logo
আপডেট : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৫:১৭
সন্ধ্যায় বাসায় ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক

সন্ধ্যায় বাসায় ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া

হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। (ফাইল ছবি)

রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আজ মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাসায় ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতাল থেকে তার বাসায় ফেরার কথা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় খানিকটা স্থিতিশীল। এছাড়া তিনি নিজে বাসায় ফিরতে উদগ্রীব হয়েছেন। এজন্য তার চিকিৎসকরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তবে এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও হাসপাতালের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

তবে তার চিকিৎসকরা গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হলেও তার রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ রয়েছে। এজন্য হাসপাতালের বদলে বাসাতেই তার এ চিকিৎসার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, চেয়ারপারসন তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরছেন ধরে নিয়ে এরইমধ্যে কর্মরত সবার করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। এছাড়াও এ সংক্রান্ত বিধিনিষেধগুলো কঠোরভাবে মেনে চলা হচ্ছে। টানা আড়াই মাস চিকিৎসাধীন থাকায় হাসপাতালের পরিবেশেও তিনি অস্থির হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালে দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্তও হয়েছিলেন তিনি। তাই তার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে তাকে বাসায় ফেরানো হচ্ছে।

গত বছরের ১৩ নভেম্বর বাসায় রক্ত বমি হয়েছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের। এরপর তাকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি লিভার সিরোসিস ছাড়াও অনেকদিন ধরেই কিডনি, ফুসফুস, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, চোখের সমস্যাসহ বয়সজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন। বর্তমানে তার বয়স ৭৭ বছর।

সেনাশাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে ২০০৮ সালে বিএনপি চেয়ারপারসনের নামে জিয়া অরফ্যানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে দুটি দুর্নীতির মামলা হয়। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফ্যানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারান্তরীণ হন খালেদা জিয়া। এ মামলায় প্রথমে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও পরে উচ্চ আদালতের রায়ে তা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। এরপর একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্রের মামলাতেও ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। বর্তমানে এ দুটি মামলায় কারাভোগ করছেন তিনি।

সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরান কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে অন্তরীণ রাখা হয়। সেখানে গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সেলে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে করোনা বেড়ে গেলে তাকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ প্রথমে ৬ মাসের জন্য প্যারোলে মুক্তি দিয়ে নিজ বাসায় চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেয় সরকার। পরে এর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু মামলা আদালতে বিচারাধীন।

তবে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই বিএনপি ও সমমনা দলগুলো তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি করে যাচ্ছে। তবে সরকার বলছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশেই সম্ভব।