করোনা মহামারির সময়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদ দ্বিগুণ হয়েছে; অন্যদিকে অর্থনৈতিক অসমতার কারণে বিশ্বব্যাপী দিনে ২১ হাজার ৩০০ মানুষ মারা যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে। সম্প্রতি প্রকাশিত অক্সফামের ইন-ইকোয়েরিটি কিলস প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে প্রচলিত বিশ্ব অর্থনৈতিক অসমতা সবচেয়ে গরিব দেশ ও জনগণের ওপর এক প্রকার অর্থনৈতিক সন্ত্রাস।
উন্নয়ন সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, লাখ লাখ লোককে বাঁচানো যেত, যদি তাদের ভ্যাকসিন দেওয়া যেত। কিন্তু, বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো একচেটিয়া ব্যবসা করার জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে রাজি না হওয়ায় গরিব মানুষগুলো করোনার ভ্যাকসিন না পেয়েই মারা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের এক বিলিয়ন নারী-পুরুষের চেয়ে ২৫২ জন ধনী পুরুষের হাতে বেশি সম্পদ আছে। শীর্ষ ১০ ধনীর হাতে বিশ্বের ৩.১ বিলিয়ন জনগণের সম্মিলিত সম্পদের চেয়েও বেশি সম্পদ আছে। শীর্ষ ধনীরা যখন আরো সম্পদের মালিক হচ্ছেন, তখন বাকি ৯৯ শতাংশ লোকজনের আয় কমছে।
অক্সফামের গবেষণা প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়, উচ্চ আয়ের দেশগুলোর জনগণের তুলনায় নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশের জনগণ করোনার কারণে দ্বিগুণ মারা যাবে। কিছু গরিব দেশে এই মৃত্যুর হার হতে পারে ধনী দেশগুলোর তুলনায় চারগুণ। করোনার কারণে এই গরিব দেশগুলোর অনেকেই চাকরি হারিয়েছে।
অক্সফামের মতে, উচ্চ আয়ের দেশগুলোর সরকার চাইলে এ অর্থনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারে এবং সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।
প্রতিবেদনে ধনীদেশগুলোর সরকারগুলোর উদ্দেশে বলা হয়, করোনা মহামারির সময়ে সম্পদ বাড়া অতি ধনীদের ওপর একবার উচ্চহারে কর আরোপ করা হবে সবচেয়ে ভালো পন্থা। এই উপায়ে ৮১২ বিলিয়ন ডলার জোগাড় করা যাবে। এই অর্থ গরিব দেশগুলোর মানুষের ভ্যাকসিন কেনার জন্য ব্যয় করা যেতে পারে। আলজাজিরা