logo
আপডেট : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:২১
থামছে না মৃত্যুর উর্ধ্বগতি
আরো ৩৬ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১২,১৯৩ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক

থামছে না মৃত্যুর উর্ধ্বগতি

থামানো যাচ্ছে না করোনায় মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তের হার ও রোগীর সংখ্যা কমলেও বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। এই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ১৯৩ জন। শনাক্ত হয়েছেন ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৪৬১ জনের এবং মোট শনাক্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ২৪ হাজার ১৮০ জন। ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ২০৩ জন।

এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ১৩৭ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৬৭টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৪৪ হাজার ৩০৮টি এবং নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৪৫১টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ৬৮ হাজার ২২৬টি।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরো জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত ১৪ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।


বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৬ জনের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ এবং ১৯ জন নারী। মৃত ৩৬ জনের মধ্যে রয়েছেন এক থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে সাতজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে চারজন।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরো জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৬ জনের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচজন, রাজশাহী বিভাগের ছয়জন, খুলনা বিভাগের সাতজন, বরিশাল বিভাগের তিনজন, সিলেট বিভাগের একজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের একজন। তাদের মধ্যে ৩০ জন সরকারি হাসপাতালে এবং পাঁচজন বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন এবং একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।


এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন উপধরন আরো বেশি সংক্রামক হতে পারে। এ কারণে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ওমিক্রনের নতুন যে ভ্যারিয়েন্টটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে, তারও একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বের ৫৭টি দেশে শনাক্ত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে বিভিন্ন গবেষণা উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটি কিন্তু আগের তুলনায় বেশি সংক্রামক হতে পারে। বেশি সংক্রামক হলে ক্ষতি করার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। কাজেই আমাদের আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। রোগীর সংখ্যা কোনোভাবেই যাতে না বাড়ে সে জন্য আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে। সংখ্যার বিচারে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকলে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।


ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের ভেতরে কারা ভ্যাকসিন পেয়েছেন এবং কারা ভ্যাকসিন পাননি তা খুঁজে বের করার চেষ্টা অনেক দিন ধরেই চলছে। জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত মোট যে মৃত্যু আমরা দেখেছি, তাতে প্রায় ৭৩ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি। বাকিরা ভ্যাকসিন পেয়েছেন।

প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন পেয়েছিলেন ১৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পেয়েছেন ৬১ জন।
সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। ১৯ জন মারা গেছেন এখানে। এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৫১ জন মারা গেছেন। শতকরা হিসাবে যা ৪৩ শতাংশের বেশি। হাসপাতালগুলোতে আগের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

রোগীর সংখ্যা যখন বাড়ে সামগ্রিকভাবে আইসিইউ-এইচডিইউ এবং অক্সিজেন সরবরাহের ওপর চাপ সৃষ্টি হয় বলে জানান ডা. নাজমুল ইসলাম।