logo
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১২:০৯
এক গাছেই ৪০ কেজি কমলা
শরিফুল ইসলাম, নীলফামারী

এক গাছেই ৪০ কেজি কমলা

বাগান মালিক লেবু মিয়া

গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে দার্জিলিংয়ের সাদকি জাতের পাকা কমলা। তিন থেকে সাড়ে তিন বছর বয়সী একটি গাছে কমলা ধরেছে অনন্ত ৪০ কেজি, যা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাগানেই। আর এসব কমলা আকারেও বেশ বড়, রসালো ও মিষ্টি।

নীলফামারী জেলা সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের কচুকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে রয়েছে ‘এ আর মামুন নার্সারি’। ওই নার্সারির একটি অংশে গড়ে তোলা হয়েছে কমলার বাগান। সে বাগানে শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় পরিপূর্ণ এসব পাকা কমলা।

বাগানটি স্থানীয় লেবু মিয়ার। ২০১৩ সালে দার্জিলিং থেকে দুটি সাদকি জাতের কমলার চারা এনে রোপণ করেন তিনি। পর্যায়ক্রমে সেখান থেকে চারার সংখ্যা বাড়ান। এখন পরিপূর্ণ ফল পেতে শুরু করেছেন ৬০টি গাছের। আরও একটি অংশে নতুন করে রোপণ করেছেন ৬শ চারা। বর্তমানে বাগানে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৩০ হাজার সাদকির চারা।

জানা গেছে, এই বাগান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাদকি কমলার চারা পাঠানো হচ্ছে। বাস-ট্রেন, এমনকি কুরিয়ারেও পাঠানো হচ্ছে চারা।
শুধু সাদকি কমলাই নয়, লেবু মিয়ার বাগানের চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে চায়না কমলা, সাউথ আফ্রিকান মাল্টা, ভিয়েতনাম মাল্টা, বারি মাল্টা, লিচু, আম, বরই, কাজুবাদাম, বারোমাসি আমলকী, চেরিফল, আপেলসহ বিভিন্ন ফলের গাছ।

লেবু মিয়া জানান, এক সময় অর্থাভাবে বড় ছেলেকে পড়ালেখা করাতে পারেননি। বিষয়টি তাকে ভীষণ কষ্ট দিয়েছে। পরে তিনি নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে উদ্যোগী হন। ২০০১ সালে ইউনিয়নের কচুকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে এক বিঘা জমি চুক্তি নিয়ে শুরু করেন নার্সারি ব্যবসা। দিনে দিনে তার নার্সারির প্রসার ঘটতে থাকে। বর্তমানে সাড়ে ১৩ বিঘা জমি কিনে গড়ে তুলেছেন ‘এ আর মামুন নার্সারি’। ওই নার্সারিতে এখন নিয়মিত কাজ করছেন ২৫ জন শ্রমিক। সব খরচ বাদ দিয়ে এই নার্সারি থেকে বছরে তার লাভ ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। নার্সারির একটি অংশে গড়ে তোলা হয়েছে ওই কমলার বাগান।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবুবক্কর সিদ্দিক জানান, ভারতের দার্জিলিংয়ের সাদকি জাতের কমলা চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন লেবু মিয়া। মূলত এ জেলার মাটি লেবুজাতীয় ফল চাষের জন্য উপযোগী। সাদকি কমলার চাষ বাণিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে দিতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন কৃষকরা। অন্যদিকে পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে।