logo
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ২২:০৫
শাবিতে ভিসির বাসভবন অবরোধ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী
খাবার বন্ধ করা আন্দোলনের অংশ হতে পারে না
নিজস্ব প্রতিবেদক

খাবার বন্ধ করা আন্দোলনের অংশ হতে পারে না

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং তার বাসভবন অবরুদ্ধ করে খাবার সরবরাহ বন্ধ করাকে প্রতিহিংসামূলক আচরণ হিসেবে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান এবং সন্তানের মতো। তাদের দাবি দাওয়ার প্রতি সরকার সহানুভূতিশীল। আমরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন নানা দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছি। ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট আমরাও করেছি। কিন্তু আমরা কখনো বাড়ির বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করি নাই। আজকে শুনলাম, ভিসির বাংলোতে পানি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিসির জন্য খাবার পাঠানো হয়েছিলো সে খাবারও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘জেলখানার কয়েদিরাও খাবার পায়, পানি পায়। খাবার বন্ধ করে দেওয়া, ভিসির বাংলো কিংবা ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া বা কেটে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা, এগুলো আন্দোলনের অংশ হতে পারে না, এগুলো প্রতিহিংসামূলক। আমি ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ জানাবো, রাজনৈতিক ক্রীড়ানক হিসেবে তাদেরকে যেন কেউ ব্যবহার না করে। আমি আশা করবো, এর একটি যৌক্তিক সমাধান হবে।’

উল্লেখ্য, শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ওই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তোলেন হলের কয়েকশ’ছাত্রী এবং তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তবে এর দুদিন পর ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পরদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। এরপরই ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে বেশ কিছু শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা গুলিবিদ্ধ হন। ওই রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরে সর্বশেষ গত বুধবার উপাচার্যের বাসার সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরমধ্যে এক শিক্ষার্থীরে বাবা হৃদররোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি বাড়ি চলে গেলে বাকিরা অনশন অব্যাহত রাখেন। তাদের মধ্যে ১৭ শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এখনও ৬ শিক্ষার্থী অনশন করে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সোমবার উপাচার্যের বাড়িতে খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়াসহ বাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চালায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন: জাবি শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইলেন শাবি ভিসি