টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে আসা ছাত্রীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছে। এতে প্রতিবাদ করায় বহিরাগতদের হামলায় পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের ওপর বোরহান (১৯) ও শাকিবের (১৮) নেতৃত্বে একদল বহিরাগত হামলা চালায়।
জানা যায়, সারাদেশের মতো ভূঞাপুরেও শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। উপজেলার বলরামপুর উচ্চবিদ্যালয়, টেপিবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়, তালুকদার সিরাজ আলী উচ্চবিদ্যালয়, ফকির মাইন উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়, খন্দকার কুলসুম জামান উচ্চবিদ্যালয়, ভদ্রশিমুল উচ্চবিদ্যালয়, গোবিন্দপুর উচ্চবিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপজেলা পরিষদ হলরুমে টিকা দেওয়া হয়।
এর আগে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধু ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা লাইনে দাঁড়ায়। দাঁড়ানো অবস্থায় ক্যান্টনমেন্টের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আনার খাঁপাড়ার মর্তুজ আলীর ছেলে বোরহান ও ছাব্বিশা গ্রামের শাকিব। এতে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করে। পরে ওই দুই বহিরাগত ফোন করে কিছু লোক এনে শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়। হামলায় বঙ্গবন্ধু ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. আবদুল কাউয়ুম বলেন, ‘উপজেলার ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে।’
ভূঞাপুর থানার এসআই ফাহিম ফয়সাল বলেন, ‘মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করা হয়। এর আগে বহিরাগত বোরহান ও শাকিব শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বলে জানা গেছে। আমরা ঘটনাস্থলে হামলায় আহত দুজন শিক্ষার্থীকে পাই। শাকিবের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মনির সিদ্দিকী বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহীনুর ইসলাম বলেন, ‘টিকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বহিরাগতদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছিল। পরে প্রশাসনের সহযোগিতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, ‘টিকা নিতে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। বহিরাগতদের সঙ্গে ঘটনা ঘটেছে কিনা সেটা আমার জানা নেই।’