গেল কয়েক বছরের ব্যবধানেই চিরাচরিত সনাতনী শিক্ষার ধারণায় দ্রুত পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষার জন্য শ্রেণিকক্ষে শারীরিক উপস্থিতির অপরিহার্যতা কমতে শুরু করেছে। সমগ্র বিশ এখন অনলাইন শিক্ষার এক বৈপ্লবিক যুগে প্রবেশ করেছে। প্রচলিত শ্রেণিকক্ষভিত্তিক শিক্ষার সীমাবদ্ধতার তুলনায় নতুন এই শিক্ষাপদ্ধতি এখন অনেক বেশি বিস্তৃত। বাবসন সার্ভে রিসার্চ গ্রুপের সাম্প্রতিক জরিপ প্রতিবেদন বলছে, আমেরিকায় উচ্চ শিক্ষার্থীদের শতকরা ৩০ ভাগের বেশি অন্তত একটি দূরশিক্ষণ কোর্স গ্রহণের সুফল লাভ করেছেন। পাশের দেশ ভারতেও অনলাইন শিক্ষার প্রসার ঘটেছে করোনাকালে। ভারত বা আমেরিকার মতো পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা অপরিহার্য হয়ে উঠছে দিন দিন। আমাদের দেশেও এই বিষয়টির অগ্রগতি হতাশাজনক নয়। চলমান করোনাকালে আমাদের দেশে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী দেশি-বিদেশি স্কুুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন। করোনা ভাইরাসের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টে স্থবির হয়ে পড়া শিক্ষাব্যবস্থাকে সচল রাখতে সামনের দিনগুলোতে ডিজিটাল বা অনলাইন শিক্ষাপদ্ধত্বি আরো বেশি অপরিহার্য হয়ে উঠবে সন্দেহ নেই।
শিক্ষা কার্যক্রমে অনলাইন ব্যবস্থা অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা স্ব-স্ব শিক্ষণীয় বিষয়সূচি নিজেদেও প্রাত্যহিক কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় করে সে অনুযায়ী অনুসূডঢ় তৈরি করতে পারেন। অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষাবহির্ভূত গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাদ না দিয়েও শিক্ষা ভালোভাবে অর্জন করা সম্ভব। এভাবে অনলাইনে অধ্যয়ন করতে গিয়ে আমাদের জীবনের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় সময় ব্যবস্থাপনায় আমরা দক্ষ হয়ে উঠছি। শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়েই শিক্ষাবিষয়ক নিজস্ব পছন্দের বিষয় বাস্তবায়ন করতে পারছেন। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিস্তৃতি ও সুযোগ যতই বাড়ছে, ততই সৃষ্টি জগতের অসংখ্য বিষয় জানার সুযোগ বাড়ছে। এতে সেই সব বিষয়ে দক্ষতা লাভ করা যাচ্ছে এবং শিক্ষাদান কার্যক্রমের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বিশের বিভিন্ন বিশবিদ্যালয় ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন বিষয়ে তাদের নিজস্ব অনলাইন ভার্সনের বিচিত্র প্রোগ্রাম চালু রেখেছে। মিউজিক থেকে শুরু করে কোয়ান্টাম ফিজিকস পর্যন্ত প্রতিটি শাখায় শিক্ষার্থীর অবাধ বিচরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সশরীরে বিশবিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করেও এই অনলাইনে প্রোগ্রামের মাধ্যমে অফিশিয়াল সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি লাভ করা আজকাল খুবই সম্ভব এবং সাশ্রয়ী।
অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিতে পৃথিবীর যে কোনো স্থান থেকে একজন শিক্ষক বা শিক্ষার্থী শিক্ষাদান বা গ্রহণ করতে পারেন। কারণ, এতে শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কাউকেই একস্থান থেকে অন্যস্থানে স্থানান্তর হওয়ার বা কোনো নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করার দরকার হয় না। এতে শুধু সময়ই বাঁচে না, বরং তা ব্যাপক অর্থসাশ্রয়ীও বটে। বর্তমানে ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের অভাব নেই। যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ থাকে, সেখানে যে কেউ প্রয়োজনমতো এর সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। যেমন কেউ যদি বিদেশে অধ্যয়ন করেন এবং পাশাপাশি কাজও করতে চান, তবে অনলাইন শিক্ষাই তার কাছে পছন্দনীয় হবে। এমতাবস্থায় বিদেশে থেকেও তাকে কাজের জন্য শিক্ষা অথবা শিক্ষার জন্য কাজ ছাড়তে হবে না। তা ছাড়া নিজের পছন্দমতো শিক্ষা অর্জনের সুযোগ অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে অনলাইন শিক্ষা। এই পদ্ধতির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছেÑ এখানে শিক্ষার্থী তার প্রয়োজনীয় শিক্ষা একান্ত নিজের মতো করে এবং আর্থিক সামর্থ্যরে মধ্যে পূরণ করে নিতে পারেন।
অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার সুফল নিয়ে বহু গবেষণা চালানো হচ্ছে। এসব গবেষণায় উঠে আসছে বহু তথ্য। অনলাইন ক্লাসে শ্রেণিকক্ষের আয়তন সাধারণত সনাতনী শ্রেণিকক্ষের চেয়ে ছোট হয়ে থাকে। অধিকাংশ সময় এই পদ্ধতিতে শ্রেণিকক্ষে একসময় একজন ছাত্র থাকায় শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যকারই পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া এবং পাঠ আদায় কার্যক্রম খুবই উঁচুমানের হয়ে থাকে। এই পর্যায়ে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে প্রায়ই ভিডিও, ছবি এবং ই-বুক ব্যবহার হয়ে থাকে। এমনকি শিক্ষক তার বক্তব্য বিষয়ের মান উন্নয়নে অন্য ফরম্যাটে যেতে পারেন। যেমন- কোনো ফোরামে বা আলোচনার মাধ্যমে শিখন (লার্নিং) শেখানো প্রক্রিয়াকে তিনি সমন্বয় করে নিতে পারেন। এই অতিরিক্ত সুবিধার সুযোগ যে কোনো সময়ে যে কোনো স্থানে ব্যবহার করা যায়। ফলত শিখন শেখানোর সামগ্রিক কাজটি সময় ও চাহিদা উপযোগী হয়ে ওঠে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রচলিত শ্রেণিকক্ষভিত্তিক শিক্ষার চেয়ে অনলাইন এই শিক্ষার ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। এখানে দেয় (পেমেন্ট) পরিশোধের ক্ষেত্রে কিছু বিকল্প সুযোগ থাকে। যেমন তা কিস্তিতে বা ক্লাসপ্রতি হতে পারে। এমনকি মোট দেয় থেকে কিছু বাট্টাও (ছাড়) দেওয়া হয়। ক্ষেত্রবিশেষে বৃত্তিও প্রদান করা হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষা উপকরণ ব্যয় না থাকায় এই পদ্ধতিতে শিক্ষাব্যয় সাধারণত বেশি হয় না।
কোভিড বিশে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার সুফল নিচ্ছে বহু দেশ। আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বন্ধ হয়ে পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ সময়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে অনলাইননির্ভর হয়ে উঠতে দেখা গেছে। এ দেশে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার ওপর করা জরিপগুলোর ফলাফল ততটা সন্তোষজনক নয়। তবে আশার কথা হলো, বাংলাদেশ অন্তত শুরু করেছে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করেছে এবং জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে লম্বা সময় বন্ধ ছিল দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ঘাটতি পূরণে এ সময়ে টেলিভিশন ও অনলাইনের মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম চালু করে সরকার। এতে শহর অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ দূরশিক্ষণ ও অনলাইন পাঠদানের সুবিধা পেলেও ব্যতিক্রম চিত্র ছিল গ্রামাঞ্চলে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) এক সাম্প্রতিক জরিপে উঠে এসেছে, করোনাকালে দেশের গ্রামাঞ্চলের ৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থীই ছিল অনলাইন ক্লাসের বাইরে। আর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত পাঠ কার্যক্রমের আওতার বাইরে ছিল গ্রামের ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী।
শিক্ষাব্যবস্থায় করোনার প্রভাব বিষয়ে জানতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর একটি জরিপ চালায় ব্যানবেইস। এতে ১৯টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের ২৪০টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬ হাজার ৫১৬ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক অংশ নেন। উপজেলাগুলোর মধ্যে নয়টি গ্রাম, তিনটি শহর, দুটি পাহাড়, দুটি চর ও একটি চা বাগান অঞ্চলের। প্রতিষ্ঠানভিত্তিক জরিপ চালানো হয় গ্রামাঞ্চলের ১৪৪টি, উপজেলা পর্যায়ের ৫০টি ও সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এ ছাড়া গ্রামাঞ্চলের ১ হাজার ৯৫৮ জন, উপজেলা পর্যায়ের ৬৪৮ ও সিটি করপোরেশনের ৬৫২ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চালানো হয় ব্যক্তিপর্যায়ের জরিপ। এসব জরিপে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে ব্যানবেইস।
ব্যানবেইসের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, জরিপের আওতাধীন ২৪০টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৩৬টিতে অনলাইন পাঠদান চালু ছিল। অর্থাৎ অনলাইনে পাঠদান চালু ছিল মাত্র ১৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে। আর অনলাইন ক্লাসগুলোয় শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের গড় হারও ছিল ১৫ শতাংশ। বাকি ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থীই ছিল অনলাইনভিত্তিক পাঠ কার্যক্রমের বাইরে। এর মধ্যে অনলাইন পাঠদানে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে ছিল গ্রামের শিক্ষার্থীরা। জরিপের তথ্য বলছে, গ্রামাঞ্চলের মাত্র ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, উপজেলা পর্যায়ের ১২ ও সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে।
একইভাবে সংসদ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত পাঠদান সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও পিছিয়ে ছিল গ্রামের শিক্ষার্থীরা। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, সংসদ টিভিতে সম্প্রচার হওয়া পাঠদানের আওতায় এসেছে গ্রামাঞ্চলের মাত্র ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ জরিপে অংশ নেওয়া ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থীই টেলিভিশনে ক্লাস দেখেনি। উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিভির পাঠদানের আওতায় ছিল ৩৬ শতাংশ। আর সিটি করপোরেশন এলাকার ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশনের ক্লাস দেখেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামোগত দুর্বলতা, ডিভাইসের অপ্রতুলতা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ না থাকা ও সচেতনতার অভাবেই গ্রামের শিক্ষার্থীরা অনলাইন পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে গ্রাম ও শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিখনের ক্ষেত্রে বড় বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সুপারিশ, ব্যানবেইসের গবেষণায় যে তথ্য উঠে এলো সেটা আমলে নিয়ে দ্রুতই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ এখন আমাদের সামনে ওমিক্রনের একটি অশনিসংকেত রয়েছে। তাই যদি আমাদের আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়, সে সময়ের জন্য এখনই পরিকল্পনা সাজাতে হবে। যেসব এলাকায় ইন্টারনেট সেবা নেই, সেখানে সেটির ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীর ডিভাইস নেই, তাদের হাতে তা পৌঁছে দিতে হবে। আমার কথা হচ্ছে, যদি সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব হয়, তা হলে ট্যাব কেন নয়? এক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। পাশাপাশি শিক্ষকদেও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত ও প্রশিক্ষণে প্রাপ্ত জ্ঞান পাঠদানের ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।
এদিকে করোনাকালে শিক্ষার্থীদের পাঠ অভ্যাসেও অনেক বড় পরিবর্তন এসেছে। ব্যানবেইসের জরিপে দেখা গেছে, করোনার আগে দিনে গড়ে ৩-৭ ঘণ্টা পড়ত এমন শিক্ষার্থীর হার ছিল ৬০ শতাংশ। যেখানে গড়ে ৩-৭ ঘণ্টা পড়া শিক্ষার্থীর হার করোনাকালে এসে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৭ শতাংশ। অন্যদিকে করোনার আগে বিদ্যালয়ের পাঠদানের বাইরে কোনো পড়ালেখাই করত না এমন শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল প্রায় শূন্যের কোটায়। যদিও করোনাকালে এ ধরনের শিক্ষার্থী সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। জরিপে দেখা গেছে, করোনকালে কোনো পড়ালেখাই করেনিÑ এ ধরনের শিক্ষার্থীর হার গ্রামে ৩৮ শতাংশ, উপজেলা পর্যায়ে ২৪ ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ২২ শতাংশ।
ডিজিটাল দুনিয়ায় শেষ সীমা বলে কিছু নেই। এখানে সর্বদা নতুন চিন্তা, উদ্ভাবন ও সম্পাদন চক্র চলমান থাকে। প্রয়োজনে যে কোনো সময়ে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম দ্বারাই আমাদের মতো চিরাচরিত সমাজকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। সাম্প্রতিক জরিপ মতে, বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার ৬৩.০৮ শতাংশ। এর মাঝে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ শতাংশের বেশি। সব মিলিয়ে দেশে এখন ১৫ থেকে ৩৫ বছরের যুব শ্রেণির সংখ্যা ৮০ মিলিয়ন (৮ কোটি)। কর্মক্ষম এই জনগোষ্ঠী আগামী দুই দশক ধরে কর্মক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অবদান রাখতে পারবেন। তা ছাড়া করোনার কারণে বিশজুড়ে যে অর্থনৈতিক স্থবিরতা নেমে এসেছে, তা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও তাদের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রশিক্ষণযোগ্য যুবগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতা এবং অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি মাথায় রেখে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশিরা ঐক্যবদ্ধভাবে অনাগত ভবিষ্যতের মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। বিশে^ মাথা উঁচু করে বাঁচবে। গড়ে তুলবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।
জাতিসংঘ এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো অনলাইন শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে জোর তাগাদা দিয়ে চলেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই উৎকর্ষের যুগে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী আজ ভাবতে শুরু করেছে, অনলাইন শিক্ষা সনাতনী শিক্ষার সমান্তরাল বা তার চেয়ে উত্তম। মোট কথা, অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে দাঁড় করানোর বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে এখনই। নয়তো পিছিয়ে পড়তে হবে।
লেখক : লালবাগ মডেল স্কুুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ। ‘রিটায়ার্ড বিসিএস টিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (আরবিটিএ) সভাপতি