logo
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১২:২৮
এখানে একটি গেট ছিল!
এইচ এম লাহেল মাহমুদ, পিরোজপুর

এখানে একটি গেট ছিল!

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের প্রধান সড়ক সংস্কার ও উঁচু করা হচ্ছে। যার জন্য খোলা হয় একটি লোহার গেট। যার ওজন প্রায় ৩০০ কেজি। খোলার পর গেটটি রাখা হয় হাসপাতালের একটি কক্ষে। তবে সেখান থেকে তা বিক্রি করে দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই গেটটি বিক্রি করেছেন তিনি। এমনকি বিক্রির টাকা হাসপাতালেও জমা দেননি। বলছি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কথা। ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লোহার গেট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলে বারীর বিরুদ্ধে।

জানা যায়, হাসপাতালের সামনের প্রধান সড়ক সংস্কার ও উঁচুকরণের কাজ চলছে। এজন্য গত সপ্তাহের সোমবার ওই গেটটি খোলা হয়। পরে তা হাসপাতালের নৈশপ্রহরী মো. কামরুজ্জামানের সহযোগিতায় শ্রমিকরা হাসপাতালের একটি কক্ষে নিয়ে রাখেন। গেটটির দেখাশুনার দায়িত্ব দেওয়া হয় হাসপাতালের জুনিয়র মেকানিক মো. মান্নান গাজীকে। পরে সেখান থেকে গেটটি বিক্রি করে দেওয়া হয়।

হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের রাস্তাটি উঁচু ও সংস্কারের কাজ চলছে। এজন্য হাসপাতাল প্রাচীরের ভেতর বালু গিয়ে যাতে নোংরা না হয়, সেজন্য হাসপাতালের পশ্চিম পাশের মসজিদ গেটটি খুলে সেখানে ইট দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে।

ওই হাসপাতালের জুনিয়র মেকানিক মান্নান গাজী বলেন, ‘গেটটি রুমে রাখা ছিল। রুমটি তালা মারা ছিল। কিন্তু গত মঙ্গলবার বড় স্যার (ইউএইচএন্ডএফপিও) ডাক্তার ফজলে বারী আমাকে রুম খুলে দিতে বলেন। আমি রুম খুলে দিলে তিনি তা (গেট) লোক দিয়ে নিয়ে গেছেন। পরে শুনেছি, তা বিক্রি করে দিয়েছেন।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী মো. আসলাম হোসেন বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে শুনেছি, গেটটি ওই কক্ষে নেই। পরে জানতে পেরেছি- ডা. ফজলে বারী তা বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে এর কোনো টাকা কোষাগারে জমা দেননি তিনি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মসজিদের ইমাম মাওলানা আলহাজ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গেটটি খোলার পর তা হাসপাতলের স্টোরে রাখা হয়। পরে শুনেছি, তা ডাক্তার বারী স্যার বিক্রি করে দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার বদলির আদেশ হয়েছে। এখন কথা বলা যাবে না।’

নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. এ এইচ এম মোস্তফা কায়সার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। হাসপাতালের অন্য চিকিৎসকরা না থাকায় আমি নামমাত্র দায়িত্বে আছি। এরপরও খোঁজ নিয়ে বিষয়টি জানতে হবে।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসানাত ইফসুফ জাকী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিক্রি হয়ে থাকলেও কোনো টেন্ডার হয়নি; টেন্ডার হলে আমি জানতাম।’