দেশে ডিজিটাল সার্ভে চলছে। এই সার্ভে শেষ হওয়ার পর আর কোনো জরিপের (সার্ভে) প্রয়োজন নেই। বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ভূমি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ডাকযোগে ভূমিসেবা, ভূমিসেবায় ডিজিটাল পেমেন্ট এবং কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিসেবা’বিষয়ক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের পর প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন তিনি।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে’সম্পন্ন হয়ে গেলে নতুন ভূমি কিংবা জেগে ওঠা চর ছাড়া পরবর্তীতে আর ভূমি জরিপের প্রয়োজন হবে না। জরিপ বলতে তিনি ক্যাডাস্ট্রাল জরিপের কথা উল্লেখ করে আরও বলেন, ভূমি হাত বদলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খতিয়ান ও ম্যাপ প্রস্তুত হয়ে যাবে, ফলে যুগ যুগ ধরে জরিপের হয়রানি থেকে দেশের মানুষ রক্ষা পাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন এমপি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য ডোমেইন বিশেষজ্ঞ সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
পটুয়াখালী ও বরগুনায় ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে’ শুরু উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভূমি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ জনসেবা পদক পেয়েছে উল্লেখ করে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এতে প্রমাণিত হয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় আজ সরকারের অন্যতম উন্নয়ন ও গতিশীল মন্ত্রণালয়। ভূমি মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভূমিসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছতে পারাই আমাদের লক্ষ্য।
ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশন ছাড়াও আইন ও বিধি সংশোধন হচ্ছে বলে জানান ভূমিমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, হাট ও বাজার আইনের আওতায় ভূমিগুলোতে স্থানীয় পৌরসভার সাথে যৌথভাবে উন্নয়ন কাজ করা হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এখন থেকে ১৬১২২ নম্বরে ফোন করেই খতিয়ান ও ম্যাপের আবেদন করতে পারবেন ভূমি মালিক। এছাড়া জমির মালিক খতিয়ান ও নামজারি ফি এবং ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে প্রদান করতে পারবে। সেই সাথে ডাকযোগে খতিয়ান (পর্চা)/জমির ম্যাপ নিজ ঠিকানায় নিতে পারবেন।
আরও বলা হয়, যেসব সেবা চালু করা হচ্ছে সেগুলোর বাস্তবায়নের ফলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারী দ্বারা ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ হ্রাস পাবে এবং ই-পর্চা, ই-রেজিস্ট্রেশন, এলডি ট্যাক্স সিস্টেম, ভার্চুয়াল শুনানি সিস্টেমের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন হবে।
এছাড়া, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে তাৎক্ষনিক ফি জমা প্রদান করার সুযোগ এবং ভূমি অফিসে না গিয়েই অনলাইনে ডিসিআর সংগ্রহ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে মানুষের অর্থ-খরচ ও ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব হবে।
ভূমিসচিব জানান, ইতোমধ্যে ৩ কোটি ৪০ লাখ হোল্ডিং নিবন্ধিত হয়েছে। প্রায় দেড় কোটি মানুষ অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং ১২ কোটি টাকা ভূমি উন্নয়ন কর হিসেবে আদায় হয়েছে। ১ লাখ ৩৯ হাজার মৌজা ম্যাপ ডিজিটালাইজেশন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ কোটি ১২ লাখ ডেটা (তথ্য) ডিজিটাল রেকর্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে। ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ ও মালিকানার তথ্য আত্মীকরণ করা হবে।
অনুষ্ঠানস্থলে দুইজন নাগরিক সরাসরি ভূমি সেবা গ্রহণ করেন। একজন ১৬১২২ নম্বরে কল করে খতিয়ান এবং ইউডিসি-এর মাধ্যমে এবং অপরজন জমির মৌজা ম্যাপের আবেদন করেন। বাসস