গোপালগঞ্জে জাকিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূকে খুনের মামলার রায় পিছিয়ে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইঞা ভোরের আকাশকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক বেগম জেসমিন আরা বেগম রায়ের এ তারিখ ধার্য করেন।’
গত ১৩ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২৭ জানুয়ারি রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- জাকিয়ার স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, নিশানের ভাই এহসান সুশান, ভগ্নিপতি হাসান শেখ ও ম্যানেজার আনিছুর রহমান।
মামলার নথিপত্র ঘেঁটে জানা যায়, মোর্শেদায়ান নিশান মাছরাঙা টেলিভিশনের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক আমাদের গোপালগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। মামলার শুরু থেকেই মোর্শেদায়ান নিশান পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে ছিলেন।
১৩ জানুয়ারি আদালত তিন আসামির জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জাকিয়া আক্তারকে খুনের ঘটনায় তার বাবা জালাল উদ্দিন মল্লিক চারজনের নামে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১১(ক)/৩০ ধারায় মামলাটি করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে নিশানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন জাকিয়া। তাদের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নিশানের ও তার পরিবারের সদস্যরা এক কোটি টাকা যৌতুকের জন্য জাকিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতো। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। সন্তানের কথা চিন্তা করে নির্যাতন সহ্য করতেন জাকিয়া।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে আসামিরা জাকিয়ার কাছে মোর্শেদায়ান নিশানের নামে ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার জন্য এক কোটি টাকা যৌতুক দাবি করেন। জাকিয়া যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা তাকে জোর করে শোয়ার ঘর থেকে রান্নার ঘরে নিয়ে যান।
এরপর মোর্শেদায়ান নিশান অন্য আসামিদের প্ররোচণায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
মামলা তদন্ত করে ওই বছরের ৯ জুন গোপালগঞ্জ জেলার ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সওগতুল আলম চার জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর গোপালগঞ্জ জেলা জজ আদালতে চার আসামির বিচার শুরু হয়। এ আদালতের মামলায় সাত জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি আসার পর আরো ১৩ জন সাক্ষ্য দেন।
অভিযোগপত্রের ২০ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনেরই সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত ৩০ ডিসেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন আবার আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত নতুন করে রায়ের তারিখ ধার্য করেন ২৭ জানুয়ারি।