চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন আগামীকাল শুক্রবার ২৮ জানুয়ারি। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এফডিসিতে হবে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
নির্বাচনে দুটি প্যানেল। একটির নেতৃত্বে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ ও অন্যটির নেতৃত্বে মিশা সওদাগর-জায়েদ খান। এ ছাড়া দুইজন স্বতন্ত্রসহ মোট ৪৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
দুটি প্যানেলেই রয়েছেন তারকা শিল্পীরা। নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই দুই প্যানেলের প্রার্থী এবং সমর্থকদের মাঝে দেখা গেছে দারুণ উৎসাহ-উদ্দীপনা। সার্বিক অবস্থা আর ভোটারদের গোপন তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে- দুটি প্যানেলের প্রার্থীদের মধ্যে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এবারের নির্বাচন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে আলাদা। বর্তমান কমিটি মিশা-জায়েদ প্যানেল চাইছে পুনরায় ক্ষমতায় বসতে। আর ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল মাঠে নেমেছে সময়ের সঙ্গে নেতৃত্বের পরিবর্তন আনতে।
এবারের নির্বাচনে আকর্ষণ বাড়িয়েছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। বিষয়টিকে সবাই ইতিবাচকভাবে দেখছেন।
এমনকি তার প্রতিদ্বন্দ্বী মিশা সওদাগর বলেছেন, ‘ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই আমাদের উপদেষ্টা ছিলেন। একজন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পীও সমিতির সেবা করতে চান। তার মানে আমাদের গত পরিষদ এমন কাজ করেছে, যে কারণে ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই সেবা করার জন্য আসতে চাইছেন। এটি ভালো দিক। আমার বিশ্বাস, এবারের নির্বাচন খুব ভালো ও সুন্দরভাবে হবে।’
ভোট নিয়ে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের মনোবাসনা সবাইকে নিয়ে কাজ করা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শিল্পী। আমাদের মানুষ চেনে। সমিতিতে শিল্পীদের চেহারা দামি একটা ব্যাপার। এ কাজগুলো তো অন্যরা খুব সহজে করতে পারবে না।
‘আমরা শিল্পীরা যখন চেষ্টা করব, তখন চলচ্চিত্রের সামগ্রিক উন্নতি হবে। এতে শিল্পী, ডাইরেক্টর, প্রডিউসার, নৃত্যশিল্পী, ফাইটিং গ্রুপ এবং টেকনিশিয়ানরা লাভবান হবেন। পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে লাভবান করতে শিল্পী সমিতি অনেক ভূমিকা রাখতে পারে।’
ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ বলেছেন, ‘আমাদের প্যানেল ভালোভাবে সাজিয়েছি। বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আমরা। বিজয়ী হয়ে চলচ্চিত্রের এ মন্দা অবস্থা কাটিয়ে তুলতে সব সংগঠনকে এক ছাতার নীচে এনে কাজ করার চেষ্টা করব।’
মিশা-জায়েদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জায়েদ খান বলেন, ‘জয়-পরাজয় এখানে বিষয় না। আমরা সবসময় সাধারণ শিল্পীদের পাশে ছিলাম, থাকব। তবে বিগত দিনগুলোয় আমরা যে কাজ করেছি, তাতে সাধারণ শিল্পীরা আমাদের পাশে থাকবেন বলে আশা করি।
শিল্পী সমিতির এ নির্বাচনে দুটি প্যানেলের বাইরে দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য পদে লড়ছেন। তাদের একজন ডন ও অন্যজন হরবোলা।
দুই প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন-
লিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল: সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ, সহ-সভাপতি রিয়াজ ও ডিএ তায়েব, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনূর, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নীরব, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক আরমান, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক ইমন, কোষাধ্যক্ষ আজাদ খান।
কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য অমিত হাসান, শাকিল খান, নানা শাহ, আফজাল শরীফ, সাংকো পাঞ্জা, জেসমিন, কেয়া, পরীমনি, গাঙ্গুয়া ও সীমান্ত আহমেদ।
মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেল: সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, সহ-সভাপতি ডিপজল ও রুবেল, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত, সাংগঠনিক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক জাকির হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ ফরহাদ।
কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য রোজিনা, অঞ্জনা, সুচরিতা, মৌসুমী, অরুণা বিশ্বাস, আসিফ ইকবাল, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, নাদের খান ও হাসান জাহাঙ্গীর।
নির্বাচনে কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন পীরজাদা শহীদুল হারুন। তার সঙ্গে থাকবেন বিএইচ নিশান ও বজলুর রাশীদ চৌধুরী।
আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। সদস্য হিসেবে থাকবেন মোহাম্মদ হোসেন জেমি ও মোহাম্মদ হোসেন।