানি না। যতটুকু জেনেছি, আপেল প্রতীকের সমর্থকদের হামলায় তিনি আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

হাসপাতালের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘অংকর দত্ত নামের ওই ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার শরীরে বড় কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। স্বজনরা প্রতিপক্ষের কিল-ঘুষিতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছেন।’

মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন এএসআই।

জেলার বোয়ালখালী উপজেলার দক্ষিণ করলডেঙ্গা ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে সংঘর্ষে এক ইউপি সদস্য প্রার্থী আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। দক্ষিণ করোলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই প্রার্থীর নাম মহরম আলী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালখালী থানার এসআই আলাউদ্দিন জানান, মহরম আলীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা এএসআই আলাউদ্দিন জানান, মহরমের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে প্রথমে শোনা গেলেও শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

আহলা করোলডাঙ্গা ইউনিয়নের লুদি শিকদারপাড়া এলাকায় বুধবার সকাল ৭টার দিকে নৌকা ও বিএনপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুরুতর আহত একজনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার নাম আবদুল্লাহ আল হারুণ রিপন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় রিপনের মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। এ ঘটনায় আরো কয়েকজন আহত হয়ে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।’ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, বোয়ালখালী ও আনোয়ারার ২৪ ইউপিতে হয়েছে ভোট।

শরীয়তপুরে ককটেল বিস্ফোরণ

শরীয়তপুরের নড়িয়ার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংবাদমাধ্যম কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

ওই কেন্দ্রের ব্যালটবাক্স ছিনতাই করা হয়। আগুন দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের বাইরে থাকা সংবাদমাধ্যম কর্মীদের মোটরসাইকেলে। নারী আনসার সদস্যদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

তবে হামলাকারীরা কারা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল ইসলাম শিকদার অভিযোগ করেছেন, চশমার প্রার্থী দেলওয়ার হোসেন ব্যাপারীর সমর্থকরাই এ হামলা চালিয়েছেন।

২২ নং দুলুখণ্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আবদুল ওয়াদুদ এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

তিনি আরো জানান, পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা হামলাকারীদের প্রতিহত করতে ফাঁকা গুলি করে, তবে তারা পিছু না হটায় একপর্যায়ে গুলি শেষ হয়ে যায়। তখন হামলাকারীরা কেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়।

জামালপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী গুলিবিদ্ধ, পুলিশ আহত

জামালপুরের বকশীগঞ্জের মেরুরচর ইউনিয়নের হাছেন আলী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি এবং গোলাগুলিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় পুলিশসহ আহত হয়েছেন ৯ জন। এ ঘটনার পর স্থগিত করা হয়েছে কেন্দ্রটি। গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তার পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আতাউর রহমান ঘটনাটি জানিয়েছেন।

তিনি জানান, সংঘর্ষে দেওয়া আগুনে পুলিশের একটি পিকআপ ও তিনটি মোটরসাইকেল পুড়েছে। আনসারদের বহন করা একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভোটকেন্দ্রসহ আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ভোটারসহ আহত সাধারণ লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন বকশীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম সম্রাট, ওসি (তদন্ত) আবদুর রহিম, কনস্টেবল আবদুল আলিম, মো. শাহজাহান, আবদুল মজিদ ও আনসার সদস্য আবদুল আলিম।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জালভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুপুর ১২টার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোয়ার হোসেন হকের এজেন্টদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ খবর বাইরে ছড়িয়ে পড়লে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষ জড়ায় তাদের কর্মীরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জানিয়েছেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভোলায় সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ

ভোলা সদরের পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘার হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র দখল নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। দুপুরে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর কেন্দ্রটিতে ভোট নেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিমরান মোহাম্মাদ সায়েক এ ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

গাজীপুরে ব্যালট পেপার ছিনতাই

ব্যালট পেপার ছিনতাই ও দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় গাজীপুরের কাওরাইদ ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে দেড় ঘণ্টা ভোট বন্ধ ছিল। এ সময় কেন্দ্রের বুথ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়।

৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাওরাইদ মাধ্যমিক বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর ১টার দিকে ভোট ফের শুরু হয়। এ ঘটনায় সাধারণ ভোটাররা ভোট স্থগিত চেয়ে বিক্ষোভও করেন। পরে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

গাজীপুর জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না রহমান যুথী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেসব ব্যালট পেপারে সিল দিয়ে বক্সে ঢোকানো হয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব। কারণ সেগুলোর পেছনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষর বা সিল নেই। এসব ব্যালট বাতিল করা হবে।’

বুধবার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলেছে পঞ্চম ধাপের ৭০৮টি ইউপির ভোট। এর মধ্যে ৪০টিতে ভোট হয়েছে ইভিএমে; বাকিগুলোতে ব্যালটে।

নির্বাচন কমিশন জানায়, তিনটি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৩৬ হাজার ৪৫৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আছেন ৩ হাজার ২৭৪, সংরক্ষিত আসনে ৭ হাজার ৯৫০ ও সাধারণ সদস্য পদে ২৫ হাজার ২৩৩ জন। তবে ৭০৮ ইউপির মধ্যে বিভিন্ন পদে আগেই ১৯৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান পদের ৪৮, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদের ৩৩ ও সাধারণ সদস্য পদের ১১২ জন।