১৯৯৬ সালে রোমে অনুষ্ঠিত বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যোগদানকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা নিরাপদ এবং পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যপ্রাপ্তিকে প্রত্যেক মানুষের অধিকার হিসেবে পুনর্ব্যক্ত করেন। আমাদের জাতীয় খাদ্যনীতিতে (২০০৬) খাদ্য নিরাপত্তায় চিহ্নিত তিনটি নিয়ামক হলোÑ খাদ্যের লভ্যতা, খাদ্যপ্রাপ্তির সক্ষমতা ও খাদ্যের জৈবিক ব্যবহার। সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে সবকয়টি নিয়ামক গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলোর মধ্যে সুনির্দিষ্ট পারস্পরিক নির্ভরতা বিদ্যমান থাকায় খাদ্য নিরাপত্তা-সম্পর্কিত সব বিষয়ে সুষম ভারসাম্য বজায় রাখা অপরিহার্য। খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা (চাল, গম, আলু), আমিষ (মাছ, মাংস, ডিম, ডাল), স্নেহ পদার্থ (ভোজ্যতেল, দুগ্ধজাতীয় খাবার), মিনারেলস (শাকসবজি), মসলা (পেঁয়াজ, রসুন, আদা) ও পানীয় (চা, কফি)। যেহেতু এ দেশের কমবেশি ৯০ শতাংশ মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত, সেহেতু খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় প্রথমে আসে চালের বিষয়টি। স্বাধীনতা লাভের সময় দেশে চাল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল কমবেশি ১ কোটি টন, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার টনে (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২১)। অর্থাৎ স্বাধীনতাকালীন দেশের সাড়ে সাত কোটি জনসংখ্যা দ্বিগুণের কিছুটা বেশি বৃদ্ধি পেলেও চাল উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণের বেশি। তবে চাল উৎপাদনে দেশ এখন পর্যন্ত স্বনির্ভরতা হলেও প্রায় প্রতি বছর কিছু পরিমাণ চাল আমদানি করতে হচ্ছে। খাদ্যশস্যে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গম উৎপাদন মোটেই সন্তোষজনক নয়। সরকারি তথ্য মোতাবেক ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে দেশে গম উৎপাদন দাঁড়িয়েছিল ১৯ লাখ ৮ হাজার টনে, যা এখন ১১-১২ লাখ টনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে শর্করাজাতীয় খাদ্য আলু উৎপাদনে দেশ স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে এবং নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশে তা রফতানি করছে। আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম। সবজি উৎপাদনেও দেশ স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে। এফএওর তথ্যমতে, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। বেশকিছু খাদ্যপণ্য উৎপাদনে দেশ পিছিয়ে আছে যেমন- ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ফল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন ধরনের মসলা যা আমদানির মাধ্যমে এসব খাদ্যপণ্যের চাহিদা মেটাতে হয়। আমিষের প্রধান উৎস মাছ উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ তৃতীয় আর চাষকৃত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থানে রয়েছে, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ১১তম। দেশ মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে এবং ডিম উৎপাদনে স্বনির্ভরতার কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে দুধ উৎপাদনে দেশ পিছিয়ে আছে যার চাহিদা মেটাতে আমদানির আশ্রয় নিতে হচ্ছে।
খাদ্যের লভ্যতা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়। দরকার খাদ্য কেনার সামর্থ্য। প্রায় দুই বছর ধরে করোনা মহামারির কারণে গরিব মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, দেশে কর্মসংস্থানে মূল ভূমিকা পালনকারী বেসরকারি খাতে চাকরিচ্যুতি, বেতন বা মজুরি হ্রাস এবং অন্যান্য কারণে মানুষের আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক জনমত জরিপ প্রতিষ্ঠান গ্যালাপ পরিচালিত ‘স্টেট অব দ্য গ্লোবাল ওয়ার্কপ্লেস-২১’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, করোনা মহামারির সময়ে বিশ্বে প্রতি তিনজনের একজন চাকরি বা কাজ হারিয়েছেন। ফলে মানুষের আয় কমেছে। সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে, করোনার সময় বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৫৫ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে। তাছাড়া করোনার কারণে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে শ্লথগতি দেখা দেয়ায় শ্রমশক্তিতে প্রবেশের উপযোগী মানুষ, বিশেষ করে শ্রমশক্তির চূড়ামণি যুবকরা বেকারদের দলে ভিড়েছেন। এতে বেড়েছে বেকারত্বের হার, যা দারিদ্র্য হার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। কারণ বেকারত্ব ও দারিদ্র্য একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। ২০২০-২১ অর্থবছরে একাধিক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা, যথা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের গবেষণার ফলে দেখা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে দেশে দারিদ্র্য হারে উল্লম্ফন ঘটেছে। এ হার দাঁড়িয়েছে ৩৫ থেকে ৪২ শতাংশে। দারিদ্র্যের এ হার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হাউসহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (হায়েস)-২০১৬ এর ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা ২০১৯-২০ এ উল্লিখিত ২১ দশমিক ৮ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণায় ওঠে আসা দারিদ্র্যের এ উচ্চহারকে চ্যালেঞ্জ করে সরকারি তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যের হার কত তা নিশ্চিতভাবে বলা দুষ্কর। খাদ্য নিরাপত্তার নিয়ামক খাদ্যের জৈবিক ব্যবহারে অসংগতির কারণে পুষ্টিমানসম্পন্ন ও নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নিচে অবস্থান করছে। গত দুই দশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় উন্নতি হলেও দেশ পুষ্টির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে। ‘তার উপর আবার টিসিবির ২০২০ সালের ১ মার্চ ও সাম্প্রতিক বাজার দরের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সে সময়ের তুলনায় এখন মোটা চালের গড় দাম সাড়ে ৩১ শতাংশ, খোলা আটার ২০ শতাংশ, খোলা ময়দার ৩৩ শতাংশ, এক লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৪৩ শতাংশ, চিনি ১৯ শতাংশ, মোটা দানার মসুর ডাল ৩০ শতাংশ ও গুঁড়া দুধ ১৩ শতাংশ বেশি। মোটা চালের কেজি ৫০ টাকা পেরিয়েছে। মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাজারে চালের দাম বাড়লে। বাংলাদেশ চাল উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ, যা বিশ্বের মোট উৎপাদনের ৭ শতাংশ। দেশের জনগণের দৈনিক ক্যালরির ৭০ শতাংশের বেশি আসে এই চাল থেকে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাবে বাংলাদেশ মাথাপিছু বার্ষিক চাল ভোগে এশিয়ায় দ্বিতীয়, যা প্রায় ১৮০ কেজি। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ কৃষি ক্ষেত্রে, বিশেষ করে চাল উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষ করে চাল উৎপাদন তিন গুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ এপ্রিল-সেপ্টেম্বর সময়ে জাতীয় গড় মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশের মধ্যে উঠা-নামা করলেও এ সময় দানাদার খাদ্যশস্য, বিশেষ করে চালের মূল্যস্ফীতির হার প্রায় সাড়ে ১২ থেকে শুরু হয়ে ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এটা ঠিক, জাতীয় গড় মূল্যস্ফীতিতে ভোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে খাদ্যপণ্যের, বিশেষ করে প্রধান খাদ্য চালের মূল্যস্ফীতি দেশের স্বল্প ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। চালের মূল্যস্ফীতিকে তারা ভয় পান। এটা প্রায় বলা যায়, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির আগেই বাংলাদেশ মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি ছিল।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে সব পণ্যেও দাম। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছিল যার প্রভাব পড়েছে ছোট-বড় সব দেশে। বিশেষ করে দেশে নিত্যপণ্য ও সেবার মূল্য বেড়েছে। ফলে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। গত কয়েক মাস থেকে যা আশঙ্কা করা হচ্ছিল তাই হচ্ছে। খাদ্যসহ ভোগ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে সদ্য বিগত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে যা গত বছরের সর্বোচ্চ। গত ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬. ৫ শতাংশ। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির এই হার ২০২১ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫. ২৯ শতাংশ। ২০২১ সালের ১২ মাসের মূল্যস্ফীতির গড় দাঁড়িয়েছিল ৫. ৫৪ শতাংশ, যার আগের বছর ছিল ৫. ৬৯ শতাংশ। গড় মূল্যস্ফীতির আগের বছরের চেয়ে কম থাকলেও সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার সুযোগ আছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৫.৩০ শতাংশের মধ্যে লক্ষ্য নিয়েছে সরকার এবং বিগত অর্থবছরের ৫ শতাংশের লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। গত ডিসেম্বর মাসে খাদ্য উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫.৪৬ শতাংশ যা গত ডিসেম্বর মাসে এই হার ছিল ৫.৩৪ শতাংশ। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত ডিসেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়ে ৭ শতাংশে ওঠেছিল, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫.২১ শতাংশ। বিবিএসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বরে গ্রামেও সাধারণ মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬.২৭ শতাংশ হয়েছে, যা আগের বছরের এই মাসে ছিল ৫.২৮ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ব্যাপক বেড়েছে যা আগের বছরের ডিসেম্বরের ৪.৬৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬.৯৪ শতাংশে উঠেছে। অপরদিকে শহরাঞ্চলে সাধারণ মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৫.৬৬ শতাংশ হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫.৩১ শতাংশ। পয়েন্ট টু পয়েন্ট হিসাবে গেল ডিসেম্বরে শহরাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৪.৪১ শতাংশ হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪.৭৭ শতাংশ। আর শহরে এ সময়ে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৭.০৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
গরিব ও অতি গরিব এক বিরাট জনগোষ্ঠীর খাদ্য সংগ্রহে আর্থিক সক্ষমতার অভাব এবং এর ফলে তাদের অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ, খাদ্যে পুষ্টিমানের স্বল্পতা, নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা এখনো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তার নিয়ামকগুলো বিবেচনায় নিয়ে তৈরি ‘গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি ইনডেক্স-২০২০’-এ বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। অর্থাৎ ১১৩টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম। তাছাড়া তালিকা অনুযায়ী, খাদ্য নিরাপত্তায় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা দেশের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমাদের জয়ী হতেই হবে। আমাদের দেশের উপযোগী কৃষি যান্ত্রিকীকরণ উদ্ভাবন এবং তা বাণিজ্যিকীকরণে নজর দিতে হবে। এর সঙ্গে কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি সুবিধা পৌঁছানোর জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র পরিসরের খামার মেশিন, মেকানিকস সেবা এবং মেশিন মেরামতের ওপর কৃষকদের এবং যন্ত্র ব্যবসায়ীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। আমাদের দেশের বাজার ব্যবস্থা প্রতারণাপূর্ণ। কৃষক পর্যায় থেকে ভোক্তা পর্যায়ে আসতে অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসতে হয়। এ প্রক্রিয়াগুলোকে সহজতর ও ঝামেলাবিহীন করার জন্য সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। লবণে আয়োডিন, ভোজ্যতেলে যেভাবে আইন করে ভিটামিন-এ সংযুক্ত করা হচ্ছে, সেভাবেই চাল-আটায় জিংকসহ অন্যান্য মাইক্রো পুষ্টি উপাদান ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে আইন করে সংযুক্ত করতে হবে, যা এখানে স্মরণযোগ্য।। মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে দেশের গতানুগতিক কৃষি থেকে বেরিয়ে এসে আরো গতিশীল কৃষির দিকে ধাবিত হতে হবে। তার জন্য চাই কার্যকর ও দক্ষ বাজার ব্যবস্থা। জিডিপির অনুপাতে কৃষির অবদান ধারাবাহিকভাবে কমে যাবে একথা সত্য, তবে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষির গুরুত্ব অদূরভবিষ্যতে হ্রাস পাবে না; বরং বৃদ্ধি পাবে।
লেখক: গবেষক, অর্থনীতিবিদ ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা