logo
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১৮:৩০
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মাসব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু
বিশ্বজুড়ে মানুষের বাস্তুচ্যুত না হওয়ার ব্যবস্থা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বজুড়ে মানুষের বাস্তুচ্যুত না হওয়ার ব্যবস্থা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মঙ্গলবার ‘মানবিক নীতি : এখানে এবং এখন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি- ভোরের আকাশ

যুদ্ধ বা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে মানুষ যাতে বাস্তুচ্যুত না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘মানবিক নীতি : এখানে এবং এখন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

সুইজারল্যান্ডের লুসানের ফটো এলিসি জাদুঘরের সহযোগিতায় বাংলাদেশস্থ সুইজারল্যান্ড দূতাবাস এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ রেড ক্রস (আইসিআরসি) ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত প্রদর্শনীতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: এনামুর রহমান।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ৫ম তলায় এই প্রদর্শনী বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রোববার বাদে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫ট পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে প্রদর্শনী। নির্বাচিত ভিডিও ও আলোচিত্রের মাধ্যমে দর্শকদের মাঝে মানবিক নীতির তাৎপর্য ও দৈনন্দিন জীবনে এর গুরুত্ব তুলে ধরাই এই প্রদর্শনীর লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মানবিক সংকট বিশ্বজুড়ে মানুষের দুর্দশার কারণ। এমনকি যারা এই সংকট দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত নয়, তারাও অসহায় বোধ করে। কিন্তু মানুষ কীভাবে এই সংকটে হতাশাগ্রস্তদের সাহায্য করতে পারে? সমকালীন শিল্প প্রদর্শনী ও উপস্থাপনা ‘মানবিক নীতি: এখানে এবং এখন’ এই মানবিক ও ব্যক্তিগত আবেগ এবং অনুসন্ধানের উত্তর খুঁজতে সাহায্য করে। মানবতা, ন্যায়পরায়নতা, নিপেক্ষতা ও স্বাধীনতা হলো মানবিক নীতির মূল ভিত্তি।

মানবিক নীতির গুরুত্ব তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই প্রদর্শনী দর্শকদের মধ্যে মানবতার জন্য কাজ করার মানসিকতা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। যুদ্ধ বা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে মানুষ যাতে বাস্তুচ্যুত না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এই প্রদর্শনীর আয়োজনের জন্য সুইজারল্যান্ড দূতাবাস, আইসআরসি এবং মুক্তিযুদ্ধজাদুঘরকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড বলেন, ‘মানবিক নীতিগুলি সুইস জনগণ হৃদয় দিয়ে অনুভব করে এবং এই অসামান্য মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতেই ১৯৭০ সালের গোড়ার দিক থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে।’

তিনি বলেন, ‘সুইজারল্যান্ড এবং বাংলাদেশ যখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করছে, তখন যৌথভাবে আয়োজিত এই প্রদর্শনী আমাদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।’

বাংলাদেশে আইসিআরসি প্রতিনিধি দলের প্রধান মিসেস কাটজা লরেঞ্জ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আইসিআরসি মানবিক সহায়তা নিয়ে বাংলদেশের পাশে ছিল। আমরা শত-হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সুরক্ষা ও সহায়তা দিয়েছি।

‘সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আমরা সহায়তা করা চালিয়ে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক আইনের ভিত্তিতে আমরা বন্দিদের অধিকার সুরক্ষা, শারীরিকভাবে নির্যাতিতদের পরিসেবা প্রদান করে থাকি।’

‘মানবিক নীতি : এখানে এবং এখন’ প্রদর্শনীতে আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রগুলোর মাধ্যমে শিল্পীরা তাদের মানবতা, ন্যায়পরায়ণতা, নিরপেক্ষতা এবং স্বাধীনতার দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নেয় দর্শকের সঙ্গে এবং একটি নতুন, স্থানীয় এবং সমসাময়িক দৃষ্টিকোণ থেকে মানবিক নীতিগুলির প্রভাব পর্যবেক্ষণ করে।

প্রদর্শিত ছবিগুলোতে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং বিগত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশে আইসিআরসি-এর কর্যক্রমের প্রতিফলন এবং পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের মানবিক কার্যক্রমের প্রতিফলন ঘটেছে।

এছাড়া ১০ জন সুইস আলোকচিত্রির লেন্সের মধ্য দিয়ে দেখা দৈনন্দিন জীবনে মানবিক নীতিমালার প্রতিফলন ঘটেছে তাদের নির্মিত ১০টি শর্ট ফিল্মে। পুরস্কারপ্রাপ্ত ছয়টি আলোকচিত্রও রয়েছে প্রদর্শনীতে।