হরভজন সিং। ভারতীয় ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে ভাবা হয় তাকে। ১৯৯৮ সালে ক্যারিয়ার শুরু, খেলেছেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত। ছিলেন ২০১১ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী দলের গর্বিত সদস্য। তবে জাতীয় দলের হয়ে ১৭ বছর খেললেও কখনও অধিনায়ক হতে পারেননি। বলা যায়, তারকা হয়েও মহাতারকাদের ভিড়ে অধিনায়ক হিসেবে তার নাম কখনও আলোচনাতেই আসেনি।
তার ক্যারিয়ারের শুরুতে ভারতীয় দলে ছিলেন শচিন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়ের মতো বিশ্ব শাসন করা ক্রিকেটাররা। তারা দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। দলে পরিণত হওয়ার পর দেখেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ও বিরাট কোহলিকেও দায়িত্ব নিতে। তবে এদের আগে সুযোগটা পেলেও পেতে পারতেন ‘ভাজ্জি’। কিন্তু, তেমনটা ঘটেনি বাস্তবে। কেন তার নাম কোনো সময়েই জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে এলো না সে বিষয়ে মুখ খুলেছেন হরভজন সিং নিজেই।
তার নাম কখনও আলোচনায় না আসার জন্য জাতীয় নির্বাচকদেরই দোষ দিলেন ভাজ্জি। ২০১৫ সালে তিনি দল থেকে বাদও পড়েছিলেন। এ জন্য অনেকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে দায়ীও করে থাকেন। তবে হরভজন নিজে এজন্য তোপ দেগেছেন তৎকালীন নির্বাচকদের ওপর।
ভারতের এই প্রাক্তন অফস্পিনার ধোনিকে দোষ দিতে চান না। একটি ওয়েব সাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ধোনির সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল। আমার সঙ্গে তো আর ওর বিয়ে হয়নি। আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, ২০১২ সালের পর অনেক কিছুই ঘটেছে, যেগুলো না হলেই ভাল হত। বীরেন্দ্র শেওয়াগ, আমি, যুবরাজ সিংহ, গৌতম গম্ভীর ভারতের হয়ে খেলতে খেলতেই অবসর নিতে পারতাম। কারণ তখনও আমরা আইপিএল খেলছি। ভাবলে অবাক লাগে, ২০১১ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটা তার পর আর কখনও এক সঙ্গে খেলেনি। পরের বিশ্বকাপে হাতে গোনা কয়েক জন খেলেছিল। কেন এটা হবে?’’
তার মানে তো ধোনির দিকেই আঙুল তুলছেন হরভজন। কিন্তু তা মানছেন না। বলেন, ‘‘এমএস-এর বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। বরং আমরা খুব ভাল বন্ধু। আমার রাগ বোর্ডের ওপর। তখনকার সরকারের ওপর। বিসিসিআই-কে আমি সরকারই বলতাম। সেই সময়ে নির্বাচকরা নিজের কাজটা ঠিক মতো করতে পারেননি। তারা দলটাকে এক হতে দেননি। যখন সিনিয়ররা খেলছে এবং দলকে জেতাচ্ছে, তখন তো জোর করে তরুণদের দলে নেওয়ার কোনও মানে হয় না। এই নিয়ে নির্বাচকদের প্রশ্ন করেছিলাম। জবাব ছিল, এটা ওদের হাতে নেই। তখন জিজ্ঞেসই করে ফেলেছিলাম, তা হলে আপনারা নির্বাচক হিসেবে রয়েছেন কী করতে?’’
কখনও অধিনায়ক হতে না পারার জন্য হরভজন দোষ দিয়েছেন বোর্ডকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বোর্ডে তখন এমন কেউ ছিল না যে আমার হয়ে গলা ফাটাত। দেশের অধিনায়ক হতে গেলে এটার দরকার হয়। ক্ষমতায় যারা থাকেন, তাদের প্রিয় না হলে এই সম্মান পাওয়া যায় না। আমি জানি দেশের অধিনায়কত্ব করার ক্ষেত্রে আমি কতটা যোগ্য। যাই হোক, এখন আমার এই নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই।’’ সূত্র: আনন্দবাজার