logo
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:১০
দেশদ্রোহী কাজে লিপ্ত বিএনপি ও তাদের নেতারা: তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশদ্রোহী কাজে লিপ্ত বিএনপি ও তাদের নেতারা: তথ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন এবং মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি- বাসস

বিএনপি ও তাদের নেতারা দেশদ্রোহী কাজে লিপ্ত বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে পারে। কিন্তু দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ধ্বংস করতে বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে চিঠি দেওয়া, লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করা দেশদ্রোহী ও দেশ বিরোধী কাজ। এটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। মূলত বিএনপি ও তাদের নেতারা দেশদ্রোহী কাজ করছেন।’

মন্ত্রী শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন এবং মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

এসময় অন্যদের মধ্যে দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সদ্য বিদায়ী জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য ও নবনিযুক্ত জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজা আক্তারসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগসহ দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছে সেগুলো তদন্ত করে খুঁজে বের করা হবে। অর্থ কোত্থেকে কীভাবে গেল, কারা নিলো সেগুলো খুঁজে বের করে তদন্ত হবে। তদন্তের  পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেদিন সংসদে বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, জনগণের ওপর আস্থা থাকলে তো বিএনপির বিদেশিদের কাছে চিঠি দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এদেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ, জনগণই ঠিক করবে কারা ক্ষমতায় যাবে এবং কারা ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং বিএনপির মহাসচিব দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বদনাম করার জন্য, এদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করার জন্য, দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটি তো দেশ বিরোধী কাজ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব নিজে স্বাক্ষর করে ইউএস কংগ্রেসের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে যেভাবে চিঠি দিয়েছেন সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

ড. হাছান বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে, লবিস্ট নিয়োগ করে তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার চেষ্টা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য পুত্র এবং আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তারা এফবিআইএর এজেন্ট নিয়োগ করেছেন। সেই এফবিআই এর এজেন্টকে কিন্তু এখন বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এভাবে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বন্ধ করার জন্য বেগম খালেদা জিয়া কয়েক বছর আগে ওয়াশিংটন টাইমসে নিজের নামে নিবন্ধ লিখেছেন। এই কাজগুলোতো দেশবিরোধী কাজ, দেশোদ্রোহী এই কাজগুলো তারা করেছেন। তারা যে বিভিন্ন জায়গায় লবিস্ট নিয়োগ করেছেন, তার ডক্যুমেন্ট আমার আইপ্যাডে সংগৃহীত আছে। এই নিয়ে গণমাধ্যমেও ডক্যুমেন্টসহ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।’

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের নিজের আইপ্যাড থেকে এসব প্রমাণপত্র দেখান তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছি, আমাদের দেশে গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে অনেক উন্নয়নশীল দেশে তা নেই। কারণ আমরা মনে করি, একটি গণতান্ত্রিক এবং বহুমাত্রিক সমাজব্যবস্থার জন্য, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থার জন্য,একটি গণতান্ত্রিক সমাজকে সংহত করার জন্য তথ্যের অবাধ প্রবাহ প্রয়োজন। এজন্য প্রাইভেট টেলিভিশন অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এই প্রাইভেট চ্যানেলগুলো অত্যন্ত স্বাধীনভাবে বাংলাদেশে কাজ করছে।

বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে একটি জাতীয় স্তরের গণমাধ্যম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর অবস্থান চট্টগ্রামে হলেও টেরেস্ট্রিয়াল কানেকশনের মাধ্যমে দেশের সত্তর ভাগ অংশে এটি দেখা যায়। আর কেবল কানেকশন দিয়ে সারা দেশে এবং অ্যাপের মাধ্যমে সারা পৃথিবীর মানুষ দেখতে পারে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ও কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান নিয়ে বিটিভির অধীনে খুব শিগগির আরেকটি চ্যানেল চালু করা হবে। এছাড়া দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বিটিভির নতুন কেন্দ্র চালুকরার প্রকল্প চলমান রয়েছে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জন্য ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় এখানে নতুন স্টুডিও, অডিটোরিয়াম ও নতুন ভবন হবে। ফলে এ কেন্দ্র থেকে আরো মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান নির্মাণ ও সম্প্রচার করা সম্ভব হবে।

সূত্র: বাসস