logo
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:৪৫
বিপিএল
ঢাকাকে গুঁড়িয়ে সিলেটের প্রথম জয়
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ঢাকাকে গুঁড়িয়ে সিলেটের প্রথম জয়

টানা খেলার ধকলে বলতে গেলে ক্লান্ত মিনিস্টার ঢাকা। একমাত্র দল হিসেবে বিপিএলে টানা চারটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে দলটি। তবে পারফরম্যান্স আহামরি নয়। চারটির মধ্যে তিনটিতেই হার তারকাসমৃদ্ধ দলটির। গতকাল সর্বশেষ হার মিরপুরে। সিলেটের বিরুদ্ধে আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১০০ রানে গুটিয়ে যায় তামিম-মাশরাফিরা। জবাবে বেশ দাপটের সঙ্গেই জিতেছে সিলেট, ৭ উইকেটে। বিপিএলের চলমান আসরে প্রথম জয়ের দেখা পেল সিলেটের দলটি।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে সিলেটের বোলিং তোপের কাছে অসহায় ছিল ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। ৯ রানে দুই ওপেনারকে হারানো ঢাকা পরে ঠিকমতো জ্বলে উঠতে পারেনি। ১৮.৪ ওভারে দলটি গুটিয়ে যায় কোনোমতে ১০০ ছুঁয়ে। জবাবে সিলেট ছিল বেশ দুরন্ত। ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য স্পর্শ করে ১৮ বল হাতে রেখে। দুই ম্যাচে এক জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে সিলেট। ৪ ম্যাচে এক জয় পাওয়া ঢাকা রয়েছে তলানিতে। সহজ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালো সিলেটের। উদ্বোধনী জুটিতে রানের গতি বাড়ান লেন্ডল সিমন্স ও এনামুল হক বিজয়। যদিও বড় জুটি হয়নি। তবে জয়ের সাহসী ভিত্তি গড়ে দেন এ দুই ওপেনার। দলীয় ২১ রানে এ জুটি ভাঙেন দীর্ঘদিন পর বোলিংয়ে ফেরা মাশরাফি। সিমন্সকে রুবেলের ক্যাচ বানান তিনি। ২১ বলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন ক্যারিবীয় ওপেনার।

এরপর মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে আগাতে থাকেন এনামুল হক। এ জুটি দলকে নিয়ে যান ৫৯ রান পর্যন্ত। ১৫ বলে ৩টি চারে ১৭ রান করে মুরাদের বলে তামিমের হাতে ক্যাচ দেন মিঠুন। এরপর অবশ্য সিলেটকে আর বেগ পেতে দেয়নি তৃতীয় উইকেট জুটিতে এনামুল হক বিজয় ও কলিন ইনগ্রাম। দুজনে দলকে নিয়ে যান জয়ের খুব কাছাকাছি। দলীয় ৯৯ রানে বিদায় নেন এনামুল হক বিজয়। ৪৫ বলে চারটি ৪টি ও ১টি ছক্কায় ৪৫ রান করে তিনি হন মাশরাফির শিকার। জয়ের জন্য বাকি কাজটুকু নির্বেঘ্নে সারেন কলিন ইনগ্রাম ও রবি বোপারা। ১৯ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২১ রানে অপরাজিত থাকেন কলিন। ২ বলে ১ রান করেন বোপারা। বল হাতে ঢাকার হয়ে মাশরাফি দুটি ও হাসান মুরাদ নেন ১ উইকেট। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দুর্দশার মধ্যে ছিল ঢাকা। দলীয় ৯ রানের মধ্যে হারায় তারা দুই ওপেনারকে। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে সোহাগের টানা তিন বলে রান না পেয়ে অস্থির হয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন আফগান ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শাহজাদ (৭ বলে ৫)। পরের ওভারে মোসাদ্দেকর বলে এলবিডব্লিউ তামিম ইকবাল (৫ বলে ৩)। যদিও আউটের সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ দেখা যায় তামিমের মধ্যে।

তিনে নামা জহুরুল ইসলামও টিকতে পারেননি। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে বড় শটের চেষ্টায় আউট হন জহুরুল ইসলাম (১০ বলে ৪)। ১৭ রানে ৩ উইকেট হারানো ঢাকাকে তখন পথ দেখানোর চেষ্টা করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও নাঈম। শুরুতে মাহমুদউল্লাহ ছিলেন আগ্রাসী। নাঈম ছিলেন ধীর লয়ে। এ জুটি দলকে নিয়ে যান ৫৭ রান পর্যন্ত। নিজের খোলস ছেড়ে বের হতে পারেননি নাঈম। ৩০ বলে ১৫ রানে এলবিডব্লিউ হন তিনি অপুকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। অথচ টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লেগেছিল নাঈমের গ্লাভসে। একই ওভারে সাজঘরে ফেরেন আন্দ্রে রাসেলও। ৪ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি ক্যারিবীয়ন অলরাউন্ডার। তার আউটও ছিল প্রশ্নবোধক। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল আগে লেগেছিল রাসেলের ব্যাটের কানায়।

জোড়া ধাক্কায় টালমাটাল ঢাকা ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই হজম করে আরেকটি বড় ধাক্কা। দারুণ খেলতে থাকা মাহমুদউল্লাহ (২৬ বলে ৩৩) উইকেট বিলিয়ে আসেন নাজমুল অপুকে সুইপ খেলে। তার ব্যাটেই আসে ইনিংস সর্বোচ্চ রান। ১৬ বলে ২১ রান করে দলকে এগিয়ে নেন শুভাগত হোম। তাকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ শিকার বানান অপু। শেষদিকে তাসকিন যোগ দেন উইকেট নেওয়ার মিছিলে। ৪০২ দিন পর মাঠের লড়াইয়ে নামা মাশরাফি বিন মুর্তজা ব্যাট হাতে ঝলক দেখাতে পারেননি। ৬ বলে ২ রান করে তিনি তাসকিনের শিকার। ইসরু উদানা ব্যর্থ। ৬ বলে ১টি চার ও ১টি ছক্কায় রুবেলের ১২ রানের ইনিংস ঢাকাকে পৌঁছে দেয় শতরানে। ১৮.৪ ওভারে অলআউট ঢাকা। বল হাতে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস নাজমুল ইসলাম অপুর। ৪ ওভারে এক মেডেনে দেন ১৮ রান। উইকেট চারটি। তাসকিন একটু খরুচে থাকলেও নিয়েছেন তিন উইকেট। সোহাগ গাজী দুটি, মোসাদ্দেক হোসেন নেন একটি করে উইকেট।