logo
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৩:৩৪
ইউটিউব দেখে বরই চাষে বাজিমাত
কামরুল ইসলাম মাহি, সিলেট ব্যুরো

ইউটিউব দেখে বরই চাষে বাজিমাত

মিষ্টু মিয়া তার বরই ক্ষেতে পরিচর্যার কাজ করছেন

মিষ্টু মিয়া ১১ বছর প্রবাসে ছিলেন। নিজ দেশে কিছু করবেন এই ভাবনা থেকে ইতি টানেন প্রবাস জীবনের। চলে আসেন নিজ দেশে। স্বদেশে এসে কী করবেন ভেবে না পেয়ে কিছুদিন যায় হতাশায়। হঠাৎ ইউটিউব দেখে পরিকল্পনা করেন বরই চাষের। যেই কথা সেই কাজ। প্রায় ছয় একর জায়গাজুড়ে শুরু করেন উন্নত জাতের বরই চাষ। এতেই করেছেন বাজিমাত।

মিষ্টু নামের এই কৃষক সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার আলুবাগান এলাকায় বসবাস করেন। তার স্থায়ী ঠিকানা নরসিংদী জেলার বেলাবো থানায়।

জৈন্তাপুরের ওপাশে ভারতের বড় বড় পাহাড়। পাশে জৈন্তা হিল রিসোর্ট। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যের কাছেই তার বাগান হওয়ায় প্রকৃতিপ্রেমিরাও ভিড় করেন প্র্রতিদিন। যা এখন স্থানীয়দের কাছে মিষ্টু মিয়ার কুল বাগান হিসেবে পরিচিত। বাগানজুড়ে রয়েছে বাউকুল, আপেল কুল ও বল সুন্দরী। এসব কুল খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু।

মিষ্টু মিয়া জানান, বাগান তৈরির জন্য মূলধন থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ করেন। প্রথমে ১১৫৬টি চারা আনেন চুয়াডাঙ্গা থেকে। বর্তমানে তার জমিতে নানা জাতের বরইয়ে ছেয়ে গেছে বাগান। চাষ শুরু হওয়ার ১০ মাসের মাথায় বাগানে ফলও ধরেছে আশাতীত। এ বছর এখান থেকে ৮-১০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।

বাগানে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের কুল ঘেঁষে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের বরই বাগান করেছেন তিনি। প্রতি গাছেই ৮-১০ কেজি করে বরই ঝুলে আছে। বাগানের চারপাশ জাল দিয়ে বেড়া দেয়া হয়েছে। সাথে আরও দু’জন রয়েছেন বাগান পরিচর্যা ও দেখভালের দায়িত্বে। নিবিড় পরিচর্যায় গাছগুলো বেড়ে উঠেছে।

মিষ্টু মিয়া বলেন, এর আগে এ রকম বাগান করিনি। ইউটিউব দেখে শখ হয় একটি বাগান করার। এলাকায় যখন এক-দুটি কুল গাছ দেখেছি তখন আমার মনে হলো এখানে জমিতে ভালো কুল হবে। জায়গাটি চমৎকার হওয়ায় এখানে চাষে আগ্রহী হই। এখন পর্যন্ত জায়গা চুক্তিসহ প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যেই ফলগুলো বাজারজাত করতে পারব।

বাগানের জায়গার মালিক ওমর ফারুক বলেন, আসলে বাগানে না এলে বিশ্বাসই হতো না এত সুন্দর একটা বাগান তৈরি করেছেন মিষ্টু মিয়া। আমাদের এলাকায় যারা অন্যান্য কৃষক আছে আমি তাদেরকে বলব বাগানটি দেখেন। আমার মনে হয় এ রকম অনেক জায়গা পতিত আছে। যেগুলোকে কাজে লাগিয়ে কৃষি সম্ভাবনা গড়ে উঠবে।

জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন জানান, নরসিংদী থেকে আসা এক কৃষক কুল বাগানটি করেছেন। আমার ফিল্ড সুপারভাইজার বাগান কয়েকবার পরিদর্শন করে কৃষককে পরামর্শ ও উৎসাহ দিয়েছেন।