ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ নীল জলের নয়নাভিরাম প্রবাহিত ঝরনাধারা, দূরে মেঘালয় পাহাড়ের ওপর মেঘের আলিঙ্গন, প্রকৃতির এমন রূপ দেখতে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথরে যা উপজেলার সীমান্তবর্তী ধলাই নদের উৎসমুখে অবস্থিত। আর এই নদটি এখন নাব্য সংকটে পড়েছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন পর্যটকরা। এভাবে চলতে থাকলে পর্যটক হারাবে আকর্ষণীয় এই পর্যটনকেন্দ্র।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর ঘাটে নেমে ইঞ্জিন নৌকা দিয়ে সাদাপাথর যেতে হয় পর্যটকদের। কিন্তু চলতি শীত মৌসুমে এসে ধলাই নদের বিশাল এলাকাজুড়ে জেগে উঠেছে চর। ১০ নম্বর ঘাট থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় নদের গভীরতা কমে গেছে। প্রশস্ততা কমে যাওয়ায় পরিবর্তন হয়েছে নৌ চলাচলের পথ, বেড়েছে নৌপথের দূরত্ব। নৌকার মাঝি ও যাত্রীদের পানিতে নেমে ঠেলে নৌকা পার করতে হচ্ছে। এতে সবাইকেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সংশ্লিষ্ট এলাকার নৌকা চালক আব্দুল লায়েক আহমদ জানান, পানি কমে যাওয়ায় মাটিতে লেগে নৌকার পাখা ভেঙে যায়। যার কারণে পানিতে নেমে হাতে ঠেলে নৌকা পার করতে হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়ায় পর্যটক কমে গেছে। দ্রুত খনন না করলে হয়তো আর কদিন পর নৌকা নিয়ে সাদাপাথরে পৌঁছানো কঠিন হবে। জালাল আহমদ নামে এক ব্যক্তি পরিবার নিয়ে সাদাপাথর বেড়াতে এসেছেন। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম সারাদিন পরিবার নিয়ে আনন্দ করব। কিন্তু এখানে এসেই মন খারাপ হয়ে গেল। নৌকা পার হতেই অনেক সময় লেগে গেল। এমন জানলে আগেই সাদাপাথর ভ্রমণ বাতিল করতাম।
ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর ঘাটের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সুমন আহমদ বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানোর পরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। গত কয়েকবছর আমরা নিজেরাই ড্রেজিং করেছি। কিন্তু এবছর বিজিবি আপত্তি জানালে ড্রেজিং বন্ধ হয়ে যায়। তিনি প্রশাসনকে এ ব্যাপারে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হার্জং দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রকে আরো আকৃষ্ট করতে উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। বিশেষ করে স্পটে ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাপড় চেঞ্জিং রুম স্থাপন হয়েছে। সবমিলিয়ে পর্যটনকেন্দ্রের সববিষয়ে উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ধলাই নদের নাব্যতা সংকট রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।